নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে নগরবাসী, ভিড় বাড়বে বৃহস্পতিবার থেকে
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: চোখে বহুদিন পর আপনজনকে দেখার আকাঙ্খা, সাথে কাপড় ও খাবারের ব্যাগ। এমন ভাবেই টার্মিনালে বসে অপেক্ষা করছেন বিভিন্ন বয়সের যাত্রীরা। নতুন জামা, নতুন জুতো পড়ে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফিরছেন লাখো মানুষ। প্রতিদিই নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাচ্ছে একের পর এক বাস, লঞ্চ ও ট্রেন। স্বজনদের সাথে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন করতে টার্মিনালগুলোতে দেখা যায় নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা ঘরমুখো মানুষের ভিড়। গত কয়েক দিনের তুলোনায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভিড় আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তবে ঈদে অধিক ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
বুধবার (২৬ মার্চ) নগরীর ১নং রেল গেট, ২নং রেলগেট, খানপুন, মেট্রোহল, চাষাঢ়া, চাঁনমারী, বন্দরঘাটসহ বিভিন্ন বাস-লঞ্চ টার্মিনাল এবং ট্রেন স্টেশনগুলোতে দেখা যায় এমন চিত্র। নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে যানজট দেখা গেলেও সময় মতো বাস গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে বলে জানয়েছে কতৃপক্ষ। বিলম্ব হতে দেখা যায়নি কালিরবাজার ও চাষাঢ়ার ট্রেন স্টেশনেও। নৌপথে ও ট্রেনে শুরুর দিকে কম থাকলেও এখন যাত্রীর বিচরণ বেড়েছে।
এসময় কথা হয় তল্লার বাসিন্দা মারুফা রুবার সাথে। ২ ছেলে ও স্বামী নিয়ে যাবেন পাবনা ঈদ করতে। তিনি লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘বাড়িতে মা বাবা আছেন তাদের সাথে ঈদ করতে যাবো। বা্চ্চারা বছরের শুধু ঈদের সময়ই দাদা বাড়ি যেতে পারে। ওদের খুশির দিকে তাকিয়ে হলেও চেষ্টা করি সবার সাথে একসাথে ঈদ উদযাপন করার। এতোদিন স্বামী ছুটি পায় নাই, তাই এখন যাচ্ছি। এখানে এসে শুনি ২৭-২৮ তারিখের সিট বুকিং হয়ে গেসে। আমরা আগে থেকে বুকিং করি নাই বলে ৭০০ টাকার ভাড়া ১১০০ টাকা দিয়ে সিট নিয়েছি। যতো ঈদ আসবে ভিড় ততো বাড়বে তাই এবার একটু আগে ভাগেই যাচ্ছি।’
বাড়িতে মা, ২ মেয়ের সাথে ঈদ করতে চাদপুর যাচ্ছেন পোশাক শ্রমিক জামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখানে মেসে থেকে একটা ডাইংকে চাকরি করি। ঈদে ২ মেয়ের জন্য জামা কিনেছি, মায়ের আর বউয়ের জন্য শাড়ি কিনেছি। প্রতিবারের মতো এবারও তাদের সাথে ঈদ করতে বাড়ি যাওয়া, নাহলে সংসারের খরচের জন্য এখানেই থাকতে হয়। গতকাল ডিউটি করে ছুটি দিয়েছে তাই আজ রওনা হলাম। এখানে যাত্রি চাপ তেমন দেখছি না মনে হচ্ছে একটু আরামে যেতে পারবো। বাসের থেকে লঞ্চে তুলোনামূলক ভাড়া একটু কম আর শুয়ে বসে আরামে যাওয়া যায়। কিন্তু এবার লঞ্চে ডেকের ভাড়াই ৬০০ টাকা। এটা আমাদের মত মানুষের জন্য অনেক বেশী। একটু কম হলে ভাল হতো। লঞ্চ আসার পর সময় মতো লঞ্চ ছাড়ে না। যাত্রি সম্পূর্ন ভরলে তারপর ছাড়ে। যে গরম পরেছে, লঞ্চের ভেতরে পুরুষ মহিলারা গরমে অতিষ্ঠ।’
সরকার ট্রাভেলস পরিবহনের খানপুর কাউন্টারের ম্যানেজার বলেন, আমাদের অগ্রিম ২৭, ২৮ ও ২৯ তারিখের সিট প্রায় সব বুকিং হয়ে গেছে। আমার সকালে থেকে ৭ ট্রিপে গাড়ি পাবনা কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছাড়ে। ভোরে আর সন্ধায় ইফতারের পর ভিড় থাকে বেশি। মানুষ এখন বেতন, ছুটি পাওয়া শুরু হয়েছে। কাল-পরশু ভিড় আরও বাড়বে বলে আশা করছি। ঈদের জন্য ভাড়া বাড়ানো হয়নি, গতবারের মতো এবারও একই আছে।
বন্দর লঞ্চ ঘাটের সংশ্লিষ্টরা বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে অফিস ছুটির পর যাত্রীদের চাপ বাড়বে বলে আশা করা যায়। যাত্রীদের ঈদযাত্রার নিরাপত্তায় কাজ করছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সঙ্গে নৌপুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকরা।