নারায়ণগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের সম্মান, আর্থিক সহায়তা প্রদান
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক অনুদানের চেক ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে সঞ্চয়পত্র বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য মঈনুদ্দিন আহমদ।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে তারুণ্যের বীরত্বের এক অসাধারণ গাঁথা এবং ছাত্র-জনতার দেশপ্রেমের মহাকাব্য হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ ও ছাত্রসমাজ একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র এবং নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যেভাবে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের রক্ত দিয়েছে, সেই আত্মত্যাগ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা সেই বীর যোদ্ধাদের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি তরুণ সমাজের এই দেশপ্রেমের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবো। আমাদের তরুণ প্রজন্ম যে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সকলের অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছে, আমরা সকলে মিলে সেই রাষ্ট্র গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। এই অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে তরুণ সমাজ আমাদের পাশে থাকবে এবং বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে আসা যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই বীর যোদ্ধারা আমাদের প্রেরণা জোগাবে।
আহত যোদ্ধাদের কষ্টের কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, যারা সেই সময়ে আহত হয়েছেন, তাদের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শুনলে হৃদয় ব্যথিত হয়। নিজের দেশের ভাই, প্রতিবেশী বা আত্মীয়কে কীভাবে আঘাত করা সম্ভব, তা একজন সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়। আমরা এমন একটি অমানবিক রাষ্ট্র চাইনি। আমরা একটি মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে একজনের কষ্টে সকলে এগিয়ে এসে সমাধানের পথ খুঁজে নেবে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা একটি নতুন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
অনুষ্ঠানে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের হাতে সঞ্চয়পত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক এবং অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।