দোকান নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে এনসিসির জন্য: গোলাম সরোয়ার সাঈদ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: এটেল মাটির দোকানের জমির মালিকানাকে কেন্দ্র করে বিরধের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক ও ব্যবসায়ি গোলাম সরোয়ার সাঈদ বলেন, ‘এই সম্পূর্ণ ঘটনাটি ঘটেছে সিটি কর্পোরেশনের জন্য। তারা রানাকে বরাদ্দ না দিলে সে এখানে আসতো না। রানা একটি দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে, কাগজ নিয়ে এসে ১৪ শতাংশ জায়গার উপর ২২০ স্কোয়ার ফিটের বরাদ্দে নিয়েছে যেটা সম্পূর্ণ বেআইনি। এখানে সিটি কর্পোরেশন অবৈধ কাজ করেছে, এবং রানা তার রাজনৈতিক পরিচয় অপব্যবহার করে আমাকে এক বছর যাবত আমার জমিতে কাজ করতে দিচ্ছে না। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি রাখি, আজ সে হামলা হলো সে হামলার সুষ্ঠু বিচার হোক। এবং আমি আমার জায়গা যেন নিরাপদে কাজ করতে পারি সেটা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে।’
সোমবার (৭ জুলাই) সকালে চাষাড়ার বাগে জান্নাত মসজিদ সংলগ্ন এটেল মাটি হোটেলে বেকু দিয়ে উচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিকেলে এক হাসপাতালে চিকিৎসাধী থাকা অবস্থায় এ কথা বলেন তিনি।
এটেল মাটি হোটেলের মালিকানা বিষয়ে গোলাম সরোয়ার সাঈদ বলেন, রেস্টুরেন্টের ওইখানের চৌদ্দ শতাংশ জায়গার মালিক ফয়জুর রহমান। উনি ২০০৩ বা ২০০৬ সালে সে জমির ক্রয় সূত্রে মালিক হয়। এরপর ২০১৩ সালে তিনি আমাকে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দেন ভবন নির্মাণের জন্য। তখন ভবন নির্মাণের কাজ হাতে নিলে পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে আগাতে পারি নি। অতঃপর পাঁচে আগস্টের পর আমরা যখন আবার কাজ শুরু করি তখন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রানা আমাদের কাজে বাধা দেয়। পরবর্তীতে তার সাথে এই জমি বিষয়ে বেশ কয়েকবার বসেছি, সে আমার মালিকানার কাগজ দেখতে চেয়েছে, আমরা দেখিয়েছি। এরপরও তাকে বলা হয়েছিল আমরা কাজ শুরু করবো সে যেন নতুন করে কোন ঝামেলা না করে। এছাড়াও ২০০১ সালে সিটি কপোরেশন একটি রাজনৈতিক কারণে এই জায়গাটির উপরে একটি মামলা করে। ওখানে ৯৭ শতাংশ মধ্যে শুধু আমার ১৪ শতাংশের ওপর মামলা করা হয়েছে। অথচ আদালতে বিগত ১৪ বছর পর্যন্ত কোন কাগজের ধারায় তারা মালিক সেটা এখন পর্যন্ত জমা দিতে পারিনি। এই নিয়ে সে আদালতের বিচারক যুগ্ম জেলা জজ তাকে চার্যও করেছে। আদালতের বলার পরও তারা এই মামলার গত ডেটের সাক্ষীও আনতে পারেনি।
জমির উপর এনসিসির বরাদ্ধ বিষয়ে এ ব্যবসায়ি বলেন, মামলা চলমান থাকা অবস্থায় সেই রানা সিটি কর্পোরেশনের সাথে যোগাযোগ করে এই জায়গার উপর ২২০ স্কয়ার ফিটের উপরে একটি বরাদ্দ নিয়ে আসে। পরবর্তীতে জানতে পেরেছি সেটা রানা নয় অন্য একটা ছেলে এনেছে তবে ভেতরে ভেতরে রানাই কাজটা করিয়েছে। সিটি কর্পোরেশন ভাড়া দিলে সম্পূর্ন জায়গাটাকে ভাড়া দেবে, ১৪ শতাংশ জায়গার মধ্যে ২২০ স্কয়ার ফিটের ভাড়া কেন দেবে। আমি এতদিন ভবনের কাজ ধরিনি যেহেতু মামলা চলছিল, এখন মামলা প্রায় শেষের পর্যায়ে তাই আমরা এরপর কাজ ধরবো। কিন্তু এখানে রানা আমাদের কথা না শুনে এখানে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছে। এতে আমরা কোর্ট থেকে ১৪৫ ইস্যু করি।
সেই দোকানের জমিতে কাজ শুরুর বিষয়ে তিনি আরও বলেন, এ সম্পূর্ন বিষয়টি থানার সাথে কথা বলার পর সেখান থেকে কোন সহযোগিতা পাইনি। পরবর্তীতে আমরা সেনাবাহিনীর সাথে কথা বলেছি। সেনাবাহিনীর মেজর আফজাল সাহেব কিছুদিন আগে আমাকে জানিয়েছে, তারা রানাকে ডেকে কথা বলেছে। রানা তাদেরকে জানিয়েছে এইখানের ভবনের কাজে সে নেই। সেনাবাহিনী থেকে আমাকে জানানো হয়েছে যেহেতু এখানে রানার কোন ইনবলমেন্ট নেই তাই আমরা কাজ আপনি শুরু করতে পারি। গতকাল রাতে রানার সাথে এ নিয়ে কথা হয়, আমি বলেছি যেহেতু আপনার এখানে কোন ইনবলমেন্ট নেই তাই আমি আমার মত কাজ শুরু করি। পরবর্তীতে প্রস্তুতি নিয়ে সকালবেলা ওই জায়গায় অনেকগুলো ময়লা ছিল সেগুলো অপসারণের জন্য বেকু নিয়ে যাই। আমাদের কাজ শুরু হওয়ার আধা ঘন্টা পর লোকজন আসে। লোকজনদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদর থানার সেক্রেটারি জুলহাসও ছিল। সে আসছে আমাদের সাথে ভালো মন্দ কথা বলেছে, সে তার পক্ষে যুক্তি রেখেছে, আমি আমার পক্ষে যুক্তি রেখেছি। আমাদের কথার মাঝে হঠাৎ করে কমিশনার শকু ভাই এসেছেন। তিনি এসে বলেছেন, এগুলো সবই সিটি কর্পোরেশনের জায়গা। তবে তার কথাগুলো সত্যি নয়। এছাড়াও কাউন্সিলর যে এই বিষয়ে কথা বলতে এসেছে, এখানে তো তার আসার কোন এখতিয়ার নেই। যদি এই জমিটা সিটি কর্পোরেশনের হয়ে থাকে তাহলে সিটি কর্পোরেশনের কোন কর্মকর্তা আসবে। কর্মকর্তারা প্রয়োজনে পুলিশ নিয়ে এসে তারা জায়গার মালিকানা প্রমাণ করবে আমরা চলে যাবো। শকু ভাই কাউন্সিলর না তবুও সে আসার পর পরিবেশটা ঘোলা হয়ে গেছে।
মারধরের সুষ্ঠ বিচার দাবি করে চেম্বারের এই পরিচালক আরও বলেন, শকু ভাইয়ের কথা বলার মাঝে রানা ঘটনাস্থলে আসে। যখন আমি রানাকে জিজ্ঞেস করলাম যে আপনি কিভাবে কাজ শুরু করলেন সেটা বলেন, তখন সে আমাকে কিছু না বলেই তার লোকজন আমার উপর হামলা শুরু করে। আমি এই বিষয়টি সেনাবাহিনীকে অবহিত করেছে, এবং জেলা পুলিশ প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে দিচ্ছি।