বুধবার, মে ১৪, ২০২৫
Led01জেলাজুড়েবিশেষ প্রতিবেদন

দগ্ধ হৃদয়ে শীতল পরশ, বৃষ্টিতে স্বস্তি নগরবাসীর

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আকাশ আজ দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তপ্ত রোদের রুদ্রমূর্তি শেষে মেঘেরা যেন জমাট বাঁধা কান্না নিয়ে নেমে এলো ধরণীর বুকে। বুধবারের দুপুরে, যখন নগরবাসী অসহ্য গরমে ক্লান্ত, ঠিক তখনই ঘটলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। তিনটে বাজতেই নারায়ণগঞ্জ শহর এবং তার আশেপাশে আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গেল। তারপর নামলো সেই অমৃতধারা – বহু প্রতীক্ষিত বৃষ্টি!

মনে হচ্ছিলো যেন রুক্ষ প্রকৃতি মায়ের আঁচল পেতে দিলো তার সন্তানদের। দীর্ঘ দিনের পোড়া মাটি যেন তৃষ্ণার্ত শিশুর মতো পান করলো সেই শীতল জল। গ্রীষ্মের দাবদাহে বিবর্ণ হওয়া গাছপালাগুলো যেন নতুন করে সবুজ স্বপ্ন দেখতে শুরু করলো। আর নারায়ণগঞ্জের ক্লান্ত মানুষ? তাদের চোখেমুখে তখন অপার শান্তি। দীর্ঘ খরতাপের বন্দিদশা থেকে যেন এক লহমায় মুক্তি পেল তারা।

বৃষ্টির ছোঁয়ায় মুহূর্তেই পাল্টে গেল শহরের দৃশ্যপট। তপ্ত বাতাস জুড়িয়ে গেল, আর ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ ভরে তুললো চারপাশ। খেটে খাওয়া মানুষগুলোর মুখে ফুটে উঠলো নির্মল হাসি। রিকশাচালক রহিম মিয়ার কপালে জমে থাকা ঘাম যেন ধুয়ে গেল এক পশলা বৃষ্টিতেই। নির্মাণ শ্রমিক সোলেমানের রুক্ষ হাতের তালু যেন অনুভব করলো প্রকৃতির স্নিগ্ধ স্পর্শ।

তবে প্রকৃতির এই শান্তনার ধারায় মিশে ছিলো এক ক্ষীণ সুর – শহরের কিছু নিচু এলাকায়, বিশেষ করে বিবি রোড আর কালিরবাজারে দেখা দিলো সাময়িক জলধারা। যেন আনন্দাশ্রুর সাথে মিশে গেলো সামান্য বেদনা। বৃষ্টির জল দ্রুত সরে না যাওয়ায় অল্প সময়ের জন্য পথ কিছুটা পিচ্ছিল হলো, গতি কমলো যানবাহনের।

কিন্তু সেই সামান্য দুর্ভোগও যেন ম্লান হয়ে গেল দীর্ঘ খরতাপের যন্ত্রণার কাছে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ আজ অনুভব করলো প্রকৃতির অপার করুণা। এই বৃষ্টি শুধু তাপমাত্রাই কমায়নি, বরং নগরবাসীর মনেও এক নতুন আশা জাগিয়ে তুলেছে। রুক্ষ দিনের শেষে এই শীতল পরশ যেন এক নতুন শুরুর বার্তা নিয়ে এলো।

RSS
Follow by Email