সফল হতে পরীক্ষায় ১ম হওয়া নয়, জ্ঞানার্জন দরকার: বিচারপতি জহিরুল
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ফতুল্লায় দাপা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সাথে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাব্বির শাহরিয়ার সম্রাট স্মৃতি বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শুরুতে পবিত্র কুরআন হতে সূরা তিলওয়াত ও পরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। সেই সাথে অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপরই উপস্থিত অতিথিদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পুরস্তার বিতরণী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিাতা সদস্য ও সভাপতি মো. আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম হাইকোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি একেএম জহিরুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে একেএম জহিরুল হক বলেন, ছোট বয়সে কোন শিশু-কিশোরের জীবনের লক্ষ্য থাকে না। পরিবার, শিক্ষকদের আদর-যত্নে বড় হতে হতে সে জীবনের লক্ষ খুঁজে পায়। আল্লাহর রহমতে আমি বিচারপতি হিসেবে অনেক স্পর্শকাতর ঘটনার বিচার কাজ করেছি। অথচ যখন ক্লাস ২-৩ তে পড়েছি, তখন পরীক্ষায় ফেল করতাম। তখন যদি কেউ আমাকে দেখতেন, কেউ বিশ্বাসই করবেন না যে বড় হয়ে আমি কোর্টের বিচারপতি হবো। তাই আমি বলবো, প্রত্যেকে শিক্ষার্থী মেধা বিকাশে সময় নেয়। কারও মেধার বিকাশ ৫ বছরে হয়, কারও ৭ বছর বা কারও ১৫ বছর পর্যন্ত লাগতে পারে। তাই যারা খারাপ রেসাল্ট করো, তারা ঘাবরে যেও না। পরীক্ষায় ১ম হবার দরকার নেই, জানার দরকার। জ্ঞানার্জন করার দরকার আছে। তবেই জীবনে সফলতা আসবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যখন আপনার বাচ্চা ভালো রেসাল্ট করছে না, তখন আপনারা হতাশ হবেন না। ধৈর্য্য ধরুন এবং সন্তানের পাশে থাকুন। শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে শিক্ষকদের ভূমিকাও অনেক। স্কুলে বাচ্চারা যখন আসবে, তখন শিক্ষকের দায়িত্ব হলো যত্নসহকারে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও গাইড করা। এতে করে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করতে পারবে। মূলত, অভিভাবক ও শিক্ষক প্রত্যেকেই শিক্ষার্থীর জীবনে ভূমিকা রাখলে তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। পাশাপাশি আমি বলবো, শিক্ষার্থীকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে শাহ নিজাম বলেন, ছাত্র রাজনীতি করার সময়ে আমরা অধিকার আদায় করতে কোন ধরণের ছাড় দেইনি। সেটা কলমের কালি হোক, কিংবা পরীক্ষার ফিস। দুটোর জন্য আন্দোলন করেছি। শুধু আন্দোলন নয় আমরা আমাদের দাবি মানিয়েছি। অধিকারের জন্য প্রতিবাদ করা অপরাধ না। কিন্তু তোমাদের (শিক্ষার্থীদের) আগে সচেতনতা অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, জাতিকে সুশিক্ষিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। বছরের শুরুতে বিনামূল্যে বই বিতরণ করেছেন। যদি আপনাদের কাছে মনে হয়, সরকার ভালো না তাহলে তার প্রতিবাদ করেন। অন্যায় করলে তার প্রতিবাদ করেন। কিন্তু আপনার যদি মনে সরকার দেশের উন্নয়ন করছে, তাহলে সেটার ধন্যবাদ জানানোর মতো সাহস থাকতে হবে।
পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) দেদারুল ইসলাম, সামছুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা, ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অফিসার ইনচার্জ) নূরে আযম মিয়া, জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, দাপা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও আজীবন দাতা সদস্য মোস্তফা কামাল, নারায়ণগঞ্জ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্য বাবু শীতল চন্দ্র দে, দাপা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার খানম প্রমুখ।