শনিবার, জুলাই ২৬, ২০২৫
মতামত

‘দেশে ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে সমকামিতা, বিশেষ পেশার আড়ালে সক্রিয় অপরাধী চক্র’

লেখক- সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি: ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সহ আশপাশের জেলা শহরগুলোতে মেয়েদের সমকামিতা ভয়াবহ রুপ নিতে চলেছে। এদের দলটি এতটাই শক্তিশালী যে ২/৪জন পেশাদার কলম সৈনিক ইতিমধ্যেই এদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলাতে উল্টো তাদেরকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে এরা। এরা প্রচন্ড মামলাবাজ। এদের হাতে কিছু ঠকবাজ আইনজীবী, পুলিশ সদস্য, রাজনীতিক, কার্ডধারী সাংবাদিক সহ সমাজের প্রভাবশালী একটা সংঘবদ্ধ দল আছে। তাই হেনস্তা হওয়ার ভয়ে কোনো পেশাদার সাংবাদিক বা ভুক্তভোগীরাও এদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমান হাতে নিয়েও কোনো এ্যাকশনে যেতে পারে না। এরা নিজেদের সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, সমাজকর্মী, আইনজীবী পরিচয় দিয়ে বিভিন্নজনকে ব্ল্যাকমেইল করে, নানাভাবে হেনস্তা করে মানুষের জীবন বিষিয়ে তুলছে। সমকামিতার আড়ালে এদের মূল পেশা – দেহ ব্যবসা, মাদক ব্যবসা। সরাসরি কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে মাদকের চালান আসে এদের হাতে। এদের ফ্ল্যাট বাসায় একটা গোপন কক্ষ থাকে, যে কক্ষে তেমন কোনো আসবাবপত্র থাকে না। যে কক্ষে সমাজের অনেক প্রভাবশালীরা যায় এবং নারী ভোগ ও মাদক সেবন করে। আর বাইরে থেকে নিজেদের সহিহ সুদ্ধ দেখাতে এরা প্রচন্ড দাপট নিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে কার্ড বহন করে। অথচ এদেরকে লিখতে দিলে গুছিয়ে ২ লাইন সংবাদ তারা লেখার যোগ্যতা রাখে না। অসংখ্য সুখী পরিবার থেকে সুন্দরী গৃহবধূদের ফুসলিয়ে, ব্ল্যাকমেইল করে এরা এদের গ্রুপে নিয়ে যাচ্ছে শুধু তাই নয়, সেইসব পরিবারগুলোকে এরা একের পর এক ষড়যন্ত্রের জ্বালে জড়িয়ে নিঃশ্বেস করে দিচ্ছে। এদেরকে দ্রুত সমাজ থেকে উৎখাত করতে না পারলে গোটা সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে অচিরেই।

মূলত বাংলাদেশে এই নষ্ট প্রথা শুরু হয় ২০১০ এর পরে। এর আগেও ছিলো। তবে এমন সংগঠিত বা আলোচিত ছিলো না তারা। এই সমকামী গ্রুপটা ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিতে শুরু করে উল্লেখিত বছরেই। ২০১৫-১৬ সাল হচ্ছে এরা প্রকাশ্যে আসার সময়। এরপর থেকে বহু ক্যাম্পাস ও বহু পেশাদারদের এ পথে দেখা গেছে। হ্যা, তারা এটাকে এখন আর অপরাধ বা পাপ হিসেবেও দেখেনা। আপনারা চাইলে সোশ্যাল মিডিয়া সাইট কিংবা গুগল করে জেনে নিতে পারে এই সমকামী গ্রুপটা ঠিক কতটুকু ছড়িয়েছে অঅমাদের দেশে। আপনি আমি হয়তো বিশ্বাসও করতে পারবোনা যে এটা এখন মোটামুটি মহামারী আকার ধারনের অপেক্ষায়। আমরা যারা রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক দোষ দিতে অভ্যস্ত তারা এটাকে আসলে এক প্রকার ইগনোর করে দেখার চেষ্টাই করি।অর্থাৎ ছড়াচ্ছে সমস্যা নাই। এ নিয়ে তো রাজনীতি করার টপিক পাওয়া যায় না। অথচ সমস্যাটি সামাজিকভাবে মোকাবেলা করার বিষয়। ধর্মীয়ভাবে একে মোকাবেলা করার বিষয়। আমেরিকা বা জাতিসংঘের এদেশে হস্তক্ষেপ আমরাও চাইনা; বরং তুমুল বিরোধিতা করি। কিন্তু সব মহামারীর ওষুধ আমেরিকার ঘাড়ে দিলেই চলবেনা। আমাদেরকেও সামাজিক,পারিবারিক, ধর্মীয় এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এগুলো মোকাবেলা করতে হবে, বিরোধিতা করতে হবে। এই ঘৃণ্য পাপাচারে লিপ্ত লোকদের প্রাতিষ্ঠানিক বহিস্কারের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিকভাবেও বহিস্কার করার ব্যবস্থা করা হোক।

বাংলাদেশ দন্ড বিধির ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাকৃতভাবে কোনো পুরুষ/নারী/জন্তুর সহিত প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে যৌন সহবাস করে, সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা যেকোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে–যার মেয়াদ ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে- দন্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে। এই ধারায় অস্বাভাবিক অপরাধের শাস্তির বিধান করা হয়েছে এবং তা অবশ্য প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধ ভাবে হতে হবে। যদিও প্রাকৃতিক নিয়ম বিরুদ্ধ যৌন সহবাসের সর্বজনীন স্বীকৃত সংজ্ঞা এখনো নির্ণীত হয়নি।
লুত সম্প্রদায়ের লোকজন সমকামিতায় লিপ্ত হলে মহাশক্তিধর আল্লাহ তাদেকে কিভাবে ধ্বংস করেছেন তা ফুটে উঠেছে এই আয়াতে:
فَلَمَّا جَاءَ أَمْرُنَا جَعَلْنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهَا حِجَارَةً مِّن سِجِّيلٍ مَّنضُودٍ
“অতঃপর যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছল, এরপর যখন আমার সিদ্ধান্ত কার্যকর হল, তখন আমি জনপদের উপরিভাগ নিচে এবং নিম্নভাগ উপরে উঠালাম এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর-পাথর বর্ষণ করলাম।” (সুরা হুদ: ৮২)
ইতিহাসে এই ভয়াবহ ঘটনার নীরব সাক্ষী হয়ে আজও বিদ্যমান রয়েছে জর্ডানে অবস্থিত ‘ডেড সি’ (The Dead Sea) বা মৃত সাগর।

ইসলাম ধর্মে সমকামিতার সর্বোচ্চ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। কুরআন, বাইবেল, হিন্দু ধর্ম ও সংবিধান নিষিদ্ধ সমকামিতাকে যারা প্রমোট করছে তারা ইসলাম, দেশ ও জাতির শত্রু।ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামিতা শুধু ইসলামেই নয়, অন্যান্য ধর্মেও অবৈধ। খ্রিস্টধর্মে বলা হয়েছে, সমকামিরা ঈশ্বরের গজবপ্রাপ্ত। হিন্দুধর্মে বলা হয়েছে সমকামি মহিলা হলে আগুল কেটে বা মাথা ন্যাড়া করে দেয়া এবং ২০০ রুপি জরিমানা করা। সমকামি পুরুষ হলে পানিতে ডুবিয়ে মারা। এবং “যদি কোন বয়স্কা নারী অপেক্ষাকৃত কম বয়সী নারীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তাহলে বয়স্কা নারীর মস্তক মুণ্ডন করে দুটি আঙুল কেটে গাধার পিঠে চড়িয়ে ঘোরানো হবে।”
তাই আসুন, আমাদের পরিবারকে, আমাদের সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে আমরা সমকামিতার সাথে জড়িত নারী-পুরুষ যারা সাংবাদিকতা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পেশার পরিচয় বহন করে এই পাপ করে যাচ্ছে, তাদেরকে প্রতিহত করি, সমাজ থেকে উৎখাত করি, আইনের হাতে তুলে দেই। দেশের আলেম সমাজেরও উচিত দ্রুত এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে সকল প্রকার পাপাচার ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

লেখক- সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী

RSS
Follow by Email