নগরীতে ভূমিরক্ষা সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের প্রতিবাদী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নগরীতে ভূমিরক্ষা সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে প্রতিবাদী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৯ জুন) সকালে ১নং রেলগেট এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় সংগঠনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদ জেলা সদস্য-সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, গণসংহতি আন্দোলন জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহামুদ হোসেন, মটরমেকানিক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম, মহিলা পরিষদ জেলা সংগঠক শোভা সাহা, সামাজিক সংগঠন সমমনার উপদেষ্টা দুলাল সাহা প্রমুখ।
মানববন্ধনে ভূমিরক্ষা সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, সংবাদপত্রে দেখলাম সারা দেশে রেলওয়ের ৬ হাজার ৭২৭ একর বেদখল জমি রয়েছে। সম্প্রতি রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সে জমি উদ্ধারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। নারায়ণগঞ্জের জমি উদ্ধারের জন্য সাংসদ শামীম ওসমানকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠিত হয়েছে। বুঝলাম শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেয়া হয়েছে। এখন আমরা দেখতে চাই নারায়ণগঞ্জে কতটা জমি উদ্ধার হয়। হলে সাধুবাদ জানাবো। কিন্তু উদ্ধারকৃত জমি ভূমিদস্যুদের পেটে যাবে তা হতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত একটি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ে সহ বিভিন্ন সরকারী সংস্থার জমি দখলের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। ইতিমধ্যে বহু সরকারী জমি এসব সংস্থার অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজসে তারা আত্মসাৎ করে নিয়েছে। তারা রেলওয়ে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাষ্টের নামে ১নং রেলগেটের কাছে ইতিপূর্বে দুটি মার্কেট নির্মাণ করেছে। পরে ৪৭ হাজার ২০০ বর্গফুট জমি দখল করে তৃতীয় মার্কেট নির্মাণের পায়তারা শুরু করে ২০১২ সালে। আন্দোলনের মুখে তখন তা বন্ধ করলেও ২০২২ সালে আবার তারা সে জায়গা দখলের কার্যক্রম শুরু করে। মার্কেট বানানোর কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ইতিমধ্যে প্রায় শত কোটি টাকা তারা তুলে নিয়েছে বলে সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, রেলষ্টেশন, নৌ-টার্মিনাল ও বাসস্ট্যান্ড একসাথে হওয়া এখানে একদিকে রাজউক তাদের বিশদ অঞ্চল পরিকলাপনায় মাল্টিমোডাল পরিবহন হাব নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে, পাশাপাশি ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (আরএসটিপি) পরিকল্পনাতেও তা প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব-পশ্চিম পাড়ের সংযোগের জন্য যে কদমরসুল সেতু তৈরি হচ্ছে তার পাথও এইটি। সুতরাং কোন ভাবেই এখানে মার্কেট হতে দেয়া যাবে না।
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. এবি সিদ্দিক বলেন, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত এখানে কল্যাণ ট্রাষ্টের মার্কেট নির্মাণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নির্দেশনা দিলেও চিহ্নিত গোষ্ঠীটি দোকান পাট বিক্রয় অব্যাহত রেখেছে। এই কল্যাণ ট্রাষ্টে কতজন রেল কর্মচারী রয়েছে আমরা সে নামের তালিকা চাই।
আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি মোহাম্মদ নুরুদ্দিন প্রশ্ন করেন, জনস্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে কার স্বার্থে এই মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। সরকার ও প্রশাসনের মদদ ছাড়া ভূমিদস্যুরা এমনি সাহস পেতে পারে না। পাঁচ-দশ জন কর্মচারির জন্য এমনি ভাবে জনস্বার্থ লুণ্ঠিত হতে দেয়া যাবে না। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী যে কোনমূল্যে তা প্রতিহত করবো।
সমাবেশে বক্তারা প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, জাতীয় পার্টির আকরাম আলী শাহীন ভূমিদস্যুদের হয়ে এই লুটপাট চালাচ্ছে, অতিদ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনকেই দায়ি হতে হবে।