জেলা ছাত্র ফেডারেশনের আয়োজিত ‘বই পড়া প্রতিযোগিতা’র উদ্বোধন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জেলা ছাত্র ফেডারেশনের উদ্যোগে ‘বই পড়া প্রতিযোগিতা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৮ মে) প্রতিযোগীতার উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী কাশেম জামাল।
অনুষ্ঠানে জেলা কমিটির সভাপতি ফারহানা মানিক মুনার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী জননেতা তরিকুল সুজন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া সদস্যদের উদ্দেশ্যে কাশেম জামাল বলেন, বই শুধু জ্ঞানের উৎস নয়, এটি মননের বিকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতার পথও দেখায়। আজকের এই প্রযুক্তিনির্ভর সময়ে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি হয়ে উঠেছে। বই আমাদের অতীত থেকে ভবিষ্যত স্বপ্নের যাত্রায় বর্তমানকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে সাহায্য করে। আমি বিশ্বাস করি, যারা বই পড়ে, তারা কখনোই চিন্তা ও বোধে দাস হয়ে থাকে না। একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তার শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিকদের উপর। বই পড়া সেই শিক্ষার প্রথম ধাপ, যা একজন মানুষকে চিন্তাশীল, মানবিক ও দায়িত্বশীল করে তোলে। বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তোলা সময়ের দাবি। আমি বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই, কারণ তারা একটি মৌলিক জাগরণের কাজ শুরু করেছে—জ্ঞান অর্জনের অভ্যাস তৈরি। বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুললেই আমরা গড়তে পারব একটি আলোকিত সমাজ।
তরিকুল সুজন বলেন, বর্তমান সমাজে আমরা দেখছি, মানুষ দিন দিন পেশিশক্তি নির্ভর হয়ে উঠছে। কিন্তু ইতিহাস আমাদের শেখায়—শুধু পেশিশক্তি দিয়ে সমাজ, প্রকৃতি কিংবা সভ্যতা বদলানো যায় না। এসব পরিবর্তনের জন্য দরকার মেধা, মনন এবং চিন্তাশক্তি, যা গড়ে ওঠে বই পড়ার মাধ্যমে। একটি বই একজন মানুষকে কেবল জ্ঞান দেয় না, তাকে ভাবতে শেখায়, বিশ্লেষণ করতে শেখায়, এবং সঠিক পথ বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দেয়। আমি বিশ্বাস করি, বইয়ের অভ্যাস একজন মানুষকে শুধু শিক্ষিত নয়, বরং সামাজিক পরিবর্তনের কর্মী হিসেবে গড়ে তোলে। এই আয়োজন সেই বোধ ও বিকাশের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ফারহানা মানিক মুনা বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সবসময় একটি শিক্ষিত, মানবিক ও মর্যাদাশীল সমাজ নির্মাণে বিশ্বাস করে। আমরা মনে করি, জ্ঞানচর্চা, বই পড়া, এবং মুক্তচিন্তার চর্চা ছাড়া সত্যিকার অর্থে কোনও গণতান্ত্রিক ও ন্যায্য সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। আজকের এই বই পড়া প্রতিযোগিতা আমাদের সেই লক্ষ্যেরই অংশ। আজকের শিক্ষার্থী শুধু একজন পরীক্ষার্থী নয়—তারা আগামীর সমাজ নির্মাতা, নেতৃত্বের বাহক। তাই তাদের মধ্যে প্রশ্ন করার ক্ষমতা, বিশ্লেষণী দৃষ্টিভঙ্গি এবং ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য করার নৈতিক অবস্থান তৈরি করতে হবে। এই গুণগুলো অর্জিত হয় বইয়ের মাধ্যমে, চিন্তার অনুশীলনের মাধ্যমে। যখন সমাজে মেধার চর্চার পরিবর্তে শুধু প্রতিযোগিতা, পেশিশক্তি বা সাফল্যের মোহ বড় হয়ে ওঠে, তখন প্রয়োজন এমন একটি উদ্যোগ—যা বইয়ের পাতায় ফিরে যেতে শেখায়, মননচর্চায় আগ্রহী করে তোলে। আমরা বিশ্বাস করি ছাত্র ফেডারেশন এর আজকের আয়জনের ধারবাহিকতায় আমরা একটি মানবিক,আত্মমর্যাদার বাংলাদেশের দিকে আগাবো।