জুলাই-আগস্টের চেয়ে পতাকা বিক্রি কমেছে ডিসেম্বরে, সড়কে নেই ‘আলোকসজ্জা’
# জুলাই-আগস্টের অনেক বেশি বিক্রি হয়েছে: পতাকা বিক্রেতা
# অর্থনৈতিক টানা পোরা থাকতে পারে, গুরুত্ব কম দেয়াকে সাপোর্ট করিনা: রাব্বি
# আগের মতোই আছে, শুধু সড়কে আলোকসজ্জা করা হয়নি: এনসিসি
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিজয়ের মাস এলেই নারায়ণগঞ্জে লাল সবুজের পতাকা বিক্রি বেড়ে যায়। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পতাকা বিক্রি হতে দেখা যায় নগরীর বিভিন্ন জায়গায়। অলি-গলি, বাস, রিকশা এমনকি বাড়ির ছাদেও টানানো হয় জাতীয় পতাকা। তবে এবার ভিন্ন চিত্র, বিজয় দিবসে এলেও শহরে খুব একটা পতাকা দেখা যাচ্ছে না। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর পতাকা বিক্রি কিছু ক্ষেত্রে কমে গেছে। তবে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর উপলক্ষে বিক্রি কিছুটা বাড়লেও তা আশানুরূপ নয়।
অন্যদিকে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের এই স্বাধীনতা উদযাপন করতে বর্ণিল সাজে নারায়ণগঞ্জকে সজ্জিত করা হলেও। এবার বহুতল ভবন গুলোতে নেই লাল-সবুজের ঝিকিমিকি আলো। নগীর চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জেলা প্রশাসকের কার্যলয়, পুলিশ সুপার কার্যলয়সহ আলী আহমদ চুনকা পাঠাগারে রক্তের লাল আর শ্যামল-সবুজ বর্ণের আলোকসজ্জা দেখা গেলেও, অন্যান্য বছরের সড়ক গুলোতে তেমন উজ্জ্বলতা লক্ষ্য করা যায়নি।
রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) নগরীর বি.বি রোডের ডিআইটি, ২নং রেলগেট, কালীর বাজার, চাষাঢ়া এলাকা ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা যায়। বিছিন্ন কিছু স্থানে পতাকা বিক্রি করতে দেখলেও আগের মতো দেখা যায়নি পতাকার মৌসুমী ব্যবসায়ীদের।
নগরীর চাষাঢ়ায় কথা হয় পতাকা বিক্রিতে মহসিন মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, পতাকা বিক্রি হচ্ছে তবে জুলাই-আগস্ট মাসে যে পরিমাণ বিক্রি করতে পেরেছিলাম ততটা নেই। আরেক পতাকা বিক্রেতা বলেন, ১৬ ডিসেম্বরে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। এক সময় বাংলাদেশের পতাকা ডিসেম্বরের আগে তেমন বিক্রি হয়নি। তবে জুলাই-আগস্টের সময় এবং তারপর অনেক বেশি বিক্রি হয়েছে। সে সময় দৈনিক ২০০০-২৫০০ টাকার পতাকা বিক্রি করেছি ৷ এখন বর্তমানে ৫০০-৭০০ টাকা গড়ে থাকে।
পতাকা বিক্রি করা রাসেল বলেন, ফিলিস্তিনের পতাকা গড়ে ১০-১৫টি বিক্রি হয়। এছাড়া ছাত্রদল-যুবদলের লোগো সম্বলিত মাথা ও হাতের ব্যান্ড বিক্রি হচ্ছে অনেক। জুলাই-আগস্টের মত বিক্রি নেই মোটেও তবে ডিসেম্বরে বিক্রি হচ্ছে কিছুটা। আগস্টে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। তবে রাত পোহালে বাংলাদেশের পতাকা বিক্রি বাড়বে বলে আশা করি।
এদিকে, আলোকসজ্জা নিয়ে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি। তিনি বলেন, আলোকসজ্জার বিষয়ে সরকারের কিছু নির্দেশনা কাজ করে। বিজয় দিবসকে আগের থেকে গুরুত্ব কমিয়ে দেখার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। অর্থনৈতিক টানা পোরা থাকতে পারে। কিন্তু বিজয় দিবসকে গুরুত্ব কম দেয়াকে আমরা সাপোর্ট করিনা। এবং এটা মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। সিটি কর্পোরেশন এখন প্রশাসক দিয়ে চলছে, তিনি সপ্তাহে ১দিন-২দিন। সিটি কর্পোরেশনে বিশৃঙ্খল একটা পরিস্থিতি চলছে। কারণ তারা রুটিন কাজ করার জন্য এখানে এসেছেন, তাদের দায়িত্ব মনে করেন না তারা আমরা য দেখছি। তবে এসব বিষয়ে সরকারের নজর দেয়া দরকার বলে আমি মনে করি। যেহেতু এটা ইতিহাসের বিষয়, ৭১ বিজয়ের বিষয়। তাই এটাকে গুরুত্বহীন করার কোন সুযোগ নাই। জনগণ এটাকে মেনে নিবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল আজিজ লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমাদের সব আয়োজন আগের মতোই আছে। শুধু সড়কে আলোকসজ্জা করা হয়নি। সার্কুলেশন অনুযায়ী আমাদের কাজ করা। তাছাড়া বিজয় দিবসে আমাদের ফুল দেয়াসহ বিভিন্ন খেলার আয়োজন করা হয়েছে।