নানা শঙ্কায় বিএনপির অবরোধ, মাঠে থাকবে আ.লীগ; সতর্ক পুলিশ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নানান শঙ্কা ও ঝুঁকি নিয়ে আগামীকাল (৩১ অক্টোবর) থেকে টানা ৩দিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চসহ সমমনা রাজনৈতিক দল ও জামায়াতে ইসলাম। পুলিশের কঠোর অবস্থানে এক দিনের সকাল সন্ধ্যা হরতালের পর অনেকটা সতর্ক অবস্থানে থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে চাচ্ছে দলগুলো।
জানা গেছে, প্রায় আট বছর পর আবারো অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। রবিবার দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ টানা তিন দিনের এই অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। শনিবার বিএনপি’র সমাবেশে “হামলা, হত্যা, গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে” এবং সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে ৩১ অক্টোবর, ১লা ও ২রা নভেম্বর তিন দিনের এই অবরোধ কর্মসূচি দেয়া হয়।
এদিকে, অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে প্রস্ততি গ্রহণ করছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি এবং এর শরিক দল গুলো। একদিনের হরতালে বিভিন্ন বিক্ষিপ্ত ঘটনার অভিজ্ঞতা থেকে আরও সতর্ক ভাবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার কথা জানিয়েছে নেতৃবৃন্দরা। পাশাপাশি হরতালে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশকে দায়ি করছেন তারা।
অন্যদিকে, বিএনপি কর্মসূচির নামে যাতে জ্বালাও পোড়াও করতে না পারে সেই বিষয়ে সেচ্চার থাকবে জেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। জেলা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে পাহাড়ায় থাকার কথা জানিয়েছেন তারা। তাদের অভিযোগ, বিএনপি কর্মসূচির নামে জনগনের জানমালের ক্ষকি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত।
নারায়ণগঞ্জে অবরোধ কর্মসূচির বিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, এক দফা দাবি আদায় ও নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আমরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করবো। আমরা জনগনের জন্য কথা বলতেছি, আমরা ধ্বংসাত্মক কোন কার্যকলাপ করবো না। শান্তিপূর্ণ ভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশংকায় রয়েছি। পুলিশ, আওয়ামী লীগ তারা যৌথ ভাবে হামলা করে। পুলিশ আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি ইন্টারেস্ট। পুলিশ, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের থেকে বেশি আওয়ামী লীগ। তারা দলীয়করণে পরিনত হয়েছে। প্রত্যেকটা পুলিশের সিপাহি থেকে শুরু করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সবাই আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা বলেন, আমরা এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করবো। সকাল থেকেই আমরা সড়কে অবস্থান করবো। আমরা আশংকা করছি। কারণ আমরা যখন একটি সমাবেশের ডাক দিলাম; সেখানে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ হামলা করছে। আর সেই হামলার প্রতিবাদে যখন গতকাল আমরা হরতাল পালন করছিলাম, সেখানেও আমাদের উপর হামলা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবো। আর এতে যে কোন হামলা বা অপৃতিকর ঘটনা ঘটলে সেই দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। এক দিকে সরকার বলে আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বসবাস করছি। অন্যদিকে, আমরা যখন কোন সমাবেশ করতে যাই; তখন তারা শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি সৃষ্টি করে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা বলেন, ‘বিএনপি যাতে কোন নৈরাজ্য করতে না পারে, সেই দিকে খেয়াল রাখতে আওয়ামী লীগের নেতারা সব স্থানে সতর্ক অবস্থানে থাকবে। আমরা ইতিমধ্যেই মহানগরের আওতাধীন এলাকার নেতাকর্মীদের এই বার্তা দিয়ে দিয়েছি।’
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা বলেন, ‘অবরোধকে কেন্দ্র করে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। বিভিন্ন মোড়ে তারা অবস্থান নিবে। যাতে বিএনপি কোন নাশকতা করতে না পারে।’