নারায়ণগঞ্জে আরও ৩২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বর্ষার বিদায় ঘণ্টা বাজলেও নারায়ণগঞ্জ জেলায় মশা বাহিত ডেঙ্গু জ্বরের তাণ্ডব যেন থামছেই না। বরং আশঙ্কার সব মাত্রা ছাড়িয়ে এই রোগ এখন জেলাজুড়ে জনমনে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্বেগ বাড়িয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় রেকর্ড সংখ্যক ৩২ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই নতুন সংক্রমণের ফলে চলতি বছরে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো উদ্বেগজনক ১ হাজার ৪৯৮ জনে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির চিত্র উঠে এসেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ এবং সাধারণ মানুষ উভয়ই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অক্টোবর মাসেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি সবচেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। মাত্র ২৩ দিনে এই মাসে মোট ৫৭৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। নতুন শনাক্ত হওয়া এই রোগীরা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতাল, সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল এবং বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই উদ্বেগের মাঝেও একটি স্বস্তির খবর হলো, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এর ফলে চলতি বছরে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪২৯ জনে। যদিও এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক, তবুও এখন পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেনি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ মশা নিধন ও জনসচেতনতা বাড়াতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জনগণের প্রতি তিনটি জরুরি পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে, অবশ্যই মশা তাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং নিয়মিত মশারি ব্যবহার করতে হবে। চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং কোথাও যেন পানি না জমে সেদিকে কঠোর নজর দিতে হবে। জমে থাকা পানি দ্রুত অপসারণ করতে হবে এবং মশার লার্ভা ধ্বংস করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কঠিন সময়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিই পারে ডেঙ্গুর এই দাপট থেকে মুক্তি দিতে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অবিলম্বে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
