নগরীর সড়কে অবৈধ স্ট্যান্ড-পার্কিং দিয়ে দখলদারিত্ব চলছেই
#সড়ক দখলমুক্ত রাখতে বিশেষ টিম মাঠে নামছে: এএসপি (ট্রাফিক)
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নগরীর সড়কগুলো দখলের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। সিএনজি, লেগুনা, বাসের অবৈধ স্ট্যান্ড; ফুটপাথে হকারদের বসাসহ সড়কের পাশে অবৈধ পার্কিং এর কারণে যান চলাচলের বড় একটি অংশ দখলে থেকে যাচ্ছে। যাতায়াতের জন্য নগরীতে চওড়া সড়ক থাকলেও নগরবাসীর চলাচলে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যার ফলে যানজটের সমস্যা যেন বেড়েই চলছে।
অথচ নগরীর যানজট ও হকার সমস্যা দূর করতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একত্রিত হয়েছিলেন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সংসদ সদস্য সেলিম ওসামন, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকসহ অনেকেই অংশ নিয়েছিলেন এক গোল টেবিল বৈঠকে। নগরী থেকে যানজট ও হকার সমস্যা নিরসনে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এ বৈঠকে। এর পরদিন থেকেই এর প্রভাব পরে নগরীতে। মিরজুমলা সড়ক, শায়েস্তা খা সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়কসহ নগরীর বেশ কিছু সড়কে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। বঙ্গবন্ধু সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের বেশির ভাগ অংশ হয় দখলমুক্ত। বেশ কিছু সময় যাওয়ার পর আবারো বাস, সিএনজির, লেগুনার অবৈধ স্ট্যান্ড বসতে শুরু করে। এর পাশাপাশি ফুটপাথ অবৈধ পার্কিং ও হকারদের দখলে আসে। হকার নেতাদের আন্দোলনের কারণে চাষাঢ়া খাজা মার্কেটের সামনে থেকে শুরু করে মেট্রো হল পর্যন্ত সড়কের একপাশে বসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। কথা ছিল এরই মধ্যে তারা বেচা-কেনা করবেন। কিন্তু আবারও বঙ্গবন্ধু সড়কে তাদের বসতে দেখা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে চলাচলে নগরবাসীর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কবে সড়কগুলো দখলমুক্ত হবে তাই এখন তাদের আকাঙ্খা।
মঙ্গলবার (১১ জুন) চাষাঢ়া শান্তনা মর্কেটের পেরিয়ে একটু সামনে, চাষাঢ়া চত্বরে ও বঙ্গবন্ধু সড়কের বেশ কিছু প্রান্তে গিয়ে সরেজমিনে গিয়ে সিএনজি, লেগুনার অবৈধ স্ট্যান্ড দেখা যায়। এরই সাথে অবৈধভাবে গাড়ি ও মোটরসাইকেল পার্কিংসহ হকারদের বসতে দেখা যায়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আল-নাহিয়ান নামে একজন চাকুরীজীবী লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, রাস্তায় চলাচলে অনেক সমস্যা হচ্ছে। রাস্তার পাশেই কতগুলো সিএনজি দাড় করিয়ে রাখা হয়। এর উপর বিভিন্ন গাড়ি-মোটরসাইকেল পার্ক করা তো আছেই। এর কারণে রাস্তা যে সংকীর্ণ হয়ে আসে, তাতেই যানজট লেগে যায়। যার কারণে গন্তব্যে যেতে সময় বেশি লাগে।
গৃহিণী সালমা আক্তার বলেন, ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যেতে অনেক সমস্যা হয়। চলাচলের রাস্তায় বাস স্ট্যান্ড, সিএনজি স্ট্যান্ড থাকার কারণে চলাচলের জায়গা একেবারেই পাচ্ছি না। সেদিনই দেখেছি রাস্তায় জ্যাম থাকার কারণে কতগুলো মোটরসাইকেল ফুটপাথে উঠে গেছে।
সচেতন মহল বলছে, সড়ক দখলমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে পুলিশ। তবে সকলেই দায়িত্বের সাথে কাজ করলে ও একে অপরকে সহযোগিতা করলেই এসমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
এব্যাপারে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, মেয়র, এমপিরা যখন বলছিলেন যে এক হলে সব সম্ভব হবে তখন নগরবাসী আশার আলো দেখেছিল। শুরুতে এর প্রভাব দৃশ্যমান হলেও পরবর্তীতে সড়ক আগের মতোই হয়েছে। যানজট ও ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে পুলিশ সুপারকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে আমি মনে করি। অবৈধ স্ট্যান্ড, হকারদের দূর করতে পুলিশ সুপারের কাজ করতে হবে। মূলত দায়িত্ববানরা নিজ স্থান থেকে দায়িত্ব পালন করলে নগরবাসীর ভোগান্তি দূর হবে বলেই আমি মনে করি।
এদিকে, সড়ক দখলমুক্ত করতে মাঠে স্পেশাল টিম নামছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগর। এনিয়ে তিনি লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমাদের বিশেষ টিম ১১ জুন থেকে অর্থাৎ আজ থেকেই মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে। সড়কের নো-পার্কিং জোনে গাড়ি থাকলে উচ্ছেদ করা হবে। সেই সাথে ফুটপাথ দখল করে হকারদের বসা ও অবৈধ স্ট্যান্ড সব কিছুই সরানো হবে। কেউ নির্দেশ না মানলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।