ড্রেন সংস্কারের দুই মাসের কাজ ছয় মাসেও শেষ হচ্ছে না: সাবেক কাউন্সিলর খোরশেদ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: “বাসযোগ্য নগরী চাই। ১৫ দিনের মধ্যে দাবি না মানলে আমরণ অনশন করব।”— জনভোগান্তিবিহীন উন্নয়ন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও কর্মসূচিতে, এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন ‘ওয়ার্কিং ফর বেটার নারায়ণগঞ্জ’ সংগঠনের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।
নগরভবন ঘেরাও করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের পর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এ সময় বক্তৃতায় খোরশেদ সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধীরগতির কড়া সমালোচনা করে বলেন, আমরা জন ভোগান্তিহীন উন্নয়ন চাই। আমরা দেখছি ঠিকাদারদের ধীরগতির কারণে ড্রেন সংস্কারের দুই মাসের কাজ ছয় মাসেও শেষ হচ্ছে না। ফুটপাত দিয়ে হাঁটা যাচ্ছে না। উন্নয়নকালে ভোগান্তি হয়, তবে এটা মাসের পর মাস চলতে পারে না।”
যানজট নিরসনে নারায়ণগঞ্জকে আধুনিক করার আহ্বান জানিয়ে খোরশেদ বলেন, আমরা চাই নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেলের ব্যবস্থা করা হোক। নারায়ণগঞ্জ এক রাস্তার শহর। সড়ক বর্ধিত করতে হলে ভার্টিকালি করতে হবে, যা মেট্রোরেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড রেলের মাধ্যমে করতে হবে।”
তিনি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আধুনিক গবেষণা ও পদ্ধতি প্রবর্তনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ডেঙ্গুর পাশাপাশি অন্য কোনো ভাইরাস কীনা— এটাও গবেষণা করে দেখা দরকার। কারণ মশার উপস্থিতি কম হলেও ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া বেশি হচ্ছে।”
বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিয়ে নিজের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে খোরশেদ প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, আমরা দুই বছর যাবৎ টাকা দিয়ে ময়লা পানি খাচ্ছি। এই পানি দিয়ে হাত পাও ধোয়া যায় না। তারা যেহেতু বিশুদ্ধ পানি দিতে পারছে না, সেহেতু পানির বিল বন্ধ রাখা হোক। দুই দফায় পানির বিল দিয়ে কেন আমরা ময়লা পানি খাবো? যতদিন তারা বিশুদ্ধ পানি না দিতে পারবে ততদিন এই পানির বিল বন্ধ রাখা হোক।”
জলাবদ্ধতা স্থায়ী হওয়ার কারণে শিক্ষা ও সামাজিক জীবনে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার মায়ের নামে স্কুল বেগম রোকেয়া স্কুলে শিক্ষার্থী ১৪শ’, কিন্তু উপস্থিতি ৪০০-৫০০। আগে পানি বিসিক খাল ও কল্যানী খাল দিয়ে বের হতো, এখন সেই খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। এই পানি অবিলম্বে শীতলক্ষ্যায় ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। আমি গুদারাঘাট এলাকায় মানুষ মারা গেলে যেতে পারি না, দাওয়াতে যেতে পারি না। মানুষ বিয়েসাদী করতেও অন্য এলাকায় যায়।”
বক্তব্যের শেষে সংগঠনের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ সিটি কর্পোরেশনকে হুঁশিয়ার করে বলেন, আমরা পনেরো দিনের সময় দিচ্ছি। এরপরে প্রয়োজনে আমরা আমরণ অনশন করব।”
মানববন্ধন শেষে খোরশেদের নেতৃত্বে সংগঠনের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আবু নছর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর কাছে পাঁচ দফা দাবির স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এ সময় প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।