ডনচেম্বারের মেডিস্টারে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যু, ডাক্তার পালাতক
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরের মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসা ল্যাবে ভুল চিকিৎসায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে ডনচেম্বার এলাকায় অবস্থিত ওই হাসপাতালে নারীর মৃত্যু হয়।
নিহতের নাম- মশিরন আক্তার মরিয়ম (৪৮) জামালপুরের আমির বেপারীর মেয়ে। তিনি ফতুল্লায় জেলা পরিষদ কার্যালয়ের পাশ্ববর্তী সুগন্ধা মসজিদ এলাকায় ছেলের সঙ্গে থাকতেন।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে দ্রুত ছুটে যান সদর থানার পুলিশ। মধ্যরাত থেকে বেসরকারি ওই হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে বাকবিতন্ডা চলে। পরে ভোরে মৃতদেহ নিয়ে চলে যায় মরিয়মের স্বজনরা।
রোগীর স্বজনরা জানান, কিছুদিন আগে মরিয়ম নামের নারীর পায়ে ইদুর কামড় দিলে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে সংক্রমন থেকে তার পায়ে ঘাঁ হয়ে গেলে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালের আবাসিক সার্জন মাহামুদুল হাসান মিঠুর পরার্মশ নেন। বুধবার রাতে মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসা ল্যাবে ওই নারীর পায়ে অপারেশন (অস্ত্রপ্রচার) করা হয়। অপারেশন শেষে পরে তার অবস্থা আশংকাজনক জানিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিতে অ্যাম্বলেন্সে তুলে রাখে। পরে রোগীর স্বজনরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানায় অনেকে আগেই মারা গেছে মরিয়ম।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, অপারেশনের পর চিকিৎসক না বুঝেই ইনজেকশন দেয়ায় রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়ে উঠে। তার ভুল চিকিৎসার কারণেই মৃত্যু হয় মরিয়মের। পরে ঘটনা ধামা চাপা দিতে লাশ অ্যাম্বলেন্সে তুলে রাখে মেডিস্টার নামের ওই ক্লিনিকের লোকজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ম্যানেজার রাফেজুল ইসলাম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানায়, ৯অক্টোবর রাতে পা কেটে যাওয়ায় চিকিৎসা নিতে আসে ওই নারী। পরে ছোট একটি সার্জারি করে তাকে কেবিনে রাখা হয়। ভুল চিকিৎসার কিছু হয়নি। ওই নারীর আগে থেকে অনেক সমস্যা ছিলো, যেমন হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যা ও উচ্চ ডায়াবেটিস। সার্জারির পর থেকেই ওই নারী অনেক ভয় পাচ্ছিলো, বার বার জিজ্ঞেস করছিলো তার এই বেন্ডেজ কয়দিন রাখা হবে। আমরা তাকে বার বার বলছিলাম ভয়ের কিছু নেই।
তিনি বলেন, পরে, গতকাল (১০ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে তার হটাৎ জিহবা বের হয়ে যাচ্ছিলো, মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিলো। এমন অবস্থায় আমাদের যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছে তিনি তাকে অক্সিজেন দিয়ে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যেতে বলে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়ার পর রাস্তায় সম্ভবত ওই নারী মারা যায় পরে আধাঘন্টা পর তাকে নিয়ে আবারো হাসপাতালে ফিরে আসে পরিবারের সদস্যরা। এখন মৃত্যুর প্রকৃত কারণ তো ময়নাতদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে।
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, গতকাল সেই হাসপাতালের সামনে ভিড় দেখে আমাদের পেট্রোইলং টিম সেখানে গিয়েছিলো দেখতে, যাতে আইনশৃঙ্খলার কোন অবনতি না হয়। মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কোন অভিযোগ দেননি। অভিযোগ করলে পুলিশ আইনী ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক ওই চিকিৎসক।