কুমিল্লা হত্যাকান্ডের বিচার, দ্রুত নির্বাচনসহ নানা দাবিতে নগরীতে বিক্ষোভ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে নানা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোট। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারী) বিকাল ৪ টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে শতাধিক পণ্যে বর্ধিত ভ্যাট বাতিল, রেশন ব্যবস্থা চালু, দ্রব্যমূল্য কমানো, সিন্ডিকেট উচ্ছেদ, পাঁচারকৃত টাকা উদ্ধার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি তোলা হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবতীর্, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, কমিউনিস্ট পার্টির জেলার নেতা আব্দুল হাই শরীফ, বিমল কান্তি দাস, জাকির হোসেন, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার বর্ধিত ফোরামের সদস্য সুলতানা আক্তার।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে যেখানে ক্রমাগত পণ্য মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত, সেখানে অর্থবছরের মাঝখানে নতুন করে শতাধিক নিত্যপণ্যের উপর ভ্যাট ও শুল্ক বাড়িয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন আরও বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আইএমএফ এর পরামর্শে এই করারোপের কোন নৈতিক ভিত্তি বর্তমান সরকারের নেই। এটি শ্রমজীবী, কর্মজীবী নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘায়ের সামিল। যেখানে আমাদের প্রবাসী শ্রমিকেরা মাসে ২ বিলিয়ন ডলার দেশে প্রেরণ করে সেখানে মাত্র দেড় বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আইএমএফ এর চাপে করারোপের কোন মানে হয় না।
নেতৃবৃন্দ বাজার সংস্কার করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অন্তর্বতীর্ সরকারের প্রতি দাবি জানান। ,দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রন না হলে কোন সংস্কারই জনগণের কাজে আসবে না। বিগত স্বৈরাচারী শাসনের সময় সবচেয়ে আলোচিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এসরকারও কোন ব্যবস্থা নিতে পারে নাই। অন্তবতীর্কালীন সরকারকে সিন্ডিকেট ভাঙ্গার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সিন্ডিকেটের জন্য দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তিনি অবিলম্বে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথ সুগম করার দাবি জানান। একই সাথে গণঅভ্যুত্থানের চেতনা শোষণ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য শুধু ক্ষমতার হাত বদল নয়, ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামে সামিল হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের জন্য সর্বজনীন রেশন চালু ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করার দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার শাসনামলের আরেকটি আলোচিত বিষয় ছিল বিচার বহিভূর্ত হত্যা। প্রত্যাশা ছিল গণঅভ্যুত্থানের পর বিচার বহিভূর্ত হত্যা আর দেখতে হবে না। কিন্তু গতকাল কুমিল্লায় যৌথবাহিনীর নির্যাতনে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই বিচার বহিভূর্ত হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। তথাকথিত তৌহিদী জনতার নামে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠী দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে মেয়েদের ফুটবল খেলা বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে ঢাকায় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আদিবাসী সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। মৌলবাদী গোষ্ঠী দেশে একটি সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। সরকার এখানেও নীরব ভূমিকায় আছে। মৌলবাদী সম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দেশে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে। এগুলো বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।