গ্যাস সংকট সমাধানে সেলিম ওসমানের চিঠি
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলার পোশাক ও ডায়িং কারখানার গ্যাস–সংকটে সমাধানে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে চিঠি দিয়েছেন নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি এবং সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এই চিঠি পাঠান তিনি।
চিঠিতে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের গত ২ বারের এমপি সেলিম ওসমান জানান,‘গত ১৬ অক্টোবর থেকে নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে গ্যাসের কোনো প্রবাহ নেই। গত ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় আমি নারায়ণগঞ্জে গ্যাস না থাকার বিষয়টি উত্থাপন করলে তৎকালীন উপদেষ্টা মহোদয় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। ওই নির্দেশনা মোতাবেক ১০ নভেম্বর গ্যাসের চাপ ৩-৪ পিএসআই পাওয়া যায়। তবে ঠিক পরের দিন থেকেই এখন অবধি গ্যাসের প্রবাহ পূর্বের ন্যায় শূন্যে নেমে এসেছে।’
এমপি সেলিম ওসমান আরো বলেন, ‘গড়পড়তা সমীক্ষায় আমরা জানতে পেরেছি, গ্যাস না থাকায় একটি ছোট কারখানাকে প্রতিদিন তিন থেকে চার লাখ টাকার ডিজেল কিনতে হচ্ছে। মধ্যম মানের কারখানার ক্ষেত্রে এটি ছয় থেকে সাড়ে আট লাখ টাকা। আর বড় কারখানাগুলোকে দিনে ১০-১৫ লাখ টাকার ডিজেল কিনতে হচ্ছে। প্রতিদিন এই বিপুল অঙ্কের টাকার ডিজেল কিনে কারখানাগুলোর পক্ষে উৎপাদন পরিচালনা করা রীতিমতো অসম্ভব।’
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে শিল্পকারখানাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থায় পড়ে সরকারকে যেন বিব্রত হতে না হয়, সে ব্যাপারে আপনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
বিকেএমইএর সভাপতি আরো বলেন, কিছুদিন আগেই মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে ঢাকা ও গাজীপুরে মারাত্মক শ্রম অসন্তোষ হয়েছিল। শুধু নারায়ণগঞ্জ শিল্প এলাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু নির্বাচনের ঠিক আগে শুধু নারায়ণগঞ্জের মতো শিল্পঘন অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ না করার বিষয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি করছে, যা এই অঞ্চলের দেড় হাজার উদ্যোক্তার কারখানা পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে। গ্যাস–সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় পণ্য জাহাজীকরণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ৫৬৭টি পোশাক ও ডায়িং কারখানা পৌনে দুই মাস ধরে গ্যাস–সংকটে ভুগছে। এই পরিস্থিতিতে অনেক প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই ডিজেল কিনে উৎপাদন পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। পণ্য উৎপাদন না করায় লিড টাইম অনুযায়ী রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো গত মাসের (নভেম্বর) বেতন পরিশোধ করতে পারেনি। আগামী দিনগুলোতে কারখানা চালানো এককথায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ দানা বাঁধতে পারে, এমন আশঙ্কার কথাও জানান তিনি।