না.গঞ্জেই কেনাকাটা করছে রাজধানী মুখি নগরবাসী
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ঈদের আগমনী বার্তায় জমে উঠছে নারায়ণগঞ্জের মার্কেট গুলো। পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগ করে নিতে ঈদের কেনাকাটায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার। কেনাকাটায় অধিকাংশ মানুষ রাজধানী মুখি হলেও এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। দেশের নামিদাবি ব্রান্ডের মিলন মেলায় জমে উঠেছে নগরীর বঙ্গবন্ধ সড়ক। শুধু নগরই নয় সদূর গ্রাম থেকেও মানুষ এখন কেনাকাটা করতে এখানে আসছে। তীব্র গরমেও মানুষ মার্কেট মুখি হচ্ছে, তবে বিগত বছরের থেকে অনেকটাই কম বেচাকেনা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, আগামী শুক্রবার থেকে মার্কেট গুলো বেচাকেনায় জমে উঠবে। তবে তুলনা মূলক সন্তুষ্টিতে আছে বিক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন নগরীর আলমাস পয়েন্টসহ বঙ্গবন্ধু সড়ক বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আউটলেটে ব্যস্ততম সময় পার করতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। সকাল থেকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে ক্রেতাদের আনাগোনা। বাচ্চা থেকে শুরু করে পূর্ণবয়স্কদের জামা, জুতো, পাঞ্জাবি ও শাড়িসহ নানা রকমের বিদেশী পোষাকে জমে উঠেছে ঈদ মার্কেট। পরিবারকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটায় এক আনন্দঘন সময় পাড় করছেন তারা। গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে কম সময়েই ঈদের কেনাকাটা সম্পূর্ন করতে ব্যাস্ত ক্রেতারা।
ঈদের কেনাকাটায় একমাত্র মেয়ে নিয়ে এসেছেন আসফিয়া আম্বার। রোজা রেখে গরমে কিছুটা অতিষ্ট হলেও চলে এসেছেন মেয়ের, স্বামী ও শাশুড়ির জন্য কেনাকাটা করতে। লাইভ নারায়ণগঞ্জকে তিনি বলেন, গতকাল সকালে এসেছিলাম ছোট মেয়ের জন্য কিছু কিনবো। স্বামী বেতন পাওয়ায় আজ আবার এসেছি, ঘরে আমার শাশুড়ি আমার মেয়ে তাসফিয়া আর স্বামীর জন্য কিনে নিতে। ঈদের কেনাকাটা না করলে আসলে অসম্পূর্ন লাগে। গরম পরেছে তাই বেশি দূরে যাইনি, এখানেই এসেছি কেনাকাটা করতে।
নগরীর আলমাস পয়েন্টে মো. জামান উদ্দিন এসেছেন পরিবারের ৪ সদস্য নিয়ে। তিনি বলন, ছোট ছেলের বায়না ধরেছে মার্কেট করতে হবে তাকে নিয়ে গিয়ে। ছোট ছেলেকে নিয়ে আসলে বড় মেয়ে রাগ করে। এখন ছেলে মেয়ে নিয়ে এলে ওদের মা বাদ যাবে কেন। আর আমি যদি কিছু কিনে দেই সেটা ছেলে মেয়েদের পছন্দ নাও হতে পারে, তখন আরেক বিপদে পড়বো। প্রতিবার ঢাকা যাওয়া হয়। কিন্তু বিগত ২ বছর এখান থেকেই কেনাকাটা করছি। গত ঈদে এখানে শুধু আড়ং, লারিভ আর সেইলর ছিলো। কিন্ত এবার তো আরো কত ব্র্যান্ড এসেছে। যে জামা ঢাকা গিয়ে কিনতাম সেটা এখানে পাচ্ছি, তাই ঢাকা আর যাওয়া হচ্ছে না। তা ছাড়া বিগত কয়টা দিন খুব গরম পড়েছে। শুনেছি আরও পড়বে। এই গরমে পরিশ্রম যতো কম করবো ততোই কষ্ট কম হবে।
এ বিষয়ে লারিভের সেলস হেড রাব্বি জানায়, গতবারের তুলনায় এবার একটু কম। গতবার আমরা আড়ং আর সেইলর এই ভবনে একা ছিলাম। তাছাড়া ঈদের বিশেষ অফারের কারণে গ্রাহকের চাপ বা কেনাবেচা ভালই ছিলো। কিন্তু এবার একটু কমেছে। আসলে এই নারায়ণগঞ্জে এখন কিসের দোকার বাকি আছে। এই ভবনেই পা থেকে মাথা পর্যন্ত সকল আইটেমের একাধিক শো-রুম আছে। এতে কাস্টোমার ভাগ হয়েছে। তবে আশা করছি সামনে আরও বাড়বে।
সেইলরের নারায়ণগঞ্জ আউটলেটের ম্যানেজার ইকবাল বলেন, আমরা আমাদের ব্র্যান্ড নিয়েই কাজ করি প্রতিবার। এখানে একাধিক শো-রুম থাকলেও যারা সেইলরকে পছন্দ করে তারা এখানেই আসবে। এতে আশেপাশে যতো ব্র্যান্ড আসুক। ঈদ হলো মুসলিমদের জন্য সবথেকে বড় একটি উৎসব। এসময় সবাই চায় একটু কষ্ট হলেও পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করতে। আমরা এখানে এসে নারায়ণগঞ্জবাসীদের থেকে বড় সাড়া পেয়েছি। অনেকেই আছেন আগে ঢাকা থেকে কেনাকাট করতো এখন এখানেই করে, তবে যারা ঢাকা যাওয়ার তারা সেখানে যাবেই।
নগরীর টপটেন ও টপ মার্ট আউটলেটের ইনচার্জ নাঈম বলেন, বাঙালি আসলে উৎসব প্রিয় মানুষ। ঈদ বা পূজোয় সবাই কম বেশি কেনাকাটা করে, আর এই কেনাকাটা দিন দিন বাড়ছে। দ্রব্যমূলের দাম বাড়ায় মানুষেরা কষ্টে আছে কিন্তু একটা ঈদ বা পূজো সবাই চায় একটু সুন্দর করে উদযাপন করতে। আমরা বরাবরের মতোই সাড়া পাচ্ছি। সকালের দিকে ভিড় কম থাকলেও ইফতারের পর ভিড় বাড়তে থাকে। এই কেনাকাটা চলে রাত ২ টা পর্যন্ত। এখন ও ঈদের বাকি আরও ৫-৬ দিন, আশা করছি ২৭ রোজায় আরও ভিড় বাড়বে। অনেকেই এখনো বেতন পায়নি তাই চাপটা তুলোনামূলক ভাবে একটু কম। আর নারায়ণগঞ্জে এখন অনেক শোরুম আছে। দেশের সেরা নামি দামি ব্র্যান্ডে শোরুম গুলো এখন এখানে। যদি মানুষ কম কষ্টে তাড়াতাড়ি এখান থেকেই কেনা করতে পারে তাহলে দূরে কেন যাবে।