শুক্রবার, জুলাই ১৮, ২০২৫
Led03রাজনীতি

জুলাই সমাবেশ ও শহীদি মার্চ’র বিস্তারিত তুলে ধরলো গণসংহতি

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: উত্তাল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে ‘জুলাই সমাবেশ ও শহীদি মার্চ’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। এই গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনটি আগামী ১৮ জুলাই, শুক্রবার, বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা ও মহানগর নেতারা এই কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা জানান, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-তরুণদের নেতৃত্বে সারাদেশে যে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল, নারায়ণগঞ্জ ছিল তার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। বিশেষ করে ১৮ জুলাই চাষাঢ়ায় পুলিশের হামলার পর শহরজুড়ে গড়ে উঠেছিল এক অভূতপূর্ব প্রতিরোধ আন্দোলন, যেখানে সাধারণ মানুষ, শ্রমিক, তরুণ, নারী ও শিশুরাও শামিল হয়েছিল।

গণসংহতির তথ্য অনুযায়ী, ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) পর্যন্ত চলা এই আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে অন্তত ৫৬ জন শহীদ হন, যাদের মধ্যে শিশু রিয়া গোপ, আমানত, সজন-এর মতো নিষ্পাপ প্রাণও ছিল। এই রক্তক্ষয়ী অধ্যায়ের এক বছর পূর্তিতে শহীদদের স্মরণ, গণহত্যার বিচার, আহতদের পুনর্বাসন এবং একটি ‘রাষ্ট্র সংস্কারে’র দাবিতেই এই কর্মসূচি আহ্বান করা হয়েছে।

নেতারা দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “৭১ সালের মতোই ২০২৪-এর জুলাই ছিল নতুন বাংলাদেশের ডাক। শহীদদের রক্তের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই পুরনো ফ্যাসিবাদ-সমর্থক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গঠনের সময় এখনই।”

জোনায়েদ সাকি’র নেতৃত্বে আগামীর পথচলা

আগামীকালকের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তার নেতৃত্বে এই আন্দোলনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন—জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নির্বাহী সমন্বয়ক অঞ্জন দাস, আলমগীর হোসেন আলম, মহানগর সমন্বয়ক নিয়ামুর রশিদ খান বিপ্লব, নির্বাহী সমন্বয়ক পপি রানী সরকার প্রমুখ।

মহানগর সমন্বয়ক বিপ্লব জানান, “আশা করছি ১৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন হবে। চারটি রাজনৈতিক দল ওইদিন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যারা প্রত্যেকেই অভ্যুত্থান-সংঘটিত শক্তির অংশ বলে আমরা মনে করি। নিরাপত্তাজনিত কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না বলেই আমরা আশা করছি।”

গণসংহতি আন্দোলনের নেতা অঞ্জন দাস জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কোনো একক গোষ্ঠীর সম্পদ নয় বলে উল্লেখ করে বলেন, “একাত্তরকে যেমন আওয়ামী লীগ নিজেদের সম্পত্তিতে রূপান্তর করেছিল, তেমনভাবে কেউ কেউ এখন জুলাই আন্দোলনকে নিজেদের মালিকানায় নিতে চাইছে—এটি ফ্যাসিবাদী ধারা ছাড়া কিছু নয়।”

জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জে দীর্ঘ ১৫ বছরের আওয়ামী দুঃশাসন এবং ‘ওসমান পরিবারের দুঃশাসনের’ বিরুদ্ধে গণসংহতি আন্দোলনের সোচ্চার অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এখন অভ্যুত্থানের দাবিদার কিংবা অভ্যুত্থানের চ্যাম্পিয়ন শক্তির অনেকে আছেন যারা ওসমান পরিবার থেকে টাকা পয়সা খেয়ে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে।”

RSS
Follow by Email