নগরীতে মজার জন্য জীবন বাজি রেখে চলছে ‘সাবওয়ে সার্ফিং’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দেখলে মনে হবে কোন সিমেনার সুটিং চলছে। যেখানে নায়ক চলমান ট্রেণের ছাদে করে এক বগি থেকে দৌড়ে অন্য বগিতে লাফ দিচ্ছে। তিনি শুধু একা নন, সাথে আছে ছোট বড় বিভিন্ন বয়সের কিশোররা। দৌড়ানোর এ পর্যায় সামনে ইলেক্ট্রিক তার আসলে স্ট্যানম্যনের মতো শুয়ে পরছেন। কোন একশন সিনেমায় নয়, এমন দৃশ্যে দেখা মিলছে নারায়ণগঞ্জ টু ঢাকা ট্রেণে।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে নগরীর নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে ঢাকার কমলাপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় একটি ট্রেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রেন ছাড়া আগেই কিছু শিশু-কিশোররা জানালা দিয়ে বেয়ে উঠে যাচ্ছেন ছাদে। জীবন ঝুকি আছে জেনেও ট্রেণ ছাড়া সময় সেই কিশোররা খুব হাশিখুশি ভাবেই বন্ধুদের নিয়ে উপভোগ করছে এই যাত্রা।
এসময় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর রাকিবের সাথে কথা লাইভ নারায়ণগঞ্জের প্রতিবেদকের সাথে। ট্রেণে ঝুকিপূর্ন ভ্রমন বিষয়ে সে বলে, ‘এমনে কোথাও যাওন লাগবো না, আমগো ভালো লাগে তাই উঠি। আমি চাষাড়া, কালির বাজার ভিক্ষা করি। আমার বাসা গেন্ডারিয়া, এখান থেইকা যখন যাই তখন ট্রেণে যাই। আবার আসোর সময়ও স্টেশনে দাড়াই, ট্রেণ আসলে উইঠা পড়ি’
আরেক কিশোর মাসুদ বলেন, ‘ট্রেনের লোক দেখলে মাঝে মাঝে দাওয়া দেয়। আমরা তো ছাদে থাকি, আমগো কাছে টিকেট চাইবো কেন? ভয় লাগে না, কারণ আরও ছোট থাকতে এক ভাইয়ের কোলে কইরা এই ট্রেনের ছাদে উঠছি। উঠতে উঠতে ভয় কইমা গেসে।’
এ বিষয়ে ট্রেণ যাত্রি রবিন নামের এক শিক্ষক বলেন, ‘বাচ্চাদের তুলোনামূলক ঝুকিপূর্ন কাজ করতে পছন্দ করে। ওদের মধ্যে বন্ধুদের সামনে নিজেদের বড় দেখানোর প্রবণতাটা থাকে। যারা ঝুকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠে সার্ফিং করে ওরা অধিকাংশই পথশিশু। এখন ট্রেণ কতৃপক্ষের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা একটু নজরে রাখতে হবে, প্রতিটা স্টেশনে ট্রেন ছাড়ার আগে পর্যন্ত এই শিশু-কিশোরা যাতে ট্রেণের ছাদে উঠতে না পারে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। ওরা পথশিশু হলেও ওদের জীবনের মূল্য আছে।’
আরেকজন যাত্রি শাওন বলেন, পত্র-পত্রিকায় এই ট্রেণেরে নিচে কাটার পড়ার অনেক ঘটনাই দেখেছি। চলমান ট্রেণের ছাদ থেকে নিচে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা এর আগেও নারায়ণগঞ্জে ঘটেছে। তারপরও ট্রেণ স্টাফদের অবহেলাও অসাবধানতার কারণে এ ভাবেই শিশু কিশোররা উঠার সুযোগ পাচ্ছে। আমরা মাঝে মাঝে ২-১ জন যাত্রি না করলেও আমদের কথা শুনে না। তবে কতৃপক্ষের এ বিষয়গুলো আমাদের দৃষ্টিতে রাখতে হবে।’