গিয়াসউদ্দিন ভোগে নন, ‘ত্যাগে বিশ্বাসী: সীমান্ত প্রধান
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সাবেক ছাত্রদল নেতা সীমান্ত প্রধান বলেন, গিয়াসউদ্দিন ভোগে নন, ‘ত্যাগে বিশ্বাসী বলে পৃথিবী যতদিন থাকবে এই নারায়ণগঞ্জে তার নাম ততদিন থাকবে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ফতুল্লায় ৭নং ওয়ার্ড তিতুমির একাডেমি স্কুল মাঠে রাষ্ট্র মেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়ন কর্মসূচি শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সাবেক নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় এ কথা বলেন তিনি। সভার সভাপতিত্ব করেন ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার আখতার হোসেন।
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালে শামীম ওসমান যখন এমপি হলেন তখন তিনি জামতলায় একটি রাজকীয় বাড়ি নির্মাণ করেন। সেই বাড়ির জন্য ইটালি, ফ্রান্স থেকে মার্বেল পাথর আমদানি করেছিলেন। এতেই বুঝা যায় সেসময় তিনি কি পরিমাণ অর্থ সম্পদ অবৈধভাবে আয় করেছিলেন এতেই বুঝা যায়। অন্যদিকে গিয়াসউদ্দিন সাহেব ২০০১-২০০৬ সালে যখন এমপি ছিলেন তখন তিনি চাইলে রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটি করেননি। কোনো প্রকার লোভ তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তিনি কোনো প্রকার অবৈধ আয় করেননি বলে এখনও পর্যন্ত তার বাড়িটি একটি সাধারণ বাড়ির মতই রয়েছে। রূপগঞ্জে একজন ছিলেন। তার নাম গোলাম দস্তগীর গাজী। তার সম্পদ কিন্তু কম ছিল না। কিন্তু তার ক্ষুধা ছিল বেশি। এই ক্ষুধা নিবারণের জন্য তিনি গরীব চাষাভূষাদের জমি জোরপূর্বক লিখিয়ে নিয়েছেন। আর অন্যদিকে গিয়াসউদ্দিন সাহেব পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এবং নিজের খরিদ করা সমস্ত জমি মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল কলেজের নামে উজাড় করে দিয়েছেন। কতটা নির্লোভ হলে একজন মানুষ এতটা উদার হতে পারে তা অনুধাবন করলেই বুঝা যায়।’
সীমান্ত প্রধান আরো বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমান তার সন্তানকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করতেন। তার ছেলে অয়ন ওসমান নিজেকে কেজিএফ হিরো ভাবতেন। সেজন্য সেদিন তিনি কেজিএফ স্টাইলে গুলি ছুড়েছিলেন সঙ্গে ছিলেন তার পিতা গডফাদার শামীম ওসমান। নিজে যেমন সন্ত্রাসী ছিলেন তেমনি শিক্ষা সন্তানকেও দিয়েছেন ওই গডফাদার। আর সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন কীভাবে বিনয়ী হতে হয়, কীভাবে মুরুব্বীদের সম্মান করতে হয়, তার সন্তানদেরকে সেই শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। শামীম ওসমান এমনই একজন গডফাদার ছিলেন যে তার শাখা-প্রশাখা ছিলো বিস্তৃত। লিংক রোডে নম পার্ক নামে একটি পার্ক ছিল। সেখানে বসতেন শাহ্ নিজাম নামে তার একজন দোসর। যে ব্যক্তি এই পার্কে বসে ভূমিদস্যুতা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত করতেন। তাদের আরেকজন ছিলেন জানে আলম বিপ্লব। এই বিপ্লবের নির্যাতনের শিকার এই তল্লা এলাকায় হয়নি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শামীম ওসমান সন্ত্রাসী ছিলেন বলেই তার সন্তান, ভাতিজা, নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। অন্যদিকে গিয়াসউদ্দিন সাহেব তার সন্তানদেরকে বিনয়ী হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। মানুষকে কীভাবে সম্মান করতে হয় সেই শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি তার কর্মীদেরকেও ওই একই শিক্ষা দিচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা সমাজের ভালো মানুষদের সম্মান দিবে না, যারা সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি করবে, মানুষকে নির্যাতন অত্যাচার করবে, তারা যত বড় পদধারী নেতা হোক, গিয়াসউদ্দিন সাহেবের সঙ্গে চলার মতো যোগ্য তারা নন। আর এই অযোগ্য ব্যক্তিদের কাছেই গিয়াসউদ্দিন সাহেব এখন খুব খারাপ মানুষ। এর কারণ হচ্ছে, গিয়াসউদ্দিন সাহেব তাদেরকে কোনো অবস্থাতেই প্রশ্রয় দেননি। অন্যায়, অনিয়ম প্রশ্নে গিয়াসউদ্দিন সাহেব তার সন্তানদেরকেও ছাড় দেন না, দিবেনও না। এখানেই তিনি অন্যদের তুলনায় ব্যাতিক্রম।’
ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন সেলিমের সঞ্চালনায় এবং ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাদেক হোসেনের সার্বিক তত্বাবধায়নে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল বারী ভূইয়া, সগসাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিপ্লব, ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী হাসান মাহমুদ পলাশ, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সাবেক ছাত্রদল নেতা নজরুল ইসলাম মেম্বার, কমল চৌধুরী প্রমূখ।