তৃণমূল বিএনপি: নারায়ণগঞ্জ থেকে যোগ দিচ্ছে আরও অনেকেই
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বহিষ্কার করা হয়েছিল, দল পাশে ছিল না, ছিল না দলীয় প্রতীক। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে নেতাকর্মীরাও পদ হারাচ্ছিল। সর্বশক্তি ব্যবহার করে মাঠে ছিল প্রতিপক্ষ ক্ষমতাশীন দলের প্রার্থী। এত প্রতিকুলতার পরেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রায় লাখো ভোটারের আস্থা ছিল তৈমূর আলমে।
দীর্ঘ দেড় বছর ‘বিএনপি’ থেকে অবহেলিত সেই তৈমূর আলম এখন ‘তৃণমূল বিএনপি’র মহাসচিব হয়েছেন।
ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছে জানিয়ে তৈমূর আলম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘কেউ কেউ চলে আসতে চাইছে আমার সাথে। তৃণমূল বিএনপির প্রথম জাতীয় কাউন্সিলে উপস্থিতও ছিল অনেকে। ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছি।’
দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে তৈমূর আলম খন্দকার ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে ছিলেন। তৎকালীন সময়ে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ ছিল না তাঁর সাথে। তারপরেও নির্বাচনী প্রচারণায় হাজার হাজার মানুষের মিছিল ছিল। দল, দলীয় নেতা, প্রতীক আর ক্ষমতাশীন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে পেয়েছেন ৯২ হাজারের বেশি ভোট।
যদিও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ওই নির্বাচনের ফলকে সুষ্ঠু বলে মনে করেন না তৈমূর আলম খন্দকার। অনেক আওয়ামী লীগও নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ নেতারা সমাবেশে বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চোখেও তৈমূর আলম ব্যাপাক জনপ্রিয়। বিএনপির ভরাডুবির কারণ বলতে গিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই তৈমূর আলমের জনপ্রিয়তা নিয়ে মন্তব্য করে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, এক সময় রিকশা-ভ্যান শ্রমিকদের নেতা হিসেবে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক পরিচিত ছিল আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকারের।
১৯৯৬ সালে বিএনপিতে যোগদানের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদও পেয়েছিলেন তিনি। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি ছিলেন বিএনপির প্রার্থী। শেষ মুহূর্তে দলের সিদ্ধান্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে দেশব্যাপী তখন আলোচনায় এসেছিলেন। তবে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন খন্দকার তৈমুর আলম। তাঁর এই সিদ্ধান্তের কারণে গত বছরের জানুয়ারিতে তৈমুর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এখনও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে তার শক্ত অবস্থান রয়েছে।
দীর্ঘ দেড় বছর পর তৈমুর আলম খন্দকার খালেদা জিয়ার সরকারের দুই বারের মন্ত্রী প্রয়াত নাজমুল হুদার প্রতিষ্ঠিত দল ‘তৃণমূল বিএনপি’তে যোগ দিয়েছেন। দায়িত্ব নিয়েছেন দলটির মহাসচিব হিসেবে। যোগদানের পর থেকে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা তৈমূর আলম খন্দকারকে নিয়ে।
আগামী দিনের পরিকল্পনা জানতে চাইলে তৈমূর আলম খন্দকার লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, এখন নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না, এখন ভাবছি দল গুছানো নিয়ে। অনেক গুলো দলের নেতারা আমাকে সমর্থন করেছে, আমিও তাদের নিয়ে জোট গঠনের কাজ করছি।