ছুটির দিনে ঘুড়ে আসুন না.গঞ্জে বাণিজ্য ও চারুকারু মেলায়
আল-আমিন শান্ত নীল, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: কর্মজীবীদের মনে উৎসবের আমেজ তৈরি করে ছুটির দিনগুলো। এসব দিনে অনেকেই বাসায় বসে বই পড়া, রান্না করা, মুভি দেখে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। কেউ কেউ আবার ঘরের চার দেয়ালের মাঝে বসে না থেকে, ঘুরতে পছন্দ করেন। হতে পারে সেটা পরিবার কিংবা বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে নিয়ে। তবে গ্রামীণ পরিবেশ ও বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতির আমেজ নিতে, ছুটির দিনে চলতি মাসেই ঘুরে আসতে পারবেন নারায়ণঞ্জের বাণিজ্যমেলা এবং কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব।
বাণিজ্যমেলা
রূপগঞ্জ পূর্বাচলে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা (ডিআইটিএফ)। ২১ জানুয়ারি রবিবার মাসব্যাপী এ মেলার ২৮তম আসরের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণিজ্যমেলায় দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইরান, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ অংশ নেবে। মেলায় থাকছে এসব দেশের বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারি ওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি। মেলা চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিন চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশ ফি ধরা হয়েছে বড়দের জন্য ৫০ টাকা, শিশুদের জন্য ২৫ টাকা।
কিভাবে যাবেন ?
শহরের চাষাঢ়া হতে বাস, লেগুনা বা অটোযোগে চলে যাবেন সাইনবোর্ড এলাকায়। সেখান থেকে ফুটওভার ব্রীজ পার হয়ে মহাসড়কের ওইপার থেকে বাসে করে যাত্রা শুরু করবেন। চাইলে চাষাঢ়া হতেই বাস বা অটোযোগে চিটাগাং রোড যেতে পারেন। বাস যোগে কাচপুর, রুপসী ভুলতা হয়ে কাঞ্চন সেতু পার করে নেমে যাবেন। কাঞ্চন ব্রীজ বাস স্ট্যান্ড থেকেই অটো যোগেই যেতে পারেন বাণিজ্যমেলায়।
লোক কারুশিল্প মেলা
একদিকে রূপগঞ্জে বাণিজ্য মেলা, অন্যদিকে সোনারগাঁয়ে রয়েছে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী, লোকজীবন প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়স্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের তৈরি বাহারি পণ্যসামগ্রী এবং উদ্যোক্তাগণের কারুপণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ১৬ জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া মেলা ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। মেলায় মৌলভীবাজার ও ঝালকাঠীর শীতল পাটি, মাগুরার শোলাশিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি ও মাটির পুতুল, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁ-টাঙ্গাইল-ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশ বেতের কারুশিল্প, ঐতিহ্যবাহী জামদানি, কাঠের চিত্রিত হাতি-ঘোড়া-পুতুল, বন্দরের রিকশা পেইটিং, কুমিল্লার, তামা-কাঁসা-পিতলের কারুশিল্প, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুশিল্প, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, বগুড়ার লোকজ খেলনা ও কুমিল্লার লোকজ বাদ্যযন্ত্রের শিল্পীসহ মোট ১৭ জেলার কারুশিল্পীগণ মেলায় অংশ নিয়েছেন। তাছাড়া সারাদিন ঘুড়ে সন্ধার বিশেষ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারেন। মেলায় প্রতিদিনের সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠানমালায় লোকজ মঞ্চে পালাক্রমে বাউলগান, পালাগান, ভাওয়াইয়া-ভাটিয়ালীগান, জারি-সারিগান, হাছন রাজারগান, শাহ আব্দুল করিমের গান, লালন সঙ্গীত, ক্ষুদ্র- নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লোকজ নৃত্যনায়ি, গ্রামীণ খেলা, লাঠিখেলা, মুড়ি ওড়ানো, চর্যাগান, লোকগল্প বলা ইত্যাদি অনুষ্ঠান পরিবেশনা করা হয়।
কিভাবে যাবেন ?
শহরের চাষাড়া থেকে বাসযোগে আপনাকে যেতে হবে সাইন বোড এলাকায়। সেখান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে মেঘনা ব্রিজের কাছাকাছি মোগরাপাড়া বাস স্টেশনে আসতে হবে। অতঃপর সি.এন.জি/রিকশাযোগে এ মেলায় যাওয়া যাবে।