কাশিপুরে গিয়াসউদ্দিন ‘গডফাদারের বিপক্ষে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছি’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, আমি যখন ২০০১ সালে নির্বাচন করেছি তখন এই এলাকার কবলিম মানুষ ভালোবেসে আমাকে জয়লাভ করিয়েছে। এ দেশের সব থেকে বড় গডফাদার যাকে সবাই ভয় করতো, তার সাথে বিপুল ভোটে মানুষ আমাকে জয়লাভ করিয়েছে। সেই জন্য এই এলাকার মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ, শুধু আমি না আমার পরিবার পরিজন এই এলাকার মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে আমি প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলাম। এই আন্দোলনে আপনারা সকলে অংশগ্রহন করেছেন, যারা ঘর থেকে বের হয়নি তারা দোয়া করেছেন।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকালে ফতুল্লা কাশীপুর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আয়োজিত সন্ত্রাস, নৈরাজ্য লুটপাট-চাঁদাবাজির প্রতিবাদে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আমাদের বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছে। আমাদের বিএনপি নেতা ও সর্মথকরা অনেক অত্যাচারের শিকার হয়েছে। হামলা, মামলা, গুম-খুন হয়েছে। মিথ্যা মামলার অজস্র পাহাড় আমাদের বিরুদ্ধে ছিলো, কিন্তু আমরা কোন ভ্রক্ষেপ করি নাই। আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি অনেক ত্যাগের মাধ্যমে অনেক রক্তের মাধ্যমে স্বৈরাচার পতন করেছি, স্বৈরাচার দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। এখন আমাদের কি করণীয়, আমাদের কোন জনপ্রতিনিধি সরকার নাই, নির্বাচিত কোন সরকার নাই, আছে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার যার সমর্থনে আমরা আছি। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরে কি পেয়েছে? রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থাকে, সেই সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। এরমধ্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে, যারা দেশের জনগণের নিরাপত্তা ও জান মালের নিরাপত্তা করে সেই পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সেনা বাহিনীকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের প্রতি গুলি চালিয়েছে। সেই হত্যাকান্ডে নারী শিশু রেহায় পায়নি। তারপরও ছাত্র আন্দোলন আমাদের রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহনে, স্বৈরাচার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ৫ আগস্ট পালিয়ে গেছে ৮ তারিখ পর্যন্ত দেশে কোন সরকার ছিলো না। এই ৮ তারিখ পর্যন্ত যারা লুটেরা তারা অগ্নিসংযোগ করেছে, চাঁদাবাজি করেছে। এরপরও তারা বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করেছে শিল্প কলকারখানায় চাঁদাবাজি করেছে।
তিনি আরও বলেন, এখনো দেশের এই অবস্থা কেনো। যে পুলিশ বাহিনী আপনার আমার টাকায় চলে, তাদের পরিবার চলে, যারা জীবন দিয়ে আমাদের সেবা করবে। তাদেরকে ব্যবহার করেছে স্বৈরাচারী সরকার, আর গুলি চালিয়েছে আমাদের বুকের উপর। স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার পরে সেই পুলিশ তাদের নীতি নৈতিকতা হারিয়ে যাওয়ার কারণে, জনগণের সাথে যুদ্ধে পরাজয় হওয়ার কারণে, তাদের মানষিক মনবল সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে গেছে। তারা থানা থেকে পালিয়ে গেছে, রাজধানী থেকে পালিয়ে গেছে। এখনো বহুপুলিশ পলাতক, তাই তারা ঠিকভাবে কাজ করছে না। এখন আমাদের সর্ব প্রথম কাজ হলো, যে স্বৈরাচার পালিয়েছে তাদের দোষররা রয়ে গেছে, তারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে সেগুলো রয়ে গেছে। তারা এখন ষড়যন্ত্র করছে কিভাবে আইন শৃঙ্খলা নষ্ট করা যায়, জনজীবন বিপন্ন করা যায়, এই বিজয়কে কিভাবে পরাজিত করা যায়, নষ্ট করা যায়। তাই আমাদের কাজ দেশের আইনশৃঙ্খলা উন্নতি করতে হবে। কোন ভাবে যাতে কেউ বা কোন দলের নেতারা আইনশৃঙ্খলার অবনতি করতে না পারে, চাঁদাবাজি করতে না পারে, মাস্তানি না করতে পারে, হুমকি ধমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করতে না পারে।
গিয়াস বলেন, কোন শিল্পপতি নিজের টাকায় প্রতিষ্ঠান বানাতে পারে নাই, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে করেছে। কাজেই ব্যাংকের মধ্যে আমাদের জনগণের টাকা। এই শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি আমরা জ্বালিয়ে দেই তাহলে ক্ষতিটা রাষ্ট্রের হবে। তাই আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমার দলের নেতাকর্মীসহ প্রতিটা মানুষের এই সরকারকে সহযোগীতা করতে হবে। স্বৈরাচার এই দেশের বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে গেছে। বিচারক নিয়োগ হয়েছে আওয়ামী লীগ পরিবারের বা আওয়ামী লীগের সাথে যারা আছে তাদের। কোন মেধা বিবেচনা করে করা হয়নি। দলের বিচারকের কারণে আমরা আইনের বিচার পাইনি। স্বৈরাচার যে হুকুম দিয়েছে সেই হুকুমের বিচার করেছে। কাজেই আইন বিভাগ ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। তাই আমাদের কাজ সেই আইনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। এর জন্য সময় লাগবে, কিন্তু আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা সামাজিক ভাবে ন্যায় বিচার করুন। আর যারা সরকার আছে তাদের কাছে দাবি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইন বিভাগকে আপনারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, স্বৈরাচার ফ্যাস্টিট সরকারের চাটুকার মুক্ত করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার করবে এমন মানুষ নিয়োগ করেন।
এ সময় কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো, মঈনুল হোসেন রতনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ মন্ডলের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আ. আব্দুল বারী ভূঁইয়া। এ সময় বিএনপি, শ্রমিকদল, কৃষকদল, যুবদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।