শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
Led01পরিবহনফতুল্লাবন্দরসদর

নারায়ণগঞ্জ শহরে বৈধের চেয়ে অবৈধ স্ট্যান্ড বেশি!

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শিল্প অঞ্চল খ্যাত নারায়ণগঞ্জ শহর। বিভিন্ন অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের বসবাস এই শহরে। আর তাই পরিবহনের চাপও একটু বেশি। এ কারণে জনগনের সুবিধার্থে শহরের বিভিন্ন স্থানে ৭টি পরিবহন স্ট্যান্ডের অনুমোতি দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। তবে, কিছু দুস্কৃতিকারী বিভিন্ন যোগসাজোসে শহরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তুলেছেন একাধিক অবৈধ স্ট্যান্ড। যা থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজির খবর নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রায় প্রকাশ করা হয়।

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ শহরের মধ্যে অবস্থিত এসব অবৈধ স্ট্যাড অপসারণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। গত ২৮ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন স্বাক্ষরীত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিষয়টি লাইভ নারায়ণগঞ্জকে নিশ্চিত করেছেন এনসিসি’র সহকারি সচিব মোহাম্মদ হান্নান মিয়া।

ওই চিঠিতে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক শহরে অনুমোদিত পরিবহন স্ট্যান্ড রয়েছে ৮টি। এছাড়া অবৈধ স্ট্যান্ড রয়েছে ৯টি। এক্ষেত্রে বৈধের চেয়ে অবৈধ স্ট্যান্ড এর সংখ্যা বেশি তা স্পষ্ট।

চিঠিতে তালিকার ১নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত বৈধ স্ট্যান্ড গুলো হলো-

১। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল। ২। পঞ্চবটি ট্রাক টার্মিনাল। ৩। রাস্তার ক্ষতিপুরণ ফি আদায় (নিতাইগঞ্জ ও থানাপুকুরপাড় (এস এম মালেহ রোড)। ৪।১ নং রেলগেইট সংলগ্ন সিএনজি স্ট্যান্ড। ৫। জীমখানা সড়ক সিএনজি স্ট্যান্ড। ৬। নিউমেট্রো সিনেমা হলের সম্মুখস্থ সড়ক বাস স্ট্যান্ড। ৭। নবীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ড (কামাল উদ্দিনের মোড়সহ)। ৮। বন্দর ১ নং খেয়াঘাট রোড ও পার্শ্বস্থ সিএনজি স্ট্যান্ড।

তালিকার ২ন অনুচ্ছেদে বর্ণিত অবৈধ স্ট্যান্ড গুলো হলো-

১। মন্ডলপাড়া হতে নিতাইগঞ্জ মোড় পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়কের দুইপার্শ্বে অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ড। ২। মন্ডলপাড়া পুল হতে (আর কে মিত্র রোডের দুইপার্শ্বে) টানবাজার পুল পর্যন্ত অবৈধ ষ্ট্যান্ড। ৩। সরকারী মহিলা কলেজের সম্মুখস্থ সিএনজি অবৈধ স্ট্যান্ড। ৪। চাষাড়া সান্তনা মার্কেটের সম্মুখস্থ রাস্তার উপর অবৈধ লেগুনা ষ্ট্যান্ড। ৫। রাইফেল ক্লাবের পার্শ্বস্থ বাস/সিএনজি অবৈধ স্ট্যান্ড। ৬। চাষাড়া শহীদ মিনার সংলগ্ন সিএনজি অবৈধ ষ্ট্যান্ড। ৭। চাষাড়া সুগন্ধা বেকারীর সম্মুখ হতে বাগে জান্নাত মসজিদ পর্যন্ত সিএনজি, টেম্পু, লেগুনা অবৈধ ষ্ট্যান্ড। ৮। খানপুর হাসপাতালের সম্মুখস্থ সিএনজি অবৈধ স্ট্যান্ড। ৯। হাজীগঞ্জ গুদাড়াঘাট সংলগ্ন সিএনজি অবৈধ ষ্ট্যান্ড।

ওই চিঠিতে বলা হয়, ১ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত স্ট্যান্ড ব্যতিত সিটি কর্পোরেশন হতে অন্য কোন স্ট্যান্ড খাস আদায় বা ইজারা প্রদান করা হয়নি। অথচ শহরের যত্রতত্র ২ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত স্থান সমূহে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ট্রাক, বাস, সিএনজি/টেম্পো, ব্যাটারী চালিত গাড়ি ইত্যাদি যানবাহনের অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। যার কারণে প্রতিনিয়ত নগরীতে অবর্ননীয় যানজট সৃষ্টিসহ জনসাধারণের অসহনীয় ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার সৃষ্টি হচ্ছে। জনস্বার্থে অবৈধ স্ট্যান্ডগুলো বন্ধ বা অপসারণের জন্য বিভিন্ন সময়ে পত্র পত্রিকায় নানা ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এমতাবস্থায়, বঙ্গবন্ধু সড়কে অবৈধভাবে ট্রাক পার্কিং বন্ধ এবং সড়কটি যানজটমুক্ত রাখাসহ জনস্বার্থে শহরের যত্রতত্র অবৈধভাবে গড়ে উঠা স্ট্যান্ড সমূহ অপসারণের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ হান্নান মিয়া বলেন, আমরা প্রশাসনের নিকট অবৈধ স্ট্যান্ড গুলো অপসারণের জন্য বলেছি। এছাড়া আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট প্রদানের জন্য আমরা মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেছি। যার মাধ্যমে আমরা সরাসরি ওইসকল স্ট্যান্ডগুলো উচ্ছেদ করতে পারবো। দেখি মন্ত্রনালয় আমাদের কি জানায়।

খোজঁ নিয়ে জানা যায়, অবৈধ স্ট্যান্ডগুলোর প্রত্যেকটিতে কোন না কোন দলের নেতাকর্মী ও প্রশাসনে কিছু অসাধু কর্মকতারা জড়িত থাকেন। পূর্বে আওয়ামী কিছু নেতাকর্মীদের অধিনে এসকল অবৈধ স্ট্যান্ড থাকলেও গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পাল্টে যায় এসকল স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রক। বর্তমানে বিএনপির কিছু নেতাকর্মীর পরক্ষ সাহায্যে এসকল স্ট্যান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসকল অবৈধ স্ট্যান্ড অপসারণ করা হলে নারায়ণগঞ্জ শহরের যানযটের সমস্যা অনেকটাই সমাধান হবে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।

RSS
Follow by Email