জিমখানা বস্তিতে পুলিশ-সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান, গ্রেপ্তার ২৪
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: অবশেষে পতনের দিকে এগোল জিমখানা বস্তির মাদক সাম্রাজ্যের। সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের উৎকণ্ঠা ও অভিযোগের ভিত্তিতে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মাদক নিয়ন্ত্রণে বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জে এক বিশাল যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত এই যৌথ বাহিনী টানা তিন ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে আটক করেছে। এই অভিযানে মাদক মামলার বহু কাঙ্ক্ষিত আসামি আলম চাঁন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে শহরের জিমখানা বস্তি ও লেকপাড় এলাকা পুরোপুরি ঘিরে ফেলা হয়। যৌথ বাহিনীর মূল লক্ষ্য ছিল মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের আড্ডাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া।
অভিযান চলাকালে মাদক মামলার কুখ্যাত আসামি আলম চাঁন-কে অবশেষে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। এছাড়াও জিমখানার পারভীন আক্তার (৩৫) এবং আফরিনা আক্তার হাসি (৫০) নামে আরও দুই নারীকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
যৌথ বাহিনী তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ও দেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। উদ্ধার হওয়া সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে, দেড় কেজি গাঁজা, ৩০ পিস ইয়াবা, একটি বিদেশি মদের বোতল, তিনটি বড় ছুরি, একটি চাপাতি, দুটি লাঠি ও দুটি মোবাইল ফোন।
অভিযান চলাকালে ঘটনাস্থলেই মাদক সেবনের দায়ে পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টি. এম. রাহসিন কবির।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, মো. ফয়সাল (২১) – ১২ দিন, রিফাত (২০) – ১২ দিন, মো. মোস্তফা হোসেন (২৫) – ১৪ দিন, জুবায়ের ভূঁইয়া রানা (৩৬) – ২০ দিন, অভিনন্দী (৩০) – ৭ দিন। এছাড়া, আটক বাকি ১৬ জনকে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী এই অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের কাছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের আড্ডার সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল। ফতুল্লার পর এবার সদর থানার জিমখানায় অভিযান চালানো হলো। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল আলম চাঁনকে গ্রেপ্তার করা, যার নামে অসংখ্য মাদক মামলা রয়েছে। অভিযানে তাকে সফলভাবে আটক করা সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও নিশ্চিত করেন যে, আলম চাঁনের হেফাজত থেকে গাঁজা, বিদেশি মদ ও দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে এবং দুই নারীর কাছ থেকে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও অস্ত্র আইনে কঠোর মামলা করা হবে।
পুরো অভিযানটির নেতৃত্বে ছিলেন জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টি. এম. রাহসিন কবির এবং সেনাবাহিনীর মেজর আয়াজ আব্দুল্লাহ।