ডেমরায় বাসে আগুন, যুবদল নেতা শাহেদসহ ৩জনের ২দিনের রিমান্ড
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: রাজধানীর ডেমরায় অছিম পরিবহনের বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারার ঘটনায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদসহ ৩জনকে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
এই ঘটনায় তাদের ১০দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হলে, ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
গ্রেপ্তারকৃত অন্য দুইজন হলেন, হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম মনির (৩৭)ও বিএনপি কর্মী এবং মনির মুন্সির ব্যক্তিগত গাড়িচালক মাহাবুবুর রহমান সোহাগ (৩৩)।
এর আগে, গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে শহরের খানপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় শাহেদ আহামেদকে। ২৭ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত শাহেদ আহমেদ নিখোঁজ রয়েছে বলে জানায় পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বানচালের উদ্দেশ্যে গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপি রাজধানীর পল্টন এলাকায় নারকীয় তাণ্ডব পরিচালনা করা হয়। প্রধান বিচারপতির বাস ভবনে হামলা, পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করার মত জঘন্য কাজসহ অসংখ্য গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় বিএনপির নেতা কর্মীরা। তারই ধারাবাহিকতায় ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে ডেমরা থানাধীন দেইলা বাস স্ট্যান্ডে রাখা অছিম পরিবহনের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে ওই বাসে ঘুমিয়ে থাকা হেলপার মো. নাইম (২২) ঘটনাস্থলে আগুনে পুড়ে মারা যায় এবং অপর আরেকজন মো. রবিউল(২৫) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয়। পরে ২৯ অক্টোবর ডেমরা থানায় একটি মামলা করা হয়। এরপর কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর কাছে মামলার তদন্তভার দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ২৮ অক্টোবরের ধারাবাহিকতা এবং তাদের এই নাশকতা অব্যাহত রাখার জন্য মনির মুন্সি তার নেতাদের কাছ থেকে নির্দেশনা পায়। নির্দেশনার মূল বিষয়বস্তু ছিল নাশকতার মাত্রা আরও বাড়ানো এবং এমন কোন ঘটনা ঘটানো যাতে করে জনমনে ব্যাপক আতংকের সৃষ্টি হয়। তারই অংশ হিসেবে সে বেশ কয়েকজনকে অগ্নিসংযোগের জন্য নিয়োগ দেয় এবং সে নিজে বড় একটি ঘটনা ঘটানোর জন্য তার অপর সহযোগী নারায়ণগঞ্জ যুবদলের সদস্য সচিব এবং তার বন্ধু সাহেদ আহমেদকে ডেকে নেয়।
পরে তারা দুজন মিলে একটি পরিকল্পনা করে এমন একটি ঘটনা ঘটাবে যাতে জনমনে ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে ডেমরা এলাকার দেইলা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় রাত ২ টার পর বেশ কয়েকবার গাড়ি দিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে কোন জায়গাটা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতামুক্ত। অবশেষে তারা কাঙ্ক্ষিত টার্গেট ফিক্স করে বড়ভাঙ্গা মার্কেটে চলে যায়। সেখান থেকে তারা ২ লিটারের পানির বোতলে পেট্রোল সংগ্রহ করে। পরে আনুমানিক তিনটার দিকে অছিম পরিবহনের ড্রাইভার সিটের পাশে থাকা জানালা দিয়ে ভেতরে পেট্রোল ঢেলে দেয় মনির মুন্সি। এরপর দিয়াশলাই আগুন ধরিয়ে পেট্রোলের উপর ছুড়ে মারে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।