গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ-বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হতে বাসদের মানববন্ধন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় ইসরায়েলের নতুন করে হামলা বন্ধ ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে,মানববন্ধন করা হয়েছে। শনিবার (২২ মার্চ) নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আক্তার, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ব জনমত উপেক্ষা করে মার্কিন মদদে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের পুনরায় বর্বর নৃশংস হামলা শুরু করেছে। ইসরায়েল ৪২ দিনের মাথায় যুদ্ধ বিরতির চুক্তি ভঙ্গ করে ১৭ মার্চ ’২৫ মধ্যরাত থেকে আবারও ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে। এ কয়দিনে হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে এর মধ্যে ২০০ এর অধিক শিশু, অধিকাংশ নারী ও বয়স্ক মানুষ। ইসরাইলি হামলায় গত ১৭ মাসে গাজায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এর মধ্যে ১৮ হাজারের বেশি শিশু। শুধু তাই নয়, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা থেকে মানুষজনকে সরে যেতে বলেছে এবং বলছে ‘গাজায় নৃশংতা কেবল মাত্র শুরু’। হাজার হাজার টন বোমা ফেলে ফিলিস্তিনকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এই হামলার বিরুদ্ধে খোদ ইসরাইয়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ^ব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে কিন্তু ইসরায়েল তাতে তোয়াক্কা করছে না। কারণ তার প্রতি সমর্থন রয়েছে যুদ্ধবাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজা থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের সরে গিয়ে খালি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে দিতে বলেছে। নেতানিয়াহুর সাথে বৈঠক করে ট্রাম্প নতুন করে হামলার নীল নকশা করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গাজায় নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও খনিজসম্পদের দখলবিশ্ববাসী ও ঐ অঞ্চলে সামরিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরায়েলকে ব্যবহার করছে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা। সেজন্য অস্ত্র-অর্থসহ সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। আর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতায় ও মদদে জায়নবাদী ইসরাইল গণহত্যায় মেতে উঠেছে। এই ধ্বংসযজ্ঞে গাজার ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও গির্জা ধ্বংস হয়েছে; পানি ও পয়োনিষ্কানের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সরবরাহ ধ্বংস করেছে এমনকি জাতিসংঘ ভবনও ধ্বংস করা হয়েছে। পুরো গাজার ৮৩ শতাংশ গাছপালা, ৮০ শতাংশের বেশি কৃষিজমি ও ৯৫ শতাংশ গবাদিপশু নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে। গাজায় যে হামলা চানানো হচ্ছে তা অতীতের যে কোনো যুদ্ধের ভয়াবহতাকে হার মানিয়েছে। এখন সেখানে কোন ত্রাণ পৌছাতে পারছে না যে কারণে সেখানকার মানুষ ক্ষুধা দুর্ভিক্ষ ও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করছে।
নেতৃবৃন্দ ইসরায়েলে গণহত্যা বন্ধ ও দেশে দেশে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ সৃষ্ট সকল যুদ্ধ ও যুদ্ধ উন্মাদনার বিরুদ্ধে বিশ^বাসীকে প্রতিবাদ প্রতিরোধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। একই সাথে গাজায় মানবিক সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ারও জোর দাবি জানান। বাসদ জেলা নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সরকারকে গাজায় ইসরাইলি বোমা হামলা ও গণহত্যা বন্ধের দাবি আন্তর্জাতিক সকল ফোরামে তুলে ধরা এবং গণহত্যাকারী নেতানিয়াহুর বিচারের দাবি উত্থাপনের দাবি জানান।