ড. ইউনুসকে সম্মান দিয়েছে খালেদা জিয়া, তার বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে: গিয়াসউদ্দিন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন,আমরা যখন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি তখন দেখেছি সে কত হিংস্র। মিথ্যা মামলা দিয়ে কীভাবে এই বৃদ্ধ মানুষটিকে নয় তলা ভবনে ওঠানামা করিয়েছেন। খালেদা জিয়া ড. ইউনুসকে কত সম্মান দিয়েছে আপনারা জানেন। তার বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রতিবাদ তিনি করেছেন। আমরাও এর নিন্দা ও প্রতিবাদ করেছি। আজকে তিনি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে। আমরা তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। আপনার কাছে যারা প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিল তারা বেশি মানুষ ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আপনাকে এত সম্মান করে যে আপনাকে কেউ বাধা দেয়নি, সকলে খুশি হয়েছে। শুধু অখুশি হয়েছে শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ অন্যকে সম্মান দিতে জানে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ফতুল্লার ভূঁইগড় এলাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত ৩১ বাস্তবায়ন ও ফিলিস্তিনিদের উপর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করতে ২০২৩ সালে তারেক রহমান রাষ্ট্র মেরামতে প্রথমে ২৩ দফা কর্মসূচি দেন। পাঁচ আগষ্ট স্বৈরাচারের পতনের পর একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। এসময় সকলে সংস্কারের দাবী তুলেছে। আপনারা দেখবেন এই ৩১ দফার মধ্যে রাষ্ট্র মেরামতের সমস্ত কর্মসূচি রয়েছে। তারেক রহমান যা আগে ভাবেন অন্যরা তা পরে দাবী করেন। বিএনপির জনপ্রিয়তা সবচেয়ে উপরে। বিএনপি দেশের মানুষের কল্যানের কথা ভাবে। বিএনপি ভাবে কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, যারা আপনার ক্যাবিনেটে তাদের অনেক লোভ থাকতে পারে। তারা আপনাকে ব্যাবহার করে ক্ষমতায় থাকতে চাইতেই পারে। ক্ষমতার লোভ কেমন আপনি জানেন। তাদের কেউ কেউ হয়ত ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে চাইতে পারে। তবে আপনি সেই লোভে পা দিবেন না সেই দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের আছে। আপনি নির্বাচনের রোডম্যাপ দিবেন সেই অনুযায়ী আমরা নির্বাচনে নামবো। আপনাকে অনেকে অনেক লোভ দেখাতে পারে। তবে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আপনি সে ফাঁদে পা দিবেন না। আপনি অনেক সম্মান পেয়েছেন, সারা বিশ্বে আপনি সমাদৃত। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আপনি কী করবেন সেটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
তিনি আরও বলেন, হাসিনা মানুষের উপর কী নির্মম অত্যাচার করেছে আপনারা দেখেছেন। শিশুসহ হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে সে। হাজারও মানুষকে পঙ্গু করে দিয়েছে সে। এই ইতিহাস পৃথিবীর সমস্ত স্বৈরশাসকের ইতিহাসকে ছাড়িয়ে গেছে। জনগণ আমাদের পাশে থেকে সংগ্রাম করেছে। মানুষ যখন স্বৈরাচারের পতন নিয়ে হতাশায় ছিল সেসময় ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসকের পরাজয় ঘটেছে। স্বৈরাচারকে ধরার জন্য সারা দেশের মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিল। নিজেকে বাঁচাতে সে দেশ ছেড়ে পদত্যাগ করে পালিয়েছে। দেশের জনগণ তাকে ধরতে পারলে কী হত আমরা সবাই জানি। জনগণ স্বৈরশাসকের দ্বারা শুধু নিষ্পেষিতই হয়নি। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। উন্নয়নের নামে বিদেশ থেকে ঋণ এনে টাকা আত্মসাৎ করেছে। জনগণের সম্পদ বন্ধক রেখে আনা টাকা তারা লুট করে পালিয়েছে। এখন তারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
গিয়াস বলেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আন্দোলন করেছে। অনেক পিতামাতা সন্তান হারা হয়েছে। তবুও বিএনপি পিছপা হয়নি। আমরা একশো দেড়শ মামলার আসামি হয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান ভূঁয়া মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে অবস্থান করেছেন। তার দিকনির্দেশনায় ও নেতৃত্বেই আমরা এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে কীভাবে বাংলাদেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। পাঁচ আগষ্টের পর দেশের জনগণের মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।