জমি ‘দখল-উচ্ছেদে’ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করলো কে?
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বই-খাতা হাতে দিয়ে শিশু-কিশোরদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছে অভিভাবকরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁরা তুলে নিয়েছেন ইট-পাটকেল। তা ব্যবহার করেছে জমি দখল-উচ্ছেদের মতো কাজে। প্রশ্ন উঠেছে- কারা তাদের এই কাজে ব্যবহার করলো?
নারায়ণগঞ্জের কুতুবপুর ইউনিয়নের পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ২ আগস্ট দুপুরের সেই ঘটনায় আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে ভুক্তভোগী। তবে, শিক্ষার্থীদের না জড়ালেও নির্দেশ দাতা হিসেবে প্রধান শিক্ষক ও এক দাতা সদস্যকে আসামী করা হবে বলে জানা গেছে।
জমির মালিক মো. এমদাদুল হক বলছেন, ‘প্রধান শিক্ষক ও দাতা সদস্যের উস্কানিতে এমন অপরাধে জড়িয়েছিল কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ জন্য তাদের আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষকের নাম ব্রজেন্দ্রনাথ সরকার ও দাতা সদস্যর রেজাউল করিম।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টির পাশে আরএস ১৯৬৫ নং দাগ ৮ ও ৩ কাঠাসহ মোট ১১ কাঠা খালি জমি রয়েছে। বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য জমি গুলোর প্রয়োজন হয়। পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মাহবুব আলমের নেতৃত্বে হওয়া শালিশ বৈঠকে বিকল্প জায়গার বিনিময়ে বিবাদমান জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি হয় ৮ কাঠা জমির মালিক। কিন্তু পাশের ৩ কাঠা জমির ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি তখনও। সেই ৩ কাঠা জমি ক্রয় সূত্রে মালিক মো. এমদাদুল হক।
মো. এমদাদুল হক জানান, জমিটি ২০০৯ সালে ক্রয় করেছিলেন তিনি। এরপর বালি ভরাট, দেয়াল নির্মাণ করেছিলেন। ২ আগস্ট জমিতে গিয়ে দেখতে পান পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে সাইনবোর্ড সাটানো হয়েছে। সেটা উঠাতে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রজেন্দ্রনাথ সরকার ও দাতা সদস্যর রেজাউল করিম উস্কে দেন কমলমতি শিক্ষার্থীদের। তারা ইট-পাথর হাতে নিয়ে ৮ কাঠাসহ তার ৩ কাঠা জমির দখল উচ্ছেদ করেন।
মো. এমদাদুল হক বলেন, ‘শিশুদের বিদ্যালয়ে পড়ালেখা শিখাতে পাঠায় অভিভাবকরা, প্রধান শিক্ষক তাদের জমি দখল কাজে ব্যবহার করছে। এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ও স্কুলের পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিবো।’
তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রজেন্দ্রনাথ সরকার বলেছেন, ‘স্কুলের সাইনবোর্ড উঠিয়ে ফেলায় শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে এই জমির দেয়াল ভেঙ্গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে দেখে আমি ফতুল্লা থানার ওসিকে অবহিত করেছিলাম।’
শিশুদের এই দখল উচ্ছেদের কাজে ব্যবহার করায় ঘটনার পর থেকেই তীব্র সমালোচনা করছেন অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবক জানান, কোমলমতি নিষ্পাপ ছেলে-মেয়েদেরকে এই কাজে কেনো ব্যবহার হলো। এর ফলে যে কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনা করতে পারতো। কোন অভিভাবকের এটা কাম্য নয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইউনুছ ফারুকীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
তবে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আবু তালেব জানান, আমার ঘটনাটি জানা ছিল না। ঘটনাটি ভালো ভাবে জেনে অভিযোগের প্রমান পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।