নারায়ণগঞ্জে ঝুঁকিতে ৩৭ গার্মেন্টস: ঈদ বোনাস নিয়ে শঙ্কা, ব্যাংকের জটিলতায় ২৯ কারখানা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের ৩৭টি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের বেতন ও বোনাস প্রদানে ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে ২৯টি কারখানা প্রিমিয়ার ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ থাকার কারণে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। এসব কারখানায় শ্রমিকরা যাতে নির্দিষ্ট সময়ে তাদের বেতন-বোনাসসহ যাবতীয় পাওনাদি পান, সে লক্ষ্যে বিকেএমইএ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কাজ করছে।
রবিবার (২৩ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় অবস্থিত বিকেএমইএ’র প্রধান কার্যালয়ে গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসন এবং নির্দিষ্ট সময়ে বেতন-বোনাস পরিশোধের লক্ষ্যে একটি যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় গার্মেন্টস মালিক, জেলা প্রশাসন, শ্রম অধিদপ্তর, সেনাবাহিনী, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশসহ বিভিন্ন অংশীজনদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদুজ্জামান জানান, ঈদকে সামনে রেখে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাদের গোয়েন্দা তথ্যে এবার ঈদে শ্রমিকের বেতন-বোনাস নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে—এমন ৩৭টি কারখানাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি এই ৩৭টি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ ছাড়া প্রাপ্য বেতন-বোনাস পরিশোধ নিশ্চিত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার তাগিদ দেন।
গার্মেন্টস মালিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, কিছু চিহ্নিত শ্রমিক নেতা নানা ইস্যুতে শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি করে ফায়দা লুটতে চায়। এসব অপকর্ম যাতে কেউ ঘটাতে না পারে, সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেন তারা।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে যাকাত বোর্ডর সদস্য ও বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ৩৭টি কারখানার মালিকের সঙ্গে বিকেএমইএ যোগাযোগ করে যাচ্ছে, যাতে তারা সঠিক সময়ে শ্রমিকের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে পারেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক আদেশের কারণে নারায়ণগঞ্জ প্রিমিয়ার ব্যাংকের সকল প্রকার গ্রাহকের লেনদেন বন্ধ রয়েছে। এই ব্যাংকের গ্রাহক নারায়ণগঞ্জের ২৯টি গার্মেন্টস কারখানা। যে কারণে এবার ঈদে এই ২৯টি কারখানার শ্রমিকের বেতন-বোনাস প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন হাতেম।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি অর্থ ও শ্রম উপদেষ্টাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর তাদের কিছু দিকনির্দেশনা দিলেও, দুঃখের বিষয় যে, বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত কোনো ফিরতি চিঠি দিয়ে নির্দিষ্ট কোনো উদ্যোগের কথা জানায়নি।