নগরীতে গরমের সাথে বেড়েছে শরবত-জুস বিক্রি, বাড়ছে স্বাস্থ ঝুকিঁও
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: মাঝে মাঝে বৃষ্টির হলেও মেঘ না থাকলে নগরীতে থাকে ছাতিফাটা রোদে। এমন গরমে গন্তব্যে ছুটে চলা তৃষ্ণার্থ পথিকের কাছে এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত যেন লক্ষাদিক টাকা থেকেও বেশি আরামদায়ক। প্রচণ্ড এ গরমে তৃষ্ণা মেটাতে নানা ধরনের ঠাণ্ডা শরবতের দিকেই ঝুঁকছেন পথিকরা। দোকানিরাও গ্রাহকদের তৃষ্ণা মেটাতে সামনে এগিয়ে দিচ্ছেন লেবুর, বেল, পেঁপে, আখ, মাল্টাসহ নানা ধরনের ঠান্ডা শরবত বা জুস। খালি চোখে এসব পানীয় তৈরির প্রক্রিয়া সচ্ছ মনে হলেও আসলেও কতোটা স্বাস্থকর তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এ পানীয়কে পরিহার করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরাও।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে সরেজমিনে নগরীতে দেখা মেলে এমন চিত্র। একটি পানির ফিল্টারের মধ্যে রেখ দেওয়া হয় বরফ, কয়েকশ লেবু ও ‘ড্রিংক পাউডার’। এসব নিয়ে তৈরি হয় শরবত। ক্রেতার চাওয়া মাত্রই ফিন্টার থেকে নিয়ে এক গ্লাস শরবত এগিয়ে দেওয়া হয়। ক্রেতা শরবত পান করার পর গ্লাসটি পাশে থাকা একটি পানি ভর্তি বালতিতে চুবিয়ে উঠিয়ে আবার রেখে দেওয়া হয় পরবর্তী কোন গ্রাহকের জন্য। মানভেদে এসব শরবত ১০ টাকা থেকে ২০টা পর্যন্ত হয়। শুধু লেবুর পানি বিক্রি হয় ১৫ টাকা এবং ড্রিংক পাউডার মেশানোর লেবুর পানি বিক্রি হয় প্রতি গ্লাস ২০ টাকা।
রিকশা চালক রাকিব বলেন, এই রোদ বৃস্টির মধ্যে সারাদিন রিকশা চালাই। মাঝে মাঝে রোদে আর সহ্য করতে পারলে এই এ্ক গ্লাস লেবুর শরবত খাই। ঠান্ডা লেবুর শরবত খেলে একটু শান্তি লাগে।
শরবত বিক্রেতা জামাল বলেন, গরম পরলে শরবত বিক্রি বাড়ে। প্রতিদিন দুইশ থেকে আড়াইশ গ্লাস শরবত বিক্রি হয়। তবে একটু বৃষ্টি হলেই বিক্রি কমে আসে। রিকশা চালক, ভ্যান চালক, খেটে খাওয়াসহ ফুটপাথের পথচারীরা আমার এ শরবতের ক্রেতা। সকালে বাড়ি থেকে বানিয়ে নিয়ে আসি। এরপর এখানে যদি শেষ হয় তাহলে লেবু কেটে পাউডার দিয়ে এখানেই বানিয়ে নেই। গ্লাস পরিষ্কারের জন্য এক বালতি পানি রেখেছি, সেটা দিয়েই গ্লাসগুলো ধোয়া হয়ে যায়।
খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘তাপদাহে সব সময় সাথে বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন রাখা উচিত। গরমে পানি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য জরুরি। তবে রাস্তার পাশে যে শরবত বিক্রি করে তা এড়িয়ে চলার পরামর্শ আমরা সব সময় দিয়ে থাকি। এসব পানির মাধ্যমে পানিবাহিত রোগের জীবাণু থাকতে পারে। তা ছাড়া দেখা যায় গ্লাসগুলো ঠিকমতো ধোয়া হচ্ছে না। একই পানি দিয়ে সারাদিন গ্লাস পরক্ষিার করা হচ্ছে। এতে জীবাণু থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা তাকে। একই গ্লাস বারবার ব্যবহারের ফলে একজনের জীবাণু আরেকজনের মধ্যেও যাচ্ছে। কোনও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি খাওয়া গ্লাসে যখন আরেকজন সুস্থ মানুষ খাচ্ছেন, তখন জীবাণু খুব সহজেই সুস্থ মানুষটির শরীরে প্রবেশ করতে পারছে। ফলে দেখা যাচ্ছে, একজন সুস্থ মানুষের শরীরে সহজেই সংক্রমিত হচ্ছে।’