ঘোষণার পরও না.গঞ্জের বাজারে কমেনি সয়াবিনের দাম
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক টাস্কফোর্সের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, ১ মার্চ থেকে সয়াবিন তেলের নতুন দাম কার্যকর হবে। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে নগরবাসী। তবে ঘাষণার পরও অপরিবর্তিত রয়েছে বাজারের দোকানগুলোতে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। বাজারে সকাল থেকে ভোক্তারা এসে তেলে দাম শুনে হতাশায় বাড়ি ফিড়ছেন। নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় এই তেলের দাম না কমায়, একদিকে জনগণ দুষছেন দোকানদারকে আবার দোনাকদার দুষছেন ডিলারদেরকে।
শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেলে সরেজমিনে এমনই তথ্য মেলে নগরীর দিগুবাবুর বাজারে। ২০ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঘোষনার পরও কমনি তেলের দাম। খুচরা পর্যায় এখনো বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটারে ১৭০ টাকায় এবং ৫ লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ৮০৫ থেকে ৮১০ টাকায়। এতে হতাশ হচ্ছেন ক্রেতারা।
এসময় বিকাশ চন্দ্র নামের এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, কখনো দেখিনি নির্দেশনার পর পর এ দেশে কোন নিয়ম মানতে। ব্যবসায়িদের নির্দেশনা দেওয়ার পর মোবাইল কোর্ট পরচিালনা হয় তারপর তারা মানে।আবার ২-৩ দিন পর আগের মতো। পত্রিকায় দেখলাম সরকার তেলের দাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। আগের তুলনায় ১০-১২ টাকা কমানো হয়েছে। আজ থেকে নাকি দাম কমার কথা কিন্তু বাজারে একটা দোকানে দেখলাম না তেলের দাম কম। সব জায়গায় আগের দামের মতোই।
ক্রেতা আসলাম বলেন, কোন জিনিসের দাম বাড়ে ১০ টাকা, সরকার সেটার দাম কমায় ২ টাকা। আজ সকালেও দেখেছি তেলের দাম নাকি কমছে। কোথায় কমেছে ? দামতো এখনো ১৭০, ১৭৩ টাকায় ১ লিটার তেল কিনতে হয়। দোকারদার বলে ডিলাররা না কমাইলে আমরা দাম কমাবো কিভাবে।
তেলের দাম অপরিবর্তিত থাকার কারণ জানতে চাইলে খায়ের ট্রেডার্সের মালিক আবুল খায়ের বলেন, আসলে তেলের দাম কমেছে এই খবর আমরাও পেয়েছি। তবে আজ শুক্রবার থাকায় আমরা যেখান থেকে তেল আনি সেই ডিলাররা আমাদের নতুন দাম জানায় নি। বসুন্ধরা, তীর, ফ্রেশ ও পুষ্টির যে ডিলার পয়েন্ট থাকে সেগুলো প্রতি শুক্রবার বন্ধ থাকে। আমরা ফোন করলেও নম্বর বন্ধ আসে। তাই বাধ্য হয়েই আগের দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
আরিফ সিকদার নামের আরেক দোকানদার বলেন, যে সয়াবিন তেলটা ৫-৬ দিন আগে কিনেছি সেটা আজ নতুন দামে বিক্রি করতে গেলে আমাদের লোকসার হয়। এর ওপর আজ তো নতুন দামে তেল কিনে আনতে পারিনি কারণ তেলের পয়েন্টগুলো বন্ধ। সকাল থেকে ক্রেতা আসছে, তারাও দাম কমানোর বিষয়টা বলেছে কিন্তু এখানে তো আমাদের হাতে কিছু করার নাই।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে চার নিত্যপণ্যের শুল্ক কমানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব পণ্য হলো চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুর। এরপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ক কমানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। এনবিআর শুল্ক কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পর ২০ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভা হয়। তারপর বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দাম কমানোর কথা জানায়, যা আগামীকাল ১ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। তবে সয়াবিন তেল ছাড়া পাম তেল বা অন্য পণ্যের দাম কমানো হয়নি।