দলমত নির্বিশেষে ১০০০ লোকের কমিটি হবে: শামীম ওসমান
লাইভ নারায়ণগঞ্জ : আল্লাহ’র কাজ করতে গেলে শয়তানের বাধা আসবেই। পৃথিবীতে একটাই সত্য, আমি বাঁচবো না। এবার ইন শা আল্লাহ প্রতি ওয়ার্ডে ১০০০ লোকের কমিটি হবে, যেখানে আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র ব্যাপার থাকবে না। শুধু ভাল লোক থাকবে। এটা বাড়বে আস্তে আস্তে। এর মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, ইভ টিজিং এগুলো বন্ধ করতে চাই। এখানে আমি কোনও ছাড় দিবো না। নিজের ঘর নিজের পরিষ্কার করতে হয়। ওরা আমাদের সমাজকে ধ্বংস করছে। আমার কোনও বাচ্চা, মেয়ে রাস্তায় হাটতে যেন ভয় না পায়, এমন ৮ নং ওয়ার্ড চাই।
২৯ ডিসেম্বর এনায়েতনগর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে চকলার মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় এ কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমান।
তিনি আরও বলেন, আগামী ৪ তারিখ নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন। ঢাকায় আমাদের দলের সিনিয়র সব নেতারা বসেছিলেন, কোথায় মিটিং করা যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ঢাকার যেকোনো জায়গায় জনসভা করবেন। আপনারা আমাদের ভালবাসেন, তাই শেখ হাসিনাও আমাকে ভালবাসেন। তাই তিনি বলেছিলেন, আমি সেখানেই শেষ জনসভা করবো যেখানে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিলো। আমি নারায়ণগঞ্জ যাবো, শামীম ওসমানের এলাকায় জনসভা করবো। আমরা ১২ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার কাজ করেছি, কিন্তু আমি এতে সন্তুষ্ট না। আমরা বড় বড় কাজ সব শেষ করেছি, যা চেয়েছি সব পেয়েছি। কিন্তু উনি তো মা, মায়ের কাছে আবদার করতে হয় না চাওয়ার আগেই দিয়ে দেন। এবার মেট্রোরেল নারায়ণগঞ্জে আনতে চাই।
“আমরা পঞ্চবটী থেকে ২৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত ফ্লাইওভার হবে। চাষাড়া থেকে আরম্ভ করে পোস্তগোলা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা নিয়ে যাচ্ছি, ১২০ ফিট রাস্তা হবে। ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড আস্তে আস্তে ২ লেন, এরপর ৪ লেন থেকে ১০ লেন হচ্ছে। সেখান থেকে রাস্তা বের করেছি আদমজী পর্যন্ত। আমার জীবনের স্বপ্ন ছিলো, একটা বিশ্ববিদ্যালয় হবে আমাদের। বিল পাশ হয়ে গেছে, বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের। আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমাদের জন্য আলাদা করে ঢাকা লিংক রোডের পাশে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হবে। আমার জীবনে শ্রেষ্ট কাজ করেছিলাম আমি, যার জন্য আল্লাহ’র কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া। নারায়ণগঞ্জে আল্লাহ’র গজব ছিলো, দুইশ বছরের পুরনো টানবাজারের পতিতালয়। ওখানে ৪ হাজারের বেশি বাচ্চা মেয়ে ছিলো, যাদের বয়স ১১ বছরের নিচে। আমি শেখ হাসিনা‘কে জানালাম, আমি এটা উচ্ছেদ করতে চাই। বাধা আসবে, বাধা আসুক-তিনি বলেছেন। সেটা উচ্ছেদ করতে পেরেছি। আল্লাহকে খুশি করে মরতে চাই, রাজনীতি একটা ইবাদত আমার কাছে। ধান্দা করতে আসি নাই, ধান্দা করলে বাড়ি ঘর বন্ধক দিতাম না। না খেয়ে কাটিয়েছি, কেউ এগিয়ে আসে নাই। কথা যখন বলবো, শ্রমিকের কথা বলবো, কৃষকের কথা বলবো। এটাই আমার কাজ, এটাই আমার রাজনীতি। এমপি হওয়াটা আমার কাছে বড় না। আমি ভোট চাবো না, আপনারা যদি মনে করেন আমাকে দরকার আমাকে ভোট দিবেন। আপনার দেশ বড় বিপদে আছে, আপনার মানচিত্রের উপরে বিশাল বড় এক ঈগল পাখি ঘুরছে। ও আপনার সমুদ্র চায়, ও আপনার দ্বীপ চায়। ও চায় বাংলাদেশের অবস্থা ইরাকের মত হোক, আফগানিস্তানের মত হোক।”
জনসভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, সিনিয়র সহ-সভাপতি এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি ও জেলা যুবলীগ নেতা এহসানুল হাসান নিপু, আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ ভূঁইয়াসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী নেতা-কর্মীরা।