রবিবার, নভেম্বর ৯, ২০২৫
Led02জেলাজুড়েস্বাস্থ্য

ডিসির হস্তক্ষেপে মা ও শিশু কেন্দ্রে সিজারিয়ান সেবা চালু

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে অকেজো হয়ে পড়া Monopolar Diathermy মেশিন পরিবর্তনের মাধ্যমে আবারও সিজারিয়ান সেকশন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের দ্রুত হস্তক্ষেপে জেলা পরিষদের অর্থায়নে নতুন মেশিনটি সরবরাহ করা হয়। রবিবার (৯ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে মেশিনটি কেন্দ্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই কেন্দ্রে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির পাশাপাশি প্রতি মাসে প্রায় ৪০০ গর্ভবতী নারীকে সেবা, ৩০টি স্বাভাবিক প্রসব এবং ৪ থেকে ৫টি সিজারিয়ান সেকশন পরিচালিত হয়। তবে গত ১৮ অক্টোবর থেকে Monopolar Diathermy মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ায় সিজারিয়ান সেকশন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।

জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. আফসানা জাহান ১৮ অক্টোবর পরিবার পরিকল্পনার উপপরিচালক শহিদুল ইসলামকে লিখিতভাবে দ্রুত নতুন মেশিন সরবরাহের অনুরোধ জানান।

পরবর্তী সময়ে, ৫ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম বিষয়টি উত্থাপন করেন। সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা তাৎক্ষণিকভাবে জেলা পরিষদ থেকে দ্রুততম সময়ে একটি ডায়াথার্মি মেশিন উপহার হিসেবে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

ডা. আফসানা জাহান জেলা প্রশাসকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমরা হতাশ ছিলাম, কারণ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের বাজেটে নতুন মেশিন কেনার সুযোগ ছিল না। কিন্তু ডিসি স্যার এত দ্রুত সাড়া দেবেন, তা আমরা ভাবিনি। তিনি দ্রুত সব পদক্ষেপ নিয়ে আজ আমাদের হাতে মেশিনটি তুলে দিয়েছেন।

তিনি জানান, মেশিন বিকল থাকায় এতদিন সিজারিয়ান সেবার প্রয়োজনীয় মায়েদের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করতে হচ্ছিল।

উপপরিচালক শহিদুল ইসলামও জেলা প্রশাসকের প্রশংসা করে বলেন, বাজেট স্বল্পতার কারণে মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেও সাড়া মেলেনি। তিনি জানান, “ডিসি স্যার স্বাস্থ্য খাতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখেন। এর আগেও গর্ভবতী মায়েদের জন্য জরুরি ১ লাখ আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট সংকটের সময় তিনি সহায়তা করেছিলেন। আজ আবার মেশিনটি প্রদান করলেন।

মেশিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, মায়ের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে সন্তানের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে না। তাই মাতৃস্বাস্থ্যের প্রতি সবসময় বিশেষ গুরুত্ব দিই; ভবিষ্যতেও দেব।

স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি অনুরোধ জানান, “মায়েদের অনেকেই অসহায় ও অশিক্ষিত। তাদের প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়ে কাজ করবেন, যেন তাদের স্বাস্থ্যসেবা কোনোভাবেই ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে।” তিনি জানান, কেন্দ্রের চাহিদা অনুযায়ী গ্লুকোমিটার ও রক্তচাপ মেশিনও দ্রুত সরবরাহ করা হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হোসাইন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ।

RSS
Follow by Email