সোমবার, জুলাই ২১, ২০২৫
Led01রাজনীতি

তারা স্বপ্ন দেখছে বিএনপিকে হটিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া: গিয়াসউদ্দিন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, দেশে কিছু দল আছে, তারা আগে আওয়ামী লীগের মার খেয়ে বিএনপির কাছে আসতো, বিএনপির ছায়া তলে বসতো। আজ তারা স্বপ্ন দেখছে বিএনপিকে হটিয়ে কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়। স্বপ্ন দেখা ভালো তবে দুঃস্বপ্ন দেখা ভালো না। অনেকেই দুঃস্বপ্ন দেখে ভাবছে তারা কালকেই ক্ষমতা চলে আসবে। কিন্তু যতদিন যায় ততোই তাদের ভোটের সংখ্যায় বলে দেয় নির্বাচনের পর তারা কোন অবস্থানে থাকবে। যেহেতু ভোটে গিয়ে লাভ নেই, তাই তারা চেষ্টা করছে নির্বাচনকে বানচাল করার বা পেছানোর জন্য। কারণ এখন যেমন বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে, প্রশাসনে গিয়েছে যে দামটা পায় সেটা নির্বাচিত সরকার আসার পর থাকবে না। এজন্য তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে বিভিন্ন প্রোপাগেন্ডা ছড়ানো শুরু করেছে। তারা জনগণ থেকে বিএনপিকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। কিন্তু এই কাজটা তো সহজ না, বিএনপির ভিত্তি জনগণের অন্তরাত্মার প্রতিষ্ঠিত। বিএনপি থেকে জনগণকে বিচ্ছিন্ন করা কোন প্রকার ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। তারা যতো ষড়যন্ত্র করবে মানুষ তত বিএনপিকে ভালবাসবে।

রবিবার (২০ জুলাই) বিকেলে তারেক রহমানের কটুক্তি ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সোনারগাঁয়ে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় এই কথা বলেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।

তিনি আরও বলেন, অনেক এখন একটা নতুন কথা শুনছেন পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। এগুলো অনেক ইসলামিক দল এবং ছোটখাটো দলরা বলছে। পি আর পদ্ধতিটি অনেকেই তার জীবনে আগে কখনো শুনিনি । পিআর পদ্ধতি হলো কোন প্রার্থীতে না, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে। এরপর বাংলাদেশের ৩০০ টি আসনে দলের প্রাপ্ত ভোট সমানুপাতিক হার অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়া হবে। ধরে নেন সোনারগাঁয়ে যদি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন হয় তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন কে ভালো বা কে মন্দ। আর আপনি যদি প্রতীকে ভোট দেন তাহলে ধরেন পিরোজপুর, চিটাগাং বা রাজশাহীর কোন এক নেতাকে আপনার এলাকার এমপি বানিয়ে দিবে। কিন্তু দেখা যাবে তার সাথে আপনার পরিচয় নাই সে আপনার সুখে-দুখে থাকতে পারে না। সেই নেতা তো এলাকায় চিনবে না, তাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন কিভাবে হবে। তারা পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় কারণ তারা হিসাব নিকাশ করে দেখেছে, ৩০০টি আসনে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেখানে তারা যে ভোট পাবে তাতে জামানত রক্ষা হবে না। তারা মান ইজ্জত সম্মান নেয়ার কথা বলতে পারবে না। সে অপমান ও লাঞ্ছনা থেকে নিজেদেরকে ঢাকার জন্য তারা এপিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচন চাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রিয়ার পদ্ধতির চলবে না। ভোট দিয়ে অপরিচিত কাউকে এমপি হিসেবে দেখতেও চায়না। একটা গল্পে আছে, মা ছেলেকে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন ছেলে সেটা শুনে কান্নাকাটি করছে। তখন মা বলছে, কান্নাকাটি করিস না তোর জন্য এমন দাম চাবো যা কেউ দিতে পারবে না। তাই দিন শেষ আবার তোকে বাসায় ফিরিয়ে নিয়ে আসবো। ঠিক তেমনি তারা এমন দাবি চাচ্ছে যাতে করে নির্বাচনে আগানো না যায়।

সাবেক এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকার হাসিনা দেশের সবকিছু লুটপাট ও ধ্বংস করে গেলো, সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে নতুন করে আবার করে তুলতে হবে। আর সেই নতুন করে দেশ গড়ে তুলতে হলে সংস্কার করতে হবে। দেশের এই সংস্কারের জন্য ৩১ দফা দিয়েছিলেন আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমান। তার এই ৩১ দফা নিয়ে আমরা বক্তৃতা দিয়েছি, বিবৃতি দিয়েছি, মানুষের ঘরে ঘরে- দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছে। এই ২০২৩ সালে ছাত্র আন্দোলন হয় নাই, সন্ত্রাসীরাও পালিয়ে যায়নি। তাহলে সর্বপ্রথম সংস্কারের দাবি উঠেছিল কারা? সর্বপ্রথম সংস্কারের দাবি উঠেছিলেন বিএনপির তারেক রহমান। এরপর আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জয়লাভ করল। কিন্তু অনেকেই বলে এই অভ্যুত্থানের পেছনে নাকি অনেক ধরনের দাবি ছিল, এগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট কথা। গণঅভ্যুত্থানে শুধু এক দফা দাবি ছিল, স্বৈরাচারের পতন ছাড়া অন্য কোন সংস্কারের দাবি ছিল না। তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করাই ছিল আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং সেটা বাস্তবায়িত করা হয়ে গেছে। আপনার জানেন যখন মানুষ একটি অন্যায় দুর্দশার সময় কাটিয়ে ওঠে তখন তার স্বপ্ন বেড়ে যায়। আমাদেরও এখন স্বপ্ন বেড়ে গেছে। আমরা এখন চাই স্বৈরাচার মুক্ত একটি বাংলাদেশ যে বাংলাদেশের স্বৈরাচার যা করে গেছে তার প্রতিকার ও বিপরীত কাছগুলো আমরা করতে চাই। আমাদের দাবি বিগত সরকার যা অন্যায় অবিচার করছে সেগুলো এই বর্তমান সরকার বিচার করবে। এছাড়াও আমরা চাই, বিগত ৩ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি, সাল ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ২০২৪ সালের নির্বাচনে। জনগণ এখন তার নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চান। কারণ আমরা জানি দেশের যত তাড়াতাড়ি গণতন্ত্র ফিরে আসবে তত তাড়াতাড়ি মানুষের সমস্যার সমাধান হবে। যতদিন পর্যন্ত গণতন্ত্র আসবে না ততদিন পর্যন্ত বিদেশী ব্যবসায়ী বা সরকাররা এই সরকার সাথে কাজ করবে না।

RSS
Follow by Email