কোরবানি ঈদে পশু বিক্রিতে সেলিম ওসমানের টার্গেট ৩ কোটি টাকা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: প্রতি বারের কোরবানি ঈদে নিজের পালিত পশু বিক্রি করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সেলিম ওসমান। পশু বিক্রির মুনাফা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাসহ নানা সামাজিক কাজে ব্যয় করেন দানবীর খ্যাত এই নেতা। এবারে পশু বিক্রিতে তার টার্গেট ৩ কোটি টাকা। তিনি বলেন, ‘আমার এই ব্যবসা একটা ছাগল দিয়ে শুরু করেছিলাম, প্রায় ৩৫ বছর হয়ে গেল আজ আমার এখানে এসে এসেছি। নিজস্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে যতটুকু বুঝি ততটুকুই লালন-পালন করি। আমার খরচ মিলিয়ে যা আগে বিক্রি করেছি বা যা এখন বিক্রি করব সব মিলিয়ে হয়তো ৩ কোটি টাকার মত হবে। এখানে ১৫০ টি গরু এবং কিছু মহিষ আছে। অনেকে এসেছেন গরু পছন্দ করে চলে গেছেন অথচ আমি দাম ও তাদের বলিনি। তাদের কথা দাম যেটাই হোক, তাদের এই গরুই পছন্দ হয়েছে। তারা অনেক বছর ধরে আমার কাছ থেকে গরুকে কিনেছে। উনাদের আমার উপর একটা আস্থা আছে।’
ফতুল্লায় নিজ মালিকানাধীন ফাইভ স্টার ফার্ম হাউজ লিঃ ও ফাইভ স্টার ফার্ম হাউজ পরিদর্শনে আসেন সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। পরিদর্শন কালে এ কথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি আরও বলেন, প্রতিটা গরু আমাদের দেড় থেকে দুই বছর পালতে হয়। আমি কখনো লাভের চিন্তায় গরু পালন করি না, যদি এবার গরু বিক্রি হয়ে যায় তাহলে হয়তো আগামী বারের জন্য গরু লাগানো পালন করতে পারবো। যদি এবার বিক্রি না হয় তাহলে হয়তো আগামী বারের জন্য লালন পালন করতে পারব না। আমাদের এখানে প্রায় ৩৫০ মতো গাভী আছে যার থেকে আমরা প্রায় সাড়ে তিন হাজার লিটার দুধ পাই। দুধের কিছু অংশ আমরা বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে বিক্রি করে দেই, আবার কিছু পেটেকজাত করে বাচ্চাদের জন্য দুধ টা রাখি।
সংসদ সদস্য আরও বলেন, গো খাদ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে এখানে আমি সরকারকে দায়ী করতে পারবো না, কারণ সারা বিশ্বেই এই দামটা বেড়েছে। যুদ্ধের কারণে ডলারের দাম বাড়ছে, ডলারের দাম বাড়ার কারণে মানুষই খেতে পারছে না। আর এ দিকে এখনকার গরু তো কাঁটা চামচ দিয়ে খাবার খায়। আগে গরু ঝাউ, ঘাস, লতাপাতা খেতো কিন্তু এখন তারা এগুলো খায় না। এখন তারা ভাল খাবার খায়। গরুকে উন্নত খাবার খাওয়াতে হয়। আমার কাছে মনে হয়, আমরা যতটুকু খাই এর থেকে হয়তো গরুকে বেশি খাওয়াতে হয়। কারণ আমাদের খাদ্যের মূল্যের থেকে গরুর খাদ্যের মূল্য অনেক বেশি পরে।’
সেলিম ওসমান বলেন, এবার কোরবানির ঈদ নিয়ে কোন পরিকল্পনা করিনি বা করতে পারিনি, কারণ সামনে কি হবে সেটা বলা যাচ্ছে না। মানুষ এই গরু কিনবে কিনা, তাদের সাধ্য অনুযায়ী হবে কিনা সেটাও বলতে পারছিনা। তাছাড়া ২৬ তারিখ একটা ঘূর্ণিঝড় হতে পারে, এটা অনেক মানুষ এফেক্টেড হবে। মানুষের অবস্থা এখন একদমই ভালো না। যদি গরু বিক্রি করতে পারি সে ক্ষেত্রে আমি চিন্তা করব যে আমার এলাকার কোন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় সাহায্য করা যায় কিনা। আমি এটাই করে আসছি বিগত ৩০ বছর ধরে। আমার গরুর খামারের মুনাফার অংশ আমার পরিবারের কাছে যায় না। হ্যাঁ তবে এই গরু থেকে দুধ ও এর থেকে দই-মিষ্টি-ঘি এগুলো আমার পরিবারের কাছে যায়। এছাড়া আমাদের কাছে ষাঁড় গরু রয়েছে যেগুলো ২০২৫ এবং ২০২৬ এর জন্য খুলনায় রেডি হবে।
প্রসঙ্গত, এবার কোরবানির ঈদের জন্য ফাইভ স্টার ফার্ম হাউজ লিঃ ও ফাইভ স্টার ফার্ম হাউজে শাহিওয়াল গরু ৪১ টি, পাকড়া ২৬ টি, গীড় ২০ টি, ফ্রিজিয়ান ৫টি, ব্রাহমা ৭টি, দেশী ১০টি, বুট্টি ৩টি, মহিষ ১৫ টি এবং গারল ১৪ টিসহ মোট ১৪১ টি গরু পালন করেছেন তিনি। গরুর দাম কেজি প্রতি নির্ধারন করে দিয়েছেন সেলিম ওসমান। লাইভ ওজন অনুযায়ি ৩০০-৩৯৯ কেজি ওজনের পর্যন্ত পশুর দাম প্রতি কেজিতে পরবে ৪৮৫ টাকা, ৪০০-৪৯৯ কেজি পর্যন্ত পশুর দাম প্রতি কেজি ৫২৫ টাকা, ও যদি পশুর ওজন ৫০০ -৬০০ কেজি বা এর বেশি হয় তাহলে এর দাম পড়বে কেজি প্রতি ৬০০ টাকা। এছাড়াও গারল এর কেজি প্রতি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০০ টাকা।