ছেলের বস্তাবন্দি লাশ ফেলেছিল বাবা নিজেই, মাও জড়িত
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ফতুল্লার শিয়াচর লালখা এলাকায় বস্তাবন্দি অবস্থায় যুবক জনি সরকারের (২৫) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়েছে। পুলিশ নিহতের বাবা করুনা সরকার (৫৩) এবং মা অনিতা রানী সরকার (৪৮)-কে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার রাতে ফতুল্লার লালখা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুজনেই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
এর আগে, গত মঙ্গলবার সকালে ফতুল্লার শিয়াচর লালখা এলাকা থেকে জনি সরকারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পরদিন মঙ্গলবার রাতেই নিহতের বাবা করুনা সরকার নিজেই বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত করুনা সরকার ও অনিতা রানী সরকার সপরিবারে ফতুল্লার শিয়াচর লালখা এলাকার দুলালের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
ফতুল্লা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (অফিসার ইনচার্জ) শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত জনি সরকার মাদকাসক্ত এবং বখাটে স্বভাবের ছিল। মাদকের টাকার জন্য সে প্রতিনিয়ত তার বাবা-মাকে চাপ দিত এবং মারধর করত। গত সোমবার রাতেও টাকার জন্য জনি তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে।
ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে জনি সরকার ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে প্রথমে রুটি বানানোর কাঠের তৈরি বেলুন দিয়ে মাথায় এবং মুখে আঘাত করা হয়। এতে জনি সরকার অচেতন হয়ে পড়লে তার বাবা শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
পুলিশের ভাষ্যমতে, হত্যাকাণ্ডের পর রাত ২টার দিকে জনির বাবা নিজেই তার হাত-পা বেঁধে একটি বস্তায় ভরেন। এরপর বস্তাটি মাথায় করে নিয়ে লালখা মোস্তফার বাড়ির গলির ড্রেনে ফেলে আসেন। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে নিশ্চিত হয় এবং পরে নিহতের বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা উভয়েই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে অপরাধ স্বীকার করেছেন।