রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
জেলাজুড়েরাজনীতিসোনারগাঁ

দুর্নীতি-দুঃশাসন রুখে দাঁড়ানোর দাবিতে সিপিবির বিক্ষোভ

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দুর্নীতি-লুটপাট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সোনারগাঁও থানা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) শাখা। শুক্রবার (১২জুলাই) বিকেল ৫ টায় সোনারগাঁয়ের উদ্ধবগঞ্জ বাজারে এ বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সোনারগাঁও থানা শাখার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শিবনাথ চক্রবর্তী, সাবেক সভাপতি জিয়া হায়দার ডিপটি, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ইকবাল হোসেন, আব্দুস সালাম বাবুল, জেলা কমিটির সদস্য এম এ শাহীন প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দুর্নীতি-লুটপাট, দুঃশাসন ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কষাঘাতে জনসাধারন ও দেশ আজ গভীর সংকটে নিমজ্জিত। বর্তমান সরকারের নীতি’ই এখন দুর্নীতিতে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতিবাজেরা সরকারের আশ্রয় প্রশ্রয়ে দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। দেশের অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি বিস্তার লাভ করেছে। সমাজ, রাজনীতি ও প্রশাসনে ভয়াবহ নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বেনজীর, সাবেক সেনা কর্মকর্তা আজিজ ও এনবিআরের মতিউরসহ কিছু দুর্নীতিবাজের খবর ইতিমধ্যে বের হয়েছে। যতোটুকু দুর্নীতির খবর জনসম্মুখে এসেছে সেটা ছিঁটেফোঁটা মাত্র। যাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে ওরা দুর্নীতি করেছে তাঁদের খবর এখনো অগোচরে রয়ে গেছে। দুর্নীতির মূলহোতাদের ধরতে না পারলে অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়া যাবে না। সরকারের সুবিধা অনুযায়ী লোক দেখানো কিছু দুর্নীতির বিচার প্রক্রিয়া চালিয়েছে। সেটা কতক্ষণ চলবে অথবা আদো বিচার হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে শংসয় আছে। কেননা সরকার দুর্নীতির উপর ভর করেই ক্ষমতায় এসেছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজার সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে জনগণের পকেট লুটে নিচ্ছে। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, লুটের টাকা বিদেশে পাচার করে দেয়া হয়েছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত দেয়া হচ্ছে না। ফলে ব্যাংক গুলো দেওলিয়া হয়ে গেছে।

সরকার দুর্নীতির প্রশ্নে ‘জিরো টলারেন্স’ এর কথা বললেও বাস্তবে সরকারের প্রশ্রয়েই দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম হয়েছে। কালোটাকা উদ্ধার না করে এবারের বাজেটে ১৫% কর দেয়ার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার অনুমতি দিয়ে দুর্নীতিকে জায়েজ ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছে। সরকার ভারতকে রেল ট্রানজিট দিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মূখে ফেলেছে। অন্যদিকে তিস্তা বাঁধের সমস্যা সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টির কারণে দেশ আজ গভীর সংকটে নিমজ্জিত। কৃষক, শ্রমিক, গরীব মেহনতি মানুষের আয়-রোজগার দিয়ে দৈনন্দিন জীবনের খরচ সামাল দিতে পারছে না। নিম্ন আয়ের মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। দেশে কোটি কোটি যুবক বেকার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। এদিকে সরকারের কোন নজর নেই। কথায় কথায় উন্নয়নের গল্প শুনায়। এই উন্নয়ন কার উন্নয়নয়ন? সরকারি আমলা, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক কিছু ব্যক্তিদের দুর্নীতির উন্নতি হয়েছে। দেশের আপামর জনসাধারনের জীবনমানের কোন উন্নতি হয়নি আরও অবনতি হয়েছে। এই দুরাবস্থা থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হলে দুর্নীতি ও লুটপাটের ব্যবস্থা বদলাতে হবে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদা রক্ষায় বিনা ভোটের সরকারকে বিদায় করে দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সিপিবি’র চলমান লড়াই সংগ্রাম জোরদার করার জন্য নেতৃবৃন্দ দেশের সকল শ্রেণী পেশার সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানান।

RSS
Follow by Email