জিসানের মুক্তিতে ছাত্র ফেডারেশনের বিবৃতি
প্রেস বিজ্ঞপ্তি: দীর্ঘ ৭৩ দিন মিথ্যা মামলায় কারাবাসের পর অবশেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক সদস্য, জুলাই অভ্যুত্থানের কর্মী ও সংবাদকর্মী জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান। সরকারি কাজে বাধা এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় গত ১২ মে গভীর রাতে নগরীর শহীদনগর এলাকার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
জিসানের গ্রেপ্তারের পর নিম্ন আদালতে তার জামিন আবেদন বারবার নাকচ হয়। এমনকি রাষ্ট্রপক্ষ কোনো প্রমাণও হাজির করতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে গত ৩১ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতকের ভর্তি পরীক্ষাও তাকে কারাগারেই দিতে হয়, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা শুরু থেকেই জিসানের মুক্তির জন্য আইনি ও রাজনৈতিকভাবে লড়াই চালিয়ে আসছিল। অবশেষে মামলাটি হাইকোর্টে উঠলে গত সোমবার (২১ জুলাই) জিসানের জামিন মঞ্জুর হয়। সকল আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) তিনি কারামুক্ত হন।
জিসানের মুক্তির পর বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ছাত্রনেতা ফারহানা মানিক মুনা এবং সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, “রাষ্ট্রীয় রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই আমরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। গণহত্যাকারী ও তাদের দোসররা যখন অবলীলায় সমাজে ঘুরে বেড়ায়, তখন মুক্তির লড়াইয়ে থাকা যোদ্ধাদের মিথ্যা মামলার ফাঁদে ফেলে হয়রানি করা দেশের বিচারব্যবস্থার ওপর গুরুতর প্রশ্ন তোলে।”
তারা আরও বলেন, “জিসানের মুক্তি আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলেও, তাকে গ্রেপ্তার ও দীর্ঘদিন আটক রাখার ঘটনা রাষ্ট্রের দমন-পীড়নের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। এই ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, যারা সত্য উচ্চারণ করে, তাদের মুখ বন্ধ করতেই রাষ্ট্রের এই মিথ্যা মামলা ও হয়রানির পথ বেছে নেওয়া হয়েছে।”
বিবৃতিতে ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ দৃঢ় কণ্ঠে জানান, “বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন বরাবরের মতোই এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আইনি ও রাজনৈতিক লড়াই অব্যাহত রাখবে। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, দমন-পীড়ন, গ্রেপ্তার, মামলা, জেল—কোনো কিছু দিয়েই আমাদের থামানো যাবে না। রাষ্ট্রযন্ত্রের চোখে চোখ রেখে আমরা লড়বো, কারণ এই লড়াই কেবল একজন জিসানের নয়—এটি সত্য, ন্যায় ও মুক্তির জন্য লড়াইরত প্রতিটি মানুষের লড়াই।”
