নমপার্কটা জায়গাটা বাজে ছিলো, প্রতি সপ্তাহে মানুষ খুন হতো: শাহ নিজাম
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম বলেছেন, আমাদের এই নমপার্কের এই জায়গাটা একটা বাজে জায়গা ছিলো। এখানে শুধু ময়লা ছিলো না, এটা একটা আতঙ্কের জায়গা ছিলো, এখানে ছিনতাই হতো, প্রতি সপ্তাহে মানুষ খুন হতো। রাত ৮টার পর এই জায়গা খুব ভয়ংকর হয়ে উঠতো। এই পার্কের বাউন্ডারিটা যখন দিয়েছিলাম, একটা মহিলা এসে অঝোরধারে কান্না করছিলো। আমি আর ইমন এখানে বসে ছিলাম। মহিলা কান্না করতে করতে বললো, এই পার্কটা যদি আরও ১৫দিন আগে থেকে কাজটা শুরু হতো তাহলে আমাকে বিধবা হতে হতো না। ৭দিন আগে আমার স্বামীকে আমার সামনে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ইমন যে কাজ করতো এটা মন থেকে করতো। ওর মধ্যে অনেক স্পিড ছিলো। হসপিটাল, বাড়ি ঘর থেকে শুরু করে সমস্ত ময়লা ফেলা হতো এই নমপার্কের জায়গাটাতে। আমরা যখন এখানে ভেকু দিয়ে কাজ করছিলাম, তখন আমি পালিয়ে গেছিলাম, ভেকু চালকও চলে গেছিলো। কিন্তু ইমন ছিলো, ও ভেকু ওয়ালাকে রিকুয়েস্ট করে নিয়ে এসে কাজ করছিলো।
শনিবার (৮ জুন) বিকালে বাদ আসর কুতুবপুর এলাকায় নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল অ্যামিউজমেন্ট পার্ক (নম পার্ক) প্রাঙ্গণে, ফতুল্লায় বন্ধুমহল ও নমপার্কের আয়োজনে আরিফ আকরাম ইমনের মাগফিরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
শাহ নিজাম বলেন, আমাদের অনেক বন্ধু হারিয়ে গিয়েছে। আমাদের মধ্যে শিপন নাই, রাজ নাই, সোহেল নাই, সোলেমান নাই, টিপু নাই, আরজু নাই, ওসিম নাই, দুলাল নাই। আমাদের অনেক বন্ধু বান্ধব আমাদের ছেড়ে চলে গেছে অনেক আগে। এবার ইমনও চলে গেলো। এর আগে আমরা আমাদের কোন বন্ধুর জন্য মিলাদ-মাহফিল কিংবা দোয়ার আয়োজন করি নাই। আমাদের জীবনের অনেক অংশ আমরা পরিবারকে না দিয়ে বন্ধুদের দিয়েছি। এই আত্মার একটা সম্পর্ক, হৃদয়ের একটা সম্পর্ক। আমি যদি কখনো চলে যাই, আমার জন্য কেউ দায়িত্ব নিয়ে দোয়া পড়াবে। শুধু এই কারণেই আজকের এই দোয়া এবং মিলাদের আয়োজন। অনেক বন্ধুরা আমরা পরিবারসহ নানা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বন্ধুত্বের বন্ধন থেকে সরে যাচ্ছি। আমরা যাতে কেউ আলাদা না হই, আমরা একে অপরের বিপদে আসতে পারি, একে অপরের পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়াই। আমাদের মধ্যে যদি কেউ চলে যাই, তারাও যাতে আমরা আমাদের সেই বন্ধুর পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়াই। আর্থিক ভাবে সাহায্য করতে না পারলেও আমরা যাতে নামাজ পড়ে তার জন্য দোয়া করতে পারি। ইমনের এই স্বরণে বলতে চাই আমরা বন্ধুরা যদি কাউকে কখনো কষ্ট দিয়ে থাকি, কাউকে দুঃখ দিয়ে থাকি তাহলে আমাদের ক্ষমা করে দিয়ে। আপনার এই ক্ষমার উসিলায় যাতে আল্লাহ আমাদের কবুল করে নেয়।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহকে খুশি করার জন্য যে সকল কাজ করা দরকার। আল্লাহ যাতে সেসব কাজ করার তৌফিক দান করেন। মৃত্যুর আগে যাতে আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনকে খুশি করে মরতে পারি সেই হেদায়েত দান করুক। আমি আমার বন্ধুদের বলবো, আপনারা যে যার জায়গা থেকে জানতে পারবেন আমাদের বন্ধু ইমনের পরিবারের কথা, বা তার পরিবারের কিছু একটা দরকার অথবা কোন সমস্যার ফেস করছে। আপনারা অন্তত আমাদের বন্ধুদের জানানো চেষ্টা করবেন। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করবো ইমনের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর।
মিলাদ ও দোয়ার আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি এহসান উদ্দিন আহম্মদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মোশারফ হোসেন মাসুম, কুপুবপুর ৩-৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান লিটন,ফতুল্লা ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিমুল, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ মান্নান, যুবলীগ নেতা নান্টু, সোহেব, লিটন, বিপ্লব রায়, জেলা যুবলীগ নেতা ফারুক আহম্মেদ প্রমুখ।