শনিবার, মে ৩, ২০২৫
Led02সদর

নগরীর খণ্ড খণ্ড ফুটপাত হকারদের হাক-ডাকে পরিপূর্ণ

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ফুটপাতের একপাশে বিশাল গর্ত করে চলছে ড্রেন নির্মান কাজ। তার পাশেই রাখা হয়েছে ড্রেন থেকে তোলা ময়লা আবর্জনার মাটি। তবুও এই ভাঙাচোরা ফুটপাতের একটু খালি জায়গা পেলেই জীবন জীবিকার তাগিদে নানা পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। কোথাও বিক্রি হচ্ছে মোবাইল ফোনের কাভার-গ্লাসসহ নানা যাবতীয় জিনিসপত্র, আবার কোথাও বিক্রি হচ্ছে জামা-জুতো। ড্রেনের কাজে ফুটপাত খণ্ড খণ্ড হলেও হকারদের হাক-ডাকে পরিপূর্ণ।

শুক্রবার (২ মে) নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে চাষাঢ়া থেকে ২নং রেল গেইট পর্যন্ত সড়কের ২ পাশেই দেখা মেলে এমন চিত্র। ছুটির দিন হওয়ায় যেমন ব্যস্ততা বেড়েছে নগরতে, তেমনই হাক-ডাক দিয়ে নানান পণ্য বিক্রি করছেন হকাররা। অনেকেই বিভিন্ন হকারদের এই অস্থায়ী দোকানগুলো ঘুড়ে দেখছেন, অনেকেই আবার সড়কে নেমে যাচ্চেন নিজের গন্তব্যে

এসময় ফুটপাতের ব্যবসায়ী আশিক মিয়া বলেন, ফুটপাত ভাঙা হোক বা ঠিক, আমরা যদি দোকান নিয়ে বসি তাহলে আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে ভাত খেতে পারি। দোকান না খুললে সেটাও খেতে পারি না। এছাড়াও নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত সব ধরনের লোকেরাই আমাদের কাছে কেনাকাটার জন্য আসেন। যাদের বাজেট কম তারা তো আর এসি দোকানে গিয়ে ৪ হাজার টাকার প্যান্ট কিনবে না। বাজেটের মধ্যে যার যা পছন্দ হয় তারা আমাদের কাছে থেকে কিনে নেয়। আজ শুক্রবার হওযায় বেচাকেনা একটু চলছে।

আরেকজন বিক্রেতা ফজল বলেন, হকারদের থেকে মানুষ কেনাটাকা করে কারণ এখানে দামটা একটু কম, বিভিন্ন মার্কেটে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। আমরা যে ফুটপাতে বসি এটা নিয়ে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত আছে। ধরেন একজন লোক কেনাকাটা করতে বের হলে তারা আগে আমাদের দোকান দেখে, ২টা জিনিস পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যায়। আবার সেই লোক যখন কেনাকাটা না কোন কাজে বের হয়, তখনই ভিড় দেখলেই আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলে। পুলিশ আমাদের দেখলেই উঠিয়ে দিতো, কিন্তু অনেক পুলিশ আছে যারা আমাদের থেকেই নানা জিনিস কিনতে আসে। সবার কাছে আমাদের দোষ শুনি আমরা ফুটপাত দখল করে নিয়েছি। আমরা তো আসি আমাদের পেটের দায়, কিন্তু যারা এই ফুটপাতে মটোরসাইকেল পার্কিঙ করে রাখসে তারা কি পেটের দায় করে রাখসে?

পথচারী রফিক হাওলাদার বলেন, ফুটপাতের এই দশা দেখছি রমজানের সময় থেকে। এই রাস্তা আর কালির বাজারের একই অবস্থা করে রেখেছে। এখন হকাররা যেখানে জায়গা পেয়েছে সেখানে বসেছে। মার্কেট থেকে কম দামে পোশাক পাওয়া যায় বলেই হাজারো মানুষ ঈদে-কোরবানীতে এই ফুটপাত থেকে কেনে। এখানে নিম্ন-মধ্যবিত্তরাই হকারী করে সংসার চালাচ্ছে, আবার তারাই এই হকারদের থেকে সাধ্যের মধ্যে নানা পণ্য কিনছে। হকার যে শুধু নারায়ণগঞ্জেই আছে এমন না, দেশের অনেক জায়গায় আছে কম-বেশি। তবে শুধু মানবিকতার দিক দেখলেই হবে না, আজ কোন জরুরী দরকারে ফুটপাত দিয়ে তাড়াতাড়ি যাওয়াটা সম্ভব হবে না। আর সড়কে যানযট তো আগে থেকেই গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে।

RSS
Follow by Email