দুর্গাপূজায় সিনেমার গানের পরিবর্তে ধর্মীয় সংগীত বাজাতে এড. সাখাওয়াতের আহ্বান
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, বিগত দিনগুলোতে একটি শব্দ মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে রেখেছিলো সেই শব্দটি হচ্ছে ধর্মীয় সংখ্যালঘু। গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই শব্দটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন কেউ ধর্মীয় সংখ্যালঘু না। আমরা সবাই সমান, সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। মুসলমান হিসেবে আমার এই দেশে যতটুকু অধিকার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকলের সমান অধিকার। এদেশে আমরা সবাই বাংলাদেশী হিসেবে বসবাস করবো। দুর্গাপূজার মন্ডপগুলোতে হিন্দি সিনেমার গান না বাজিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগীত বাজানোর আহ্বান জানিয়ে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত বলেন, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে দুর্গোৎসব পালন করবেন। মন্ডপগুলোতে ধর্মীয় গান বাজাবেন, হিন্দি বা বাংলা সিনেমার গান বাজানো থেকে বিরত থাকবেন।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর গলাচিপা রামকানাই মন্দিরে আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব সফল ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি আরও বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা নারায়ণগঞ্জে যাতে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা এবং আনন্দ উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হয়, তার জন্য অতন্দ্র প্রহরী হয়ে আমরা আপনাদের পাশে থাকব। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়াল মিটিং করে এ ব্যাপারে কঠোর দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। কোনো জেলা বা মহানগরে যদি দুর্গোৎসব চলাকালীন সময়ে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তাহলে সে জেলা বা মহানগর কমিটিকে জবাবদিহি করতে হবে বলে হুঁশিয়ারিও জানিয়েছেন তিনি।
এড. সাখাওয়াত বলেন, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে দুর্গোৎসব পালন করবেন। মন্ডপগুলোতে ধর্মীয় গান বাজাবেন, হিন্দি বা বাংলা সিনেমার গান বাজানো থেকে বিরত থাকবেন। নারায়ণগঞ্জের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। এখানে সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালনের হাজার বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। এবারও আমরা শারদীয় দুর্গোৎসবে সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবো। সকল সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাইবোনদের সহযোগিতায় ও সকল রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনকে সাথে নিয়ে আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা আয়োজনে বদ্ধপরিকর। কেউ কোনো গুজবে কান দিবেন না, গুজব প্রচার করবেন না। যদি কোথাও কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আপনারা মন্দির কমিটি, পূজা উদযাপন পরিষদ এবং প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করবেন।
সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে’র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু। আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা প্রবীর কুমার সাহা, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ট্রাস্টি ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা পরিতোষ কান্তি সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. সরকার হুমায়ূন কবির, সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, মহানগর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সহ সভাপতি সাংবাদিক উত্তম সাহা, সোনারগাঁ উপজেলার সভাপতি লোকনাথ দত্ত, সিদ্ধিরগঞ্জের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, সাধারণ সম্পাদক খোকন বর্মন, ফতুল্লা থানার সভাপতি প্রদীপ মন্ডল, রূপগঞ্জ উপজেলার সভাপতি গনেশ পাল, আড়াইহাজারে সভাপতি হারাধন চন্দ্র দে সহ বিভিন্ন পূজা মন্ডপের প্রতিনিধিবৃন্দ।