নারীর সমঅধিকার নিশ্চিতে অভিন্ন পারিবারিক আইনের দাবি
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারীর অধিকার ও বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সিডও (CEDAW) দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা এই সভার আয়োজন করে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহরের চাষাড়াস্থ সংগঠন কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
‘নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় চাই অভিন্ন পারিবারিক আইন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি রীনা আহমেদ।
বক্তারা বলেন, সিডও সনদ একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি যা ১৯৭৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়েছিল। এর মূল লক্ষ্য নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূর করা। বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৪ সালে এই সনদে স্বাক্ষর করলেও, কিছু ধারা (২ ও ১৬) এখনো সংরক্ষণ হিসেবে বহাল রেখেছে। এর ফলে বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদে নারীর সমান অধিকার পুরোপুরি নিশ্চিত হচ্ছে না। বক্তারা বলেন, প্রকৃত সমতা নিশ্চিত করতে হলে সিডও সনদের পূর্ণ অনুমোদন এবং বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
তারা আরও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য সিডও সনদ বাস্তবায়ন জরুরি। এই দায়িত্ব প্রধানত রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। সিডও সনদ বাস্তবায়িত হলে নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
সভায় অভিন্ন পারিবারিক আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা হয়। বক্তারা জানান, বর্তমানে বিভিন্ন ধর্মের জন্য আলাদা পারিবারিক আইন প্রচলিত আছে, যা অনেক ক্ষেত্রে নারীদের জন্য বৈষম্যমূলক। অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এই বৈষম্য দূর করা এবং নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রচারণা চালানো এবং সকল স্তরের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন বলে বক্তারা একমত পোষণ করেন।
সভায় লিখিত বক্তব্য পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক রহিমা খাতুন। মতবিনিময়ে অংশ নেন আন্দোলন সম্পাদক সাহানারা বেগম, খেলাঘরের জেলা সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আক্তার, পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মো. হোসাইন, নারী শিল্প উদ্যোক্তা মুনমুন আসকারী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মহসিন, আইনজীবী আয়েশা আখতার এবং সিনিয়র শিক্ষক নিগার সুলতানা পলি।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক শাশ্বতী পাল। সভায় বিভিন্ন পেশার অর্ধশতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।