রবিবার, জানুয়ারি ১২, ২০২৫
Led01Led02অর্থনীতি

নগরীতে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল

# প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছি: ডিসি
# অধিক মূল্যে কিনে থাকলে আমাদের জানান, ক্ষতিপূরন দেওয়া হবে: ভোক্তা অধিকারের উপ পরিচালক
# বাজারে তেল নাই: খুচরা ব্যবসায়ী
# ‘সরকারের সোজা কথা কি ব্যবসায়ীরা মানে?’ ক্ষুব্দ ক্রেতা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সরকারের সিদ্ধান্তে ৮ টাকা বৃদ্ধি হয়েছে সয়াবিন তেলের দাম। এদিকে বাজারগুলোতে সরকারের সিদ্ধান্তের পর খুচরা পর্যায় আরও অধিক দামে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেল।  রূপচাঁদা, বসুন্ধরা, পুষ্টিসহ বিভিন্ন কোম্পানির বোতলজাত ৫ লিটারের তেল বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায়। এদিকে অতিরিক্ত মূলে তেল কেনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ক্রেতারা।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে নগরীর দ্বিগু বাবুর বাজার ও আশে পাশের এলাকার দোকান ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়। যেখানে ব্যবসায়ীদের কথা মেনেই সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বাড়িয়ে প্রতিলিটার বোতলজাত তেলের দাম ১৭৫ টাকা নির্ধারন করেছে। সেই হিসেবে প্রতি পাঁচ লিটার তেল বিক্রি হওয়ার কথা ৮৭৫ টাকা, সেখানে বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানির বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায়। এছাড়াও খোলা সয়াবিন তেল যেখানে বিক্রি হওয়ার কথা ১৫৭ টাকা সেখানে ১৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

তেলের অতিরিক্ত দামে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক ক্রেতা বাবুল আক্তার হোসেন বলেন, আজ পত্রিকায় শুনছি দাম আগের থেকে নাকি বাড়াইছে। সরকার তো আগেও দাম নিয়া কত নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু সরকারের দেওয়া দামে আমরা তেল কিনতে আগেও পারি নাই, এখনো পারি না। সরকার যে তেলর দাম বাড়াইসে, তারা তো ব্যবসায়িদের সুবিধা দেওয়ার জন্য দাম বাড়াইলো। কিন্তু সেই গত রমজান থেকে তেলের দাম একের পর এক বাড়তেই আছে। ৩ দোকান ঘুড়লাম বাজারে নাকি তেল নাই। দোকানদারকে জিগাইসি কবে আসবে, বলে আরও ৫-৬ দিন রাগবে নাকি।

আরেকজন ক্রেতা আজগর সরদার বলেন, সরকারের সোজা কথা কি ব্যবসায়ীরা মানে? আমরা হলো মধ্যবিত্ত মানুষ। খবরে পড়লাম দাম বাড়সে সেই দিনেই সরকারের থেকে বেশি মূল্যে দাম বাড়ছে। যেখানে দেখলাম সরকার বললো প্রতিলিটার বোতলজাত বিক্রি করা হবে ১৭৫ টাকা, সেখানে এখন বিক্রি হয় ১৯০ টাকা। ২দিন পর পর শুনি বাজারে নাকি মোবাইল কোর্ট আসে, তারা বাজারের দোকানে অভিযান না কইরা ডিলার বা কোম্পানিদের অভিযান জরিমানা করতে পারে না ?

খুচরা ব্যবসায়ী মোতালিব হোসেন বলেন, গত বেশ কিছুদিন ধরে তেল ঠিক মতো আসে না। কোম্পানীগুলো যে তেল দিতেসে সেটার গায়েও আগের মূল্য দেওয়া সত্ত্যেও আমাদের কেনা পড়ে ৫ লিটার তেল ৮৭০ টাকার বেশি। তা ছাড়া নিতাইগঞ্জ থেকে তেল নিলে এখন কোন রশিদও দেয় না। তারা তেলের সাথে অন্য পণ্য নেয়ার শর্ত দিয়ে দিতেসে। এখন যাদের কাছে আগের কিছু তেল ছিলো তারা তো সেগুলাই বিক্রি করতেসে। আর যাদের কাছে নাই তারা তেলই উঠায় নাই।

দ্বিগু বাবুর বাজারের সততা স্টোরের মালিক লিটন বলেন, আমাদের কাছে এখনো আগের তেল আছে। বিভিন্ন ডিলার পয়েন্টে খোজ নিসি, সেখানে তেল নাই। নতুন দামের নির্দেশনা আসছে এটাতো আমরাও জানি। কিন্তু ডিলাররা দাম না কমালে আমরা কোথা থেকে কমাবো। আমরা ১০ টাকায় কিনি ১১ টাকায় বিক্রি করে নিজের সংসার চালাই। যে ডিলারদের থেকে মাল আনি তারা এখনো নতুন দাম নির্ধারন করে নাই। এখন আমরা যে দামে কিনবো সেই হিসেবেই তো বিক্রি করবো।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, আমাদের বাজার মনিটরিং কমিটি তাদের কাজ করছে। প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছি। আজও অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রির কারণে এক দোকানে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তেলের নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা সহকারী পরিচালক মোঃ সেলিমুজ্জামান বলেন, আজ আমরা ফতুল্লাসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছি। দাম নিয়ন্ত্রনে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। যদি অতিরিক্ত মূল্যে কেউ তেল কিনে থাকে তাহলে তাকে ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করার জন্য অনুরোধ রইলো। অপরাধের সত্যতা পেলে ভিকটিমকে ক্ষতিপূরনসহ আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

RSS
Follow by Email