নারায়ণগঞ্জ নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ‘আপনাদের মাঝে আজ আসতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। বাংলাদেশের স্বাধীণতার ইতিহাসের সাথে জড়িত এই নারায়ণগঞ্জ। স্বাধীণতা সংগ্রামে, বিভিন্ন আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে নারায়ণগঞ্জবাসী।’
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারী) প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তার শেষ জনসভায় নারায়ণগঞ্জ নিয়ে এ কথা বলেন। ফতুল্লার মাসদাইরে একেএম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। জনসভার সভাপতিত্বে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল (ভিপি বাদল)।
নারায়ণগঞ্জ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমরা ইকোনমিক জোন তৈরী করে দিয়েছি। কর্মসংস্থানের মাত্রা যাতে বেড়ে যায়, সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর। গত ১৫ বছরে নারায়ণগঞ্জ জেলায় অনেক উন্নতির কাজ হয়েছে। শীতলক্ষা নদীর উপর তৃতীয় সেতু করা হয়েছে, যার নাম রাখা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমানের নামে। নারায়ণগঞ্জের সদর ও বন্দরে আমি নিজে নৌকায় করে নদী পার হয়েছি। কিন্তু নৌকায় করে আর পেরোতে হবে না, সেখানে এখন সেতু নির্মাণ করে দিয়েছি। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও পরিপক্ক করতে গাজী সেতু, সুলতানা কামাল সেতু, মেঘনা সেতু, গোমতী দ্বিতীয় সেতুসহ মোট পাঁচটি সেতু নতুন ভাবে তৈরী করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোড, সাইনবোর্ড হতে চাষাঢ়া পর্যন্ত ছয়টি লেনে উন্নীত করে দিয়েছি। ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহার নামে সড়ক করা হয়েছে। ৬.৯০ কিমি দৈর্ঘ্যের সড়কটি চাষাঢ়া, খানপুর, হাজীগঞ্জ, গোদনাইল ও আদমজী ইপিজেড এলাকা জুড়ে রয়েছে। পঞ্চবটী থেকে মুক্তারপুর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণ করা হয়েছে। সেখানে দোতলা রাস্তা করা হয়েছে। এতে করে মুন্সিগঞ্জের সাথে নারায়ণগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ হয়েছে। ঢাকা-চট্টোগ্রাম মহাসড়কে যাত্রবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত রাস্তা ৮ লেনে উন্নীত করা হয়েছে। ঢাকা-সিলেট সড়কে ৪ লেন বিশিষ্ট ভুলতা ফ্লাইওভার করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঢাকা মেট্রোরেইল চালু করেছি। এই ঢাকা মেট্রোরেইল এমআরটি লাইন ১ নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে নিয়ে ৩ টি মেট্রোরেইল লাইন করার পরিকল্পনা আমাদের আছে। একটি হচ্ছে এমআরটি লাইন ২, এমঅরটি লাইন ৪ ও এমআরটি লাইন ১। এগুলো সবই যাবে নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে। তাছাড়া আমরা নারায়ণগঞ্জে ইকোনমিক জোন করে দিয়েছি। আড়াইহাজারে ইকোনমিক জোন, মেঘনা ইকোনমিক জোন আমরা করে দিয়েছি। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা ডিএনডি এলাকায় পানি নিশ্কাশন আরও উন্নত করে দিয়েছি। কদম রসুলে বর্জ্যব্যবস্থাপনা উন্নত করে দিয়েছি। মূলত আমরা প্রত্যেকটি জেলায় উপজেলা ভিত্তিক বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা করেছি এবং এই বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করেছি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ জোড় দেওয়া হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন যে উদ্যোগ নিয়েছে আমরা তার সমর্থন করছি। শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণ করে দিয়েছি। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অত্যাধুনিক নগর ভবন করে দেওয়া হয়েছে। শীতাতপ নিয়োন্ত্রিত অডিটোরিয়ামসহ অত্যাধুনিকভাবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি করা হয়েছে। চিফ জুডিশিয়াল ভবন নির্মান করা হয়েছে। র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ান কমপ্লেক্স, জেলা পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ করা হয়েছে। ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ যেহেতু ঢাকার কাছে, তাই আমরা চাই নারায়ণগঞ্জ হবে স্মার্ট সিটি।
এ জনসভায় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সার, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান সংসদ ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের র্ব্তমান সংসদ সদস্য ও লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দনশীল।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান সালমা ওসমান লিপি, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভুইয়া সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপুসহ জেলা-মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।