ঢাকায় আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশে চমক দেখাবে নারায়ণগঞ্জ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শনিবার (৪ নভেম্বর) মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় মহাসমাবেশ। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে এটিই হতে পারে দলটির সর্বশেষ ও সর্ব বৃহত্তর সমাবেশ। আর তাই, বিষয়টি মাথায় রেখে নারায়ণগঞ্জ থেকে সর্বচ্চ নেতাকর্মী নিয়ে সমাবেশটিতে যোগদান করতে চায় জেলার আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার দুপুর আড়াইটা বাজে মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন শেষে মতিঝিল শাপলা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে যোগ দিবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় সুত্র মতে, ঢাকার ওই সমাবেশকে সফল করতে ঢাকার আশেপাশের কয়েকটি জেলার মধ্যে নারায়ণগঞ্জকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। তাদের প্রত্যাশা, নারায়ণগঞ্জ থেকে সবচেয়ে বেশি নেতাকর্মী ওই সমাবেশে যোগদান করবে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আস্থা বজায় রাখতে নারায়ণগঞ্জের ৫টি উপজেলায় নেতৃবৃন্দের চলছে ব্যাপক প্রস্ততি। বিভিন্ন উপায়ে কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহিত করে সমাবেশে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করছে তারা। যার অংশ হিসেবে গত, ১৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও দলীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে এক বিশেষ বর্ধিত সভা করেছেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।
বিশেষ ওই বর্ধিত সভায় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর আস্থা রেখে মির্জা আজম বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ মহানগর ঢাকার সবচেয়ে আছে। আমরা আশা করি নারায়ণগঞ্জ থেকে আমাদের সমাবেশে সবচেয়ে বড় সাপোর্ট যাবে।’
জানা গেছে, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও সোনারগাঁ অঞ্চলের নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নেতৃত্বে ওই সমাবেশে যোগদান করবে। আর এজন্য চারটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছেন শামীম ওসমান। যার ব্যয় তিনি নিজেই বহন করবেন। ট্রেনগুলো পর্যায়ক্রমে সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাবে। এবং কমলাপুর সবাইকে নামিয়ে দিবেন। আর তাই, দলীয় নেতাকর্মীদের যথাসময়ে নারায়ণগঞ্জ, চাষাড়া, ফতুল্লা, পাগলা রেল স্টেশনে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঢাকায় যাওয়ার জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে, সমাবেশটি সফল করতে গত ১ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে অবস্থিত নম পার্কে ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও সোনারগাঁ অঞ্চলের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে এক প্রস্ততি সভা করেছেন শামীম ওসমান। যাতে উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ, সাধারণ সম্পাদক কাজিমউদ্দিন প্রধান, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল ইসলাম ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়কি আব্দুল কাদির, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভুইয়া সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু, সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী সগীর আহাম্মেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মো. জুয়েল হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ।
সভায় শামীম ওসমান বলেন, ‘আগামী ৪ নভেম্বর সম্ভবত জাতীয় নির্বাচনের আগে আমাদের শেষ বৃহত্তর জনসমাবেশ হবে। প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলছিলাম, আমরা যারা নারায়ণগইঞ্জা আছি; আমাদের একটা সুযোগ দেন। তিনি হেসে বলেছেন, আমি জানি তোমরা পারবা। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবো। ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনারগাঁ ও বন্দর; এই তিন উপজেলার জন্য আমরা ট্রেন ভাড়া করেছি। আমরা এই জনসভা স্বতস্ফুর্ত ভাবে করবো। সেইদিন আমরা আমাদের সর্বচ্চ জমায়েতটা সেদিন করতে চাই। এই সমাবেশ দেখার পরে বিদেশিরা হয়তো কথা বলা বন্ধ করে দিবে।
তিনি আরও বলেন, এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে আমরা প্রমান করতে চাই, নারায়ণগঞ্জে আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা যদি সবাই একসাথে যাই, তাহলে লক্ষাধীক লোক আমরা জমায়েত করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। দুপুর দুইটার মধ্যে যাতে আমরা সমাবেশস্থলে পৌছাতে পারি সেরকম ভাবে প্রস্তুতি নিবো।
সমাবেশে যোগদানের বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন বলেন, ‘সকাল ১১টা থেকে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকা যাওয়া শুরু করবে। ঠিক কোন স্থানে গিয়ে আমরা জড়ো হবো সেটা এখনো নির্দিষ্ট করা হয়নি। সেটা আজ রাতের মধ্যে দায়িত্বপ্রপ্তদের জানিয়ে দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জ থেকে লক্ষাধীক নেতাকর্মীর প্রত্যাশা করছে এবং আমি আশা করি, আমরা সারা নারায়ণগঞ্জ থেকে লক্ষাধীক নেতাকর্মী নিয়ে সমাবেশে যোগদান করবো।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা বলেন, মহাসমাবেশে যোগদান করতে আমাদের সব রকমের প্রস্ততি সম্পুর্ণ হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জ থেকে গিয়ে কমলাপুর স্টেশনের সামনে জমায়েত হবে। সেখান থেকে আমরা সবাই জননেতা শামীম ওসমানের নেতৃত্বে সমাবেশে যোগ দিবো।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম বলেন, সমাবেশে যাওয়ার জন্য আড়াইশ বাস এবং ২টি ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও ৪টি ট্রেনে যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু ২টি বুকিং করতে পেরেছি। আশা করছি প্রায় ৬০-৭০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে আমরা সমাবেশে যোগদান করবো।