ঝুট সমস্যা সমাধানে যা বললেন শ্রম সচিব, সন্ত্রাসীদের তালিকা চাইলেন বিএনপি নেতা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: গত ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেরও বিভিন্ন সেক্টর দখলে নেওয়া শুরু করে বেশি কিছু পাতি নেতারা। এ নিয়ে ঘটেছে সংঘর্ষের মতো ঘটনাও। যা প্রায় প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জের গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। বিশেষ করে কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ে ওইসব পাতি নেতাদের উৎসাহ সবচেয়ে বেশি। যার কারণে অনেকটা জিম্মি অবস্থানে থাকতে হয় কারখানা মালিকদেরও।
এমন বিভিন্ন সমস্যা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ে নবনিযুক্ত সচিব এইচ এম সফিকুজ্জামানকে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক। একই বিষয় অবহিত করানো হয় বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামানকেও।
বিকেএমইএ আয়োজিত ওই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, শিল্প পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি মো. সিবগাত উল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশ-৪ এর অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, নারায়ণগঞ্জ জেলার সেনাবাহীনির কমান্ডিং অফিসার লেফটেনেল কর্নেল আতিক ও বিজিএমইএ’র সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি ও মডেল গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাসুদুজ্জামান মাসুদ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শ্রম সচিব বলেন, গত ১৫ বছর বিভিন্ন জায়গায় এগুলো (চাঁদাবাজ-ঝুট সন্ত্রাস) হয়েছে বলেই আজ এই পরিবর্তন। গত মাসের ৬তারিখেই আমি দেখেছি, সবকিছু আবার দখল হয়ে গেছে। চাঁদাবাজি কমে নাই। প্রতিটা জায়গায় এমন কিছু গ্রুপ কাজ করে। আমার কাছে অনেক গুলো তালিকা আছে, আমরা কিন্তু লিগ্যাল একশনে যাবো। এ সর্ম্পকিত নির্দেশ পুলিশকে দেওয়া হয়েছে, সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের (সেনাবাহিনী) ম্যাজিস্ট্রিয়াল ক্ষমতাটা দেওয়া হয়েছে। আপনারা যেই একশনের কথা বলবেন সেটা হবে। কিন্তু তাদের মুক্তির দাবিতে আবার রাস্তা বন্ধ করা যাবে না। আপনারা সাংবাদিকরা আবার ওদের (চাঁদাবাজ-ঝুট সন্ত্রাস) পক্ষে দাঁড়াবেন না।
সচিব আরও বলেন, যারা সন্ত্রাসী তাদের কোন দল নাই। তারা শুধুই অপরাধী। অপরাধের বিচাই আইন অনুযায়ী হবে, যেই অপরাধ করুক। ঝুটের বিষয়ে আমি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মাননীয় উপদেষ্টার সাথে কথা বলেছি। বিকেএমইএ-বিজিএমইএ’র সাথে কথা বলছি। আমরা এটিকে একটি সিস্টেমের মধ্যে আনতে চাচ্ছি। যে, ঝুটের একটা নির্দিষ্ট দাম হবে এবং এটাকে কিভাবে সেন্ট্রালি ম্যানেজ করা যায়। সমস্যাটা হচ্ছে যারা কিনে নেয় তারা কিন্তু আসল ব্যবসায়ী না। যারা ঝুটের আসল ব্যবসায়ী তারা কিন্তু সামনেও আসতে পারে না। কারখানার ঝুটের টাকা ম্রমিকদের ওয়েল ফেয়ারের জন্য কাজ করতে পারে। এমন একটা মডেল আমরা তৈরি করছি। এটি হলে, জোর করে ট্রাক ছিনতাই, আবার এগুরো নিয়ে অনেক হত্যাও হয়েছে। তো এই কাজটি করতে পারলে এগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের নেতা দেশ নায়ক তারেক রহমান বলেছেন যে, কোন রকমের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চলবে না; দল বরদাস্ত করবে না। ইতিমধ্যে এরকম বিষয়ে কয়েকজনকে দল থেকে বহিস্কারও করা হয়েছে। আমি নিজে এই ব্যবসার সাথে ৩৫বছর যাবৎ জড়িত। এই ঝুট দিয়ে যদি আমার ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যায়, সেটা তো হতে পারে না। আমি বিকেএমইএ ও বিজিএমইএ কে বলবো যদি আমাদের দলের নাম ব্যবহার করে কেউ এরকম কিছু করে, আপনারা তালিকা দিবেন। দল তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবে, এই বিষয়ে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। যারা পালিয়ে গেছে আমরাও যদি তাদের মতো কাজ করি, তাহলে এই পরিবর্তনের তো কোন দরকার ছিলো না। এই পরিবর্তনের ধারা দেশের মানুষকে শান্তি দেওয়ার জন্য আমি কাজে লাগাতে চাই। অরাজকতা আমাদের দল বরদাস্ত করবে না।