রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
Led04জেলাজুড়েফতুল্লা

ড্রামের তেল খেয়ে এদেশে মানুষ হার্টের রোগে ভুগছে: সফিকুজ্জামান

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ভোজ্যতেল ক্রয়-বিক্রয়ে অনিরাপদ ড্রাম ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার লক্ষ্যে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টায় নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সভাকক্ষে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান। নারায়াণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর বিভাগীয় প্রধান (রোগতত্ত্ব ও গবেষণা) প্রফেসর সোহেল রেজা চৌধুরী।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) এসএম জহিরুল ইসলাম, চেম্বার অব কমার্স এর পরিচালক সোহেল আক্তার, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অফিসার রীতা রানী পাল, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা কার্যালয়ের ডেপুটি ডাইরেক্টর আতিয়া রহমান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জামান আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান বলেন, পাম তেল এবং সয়াবিন তেল দামের ভিন্নতা হচ্ছে ২০ টাকা। শীতকালে পাম্প তেল জমে যায়। গরম সময়ে এখন কিন্তু অলরেডি টেম্পারেচার বেড়ে গেছে। এখন পাম এবং সয়াবিন তেল আপনারা আইডেন্টিফাই করতে পারবেন না। তারা এখন পাম তেলকে সয়াবিন তেল বলে ২০ টাকা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে।

তিনি বলেন, মানুষ প্রশ্ন করে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের মতো হয়েছে কিনা। আমি বলি, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের মতো হয়েছে। আমার দেশের মেট্রোরেল সিঙ্গাপুরের চেয়ে বেটার। আমরা এখন সাবমেরিন ক্যাবলের যুগে ঢুকেছি, স্মার্ট বাংলাদেশের পথে হাঁটছি৷ আমার এখন কর্মক্ষম মানুষ দরকার। কিন্তু ড্রামের তেল খেয়ে কি সেই কর্মক্ষম মানুষ তৈরি হবে। প্রতিদিন ঢাকা সিটিতেই ৫-১০ হাজার রোগী কেবল হার্টের চিকিৎসা করতে আসে। আমার ধারণা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি হয় এদেশে। অল্প মূল্যে বিক্রির অজুহাত দিয়ে ড্রামের তেলের ব্যবসা করছেন। অথচ ড্রামের তেল খেয়ে জনসাধারণ দুরারোগ্য বিভিন্ন ব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। আগে দেখতাম, অবসরের পর মানুষের হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে, কিন্তু এখন ৩০ বছরের ছেলেদেরও অহরহ এটি হতে দেখা যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের খাদ্য বিভাগ পাঁচ-ছয়টি কর্পোরেট গ্রুপের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যে কোন খাদ্য সামগ্রীর সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব মজুতদারদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে ভোক্তাদের মধ্যেও সিন্ডিকেট গড়ে তোলা দরকার। ক্রেতারা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পরিমাণ কোনো ভোজ্য পণ্য ক্রয় না করলে অসাধু ব্যবসায়ীরা সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার আর কোনো সুযোগ পাবেনা। এক্ষেত্রে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিষয়ে তথ্য দিলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এমন কোনো পণ্য নেই যা এদেশে নকল হচ্ছে না। সত্যিকার অর্থে যদি কেউ সৎভাবে ব্যবসা করতে চান, তিনি এদেশে টিকে থাকতে পারবেন না। আলোচিত ব্যবসায়ী খলিল কম দামে মাংশ বিক্রি করায় হত্যার হুমকি পান। হার্টের রিং, ডায়বেটিকের স্ট্রিক পর্যন্ত নকল হচ্ছে। কী ভয়াবহ ব্যাপার। আমরা নারায়ণগঞ্জে একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিতে অভিযান চালিয়ে দেখেছি সেখানকার সকল পন্য নকল।

RSS
Follow by Email