কালির বাজারে দাম বাড়েনি মসলার, ভিড় নেই ক্রেতাদের
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ঈদুল-আযহায় ঘরে ঘরে পাওয়া যায় বিভিন্ন মাংশের সুস্বাদু রান্নার সুবাস। কালাভুনা, তেহরী বা মাটন বিরিয়ানির মতো খাবারের আয়োজন হয় প্রায় প্রতিটি ঘরে। এমন খাবার রান্নায় অতি প্রয়োজনীয় উপকরণ হলো মসলা। ঈদ সন্নিকটে হওয়ায় এখনই কিছু কিছু করে মসলা কিনে রাখছেন ক্রেতারা। তবে এখনো কোরবানি ঈদে ক্রেতাদের তেমন কোন ভিড় আসেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বুধবার (২৮ মে) সরেজমিনে নগরীর কালিরবাজার মসলাপট্টি এলাকায় দেখা যায় এমন চিত্র। মসলার দোকানগুলোতে দেখা যাচ্ছে হাতে গোনা ২-৩ জন কিনছেন মসলা। ঈদের আগে দাম বাড়ার ভয়ে আগে থেকেই কিছু কিছু করে কিনে রাখছেন তারা। মসলার দোকানগুলো ঘুড়ে জানা যায়, জিরা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭২০ টাকায়, দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকা কেজি, লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা, গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়, গোল মরিচ (সাদা) ১৪০০ টাকায়। তেজপাতা বিক্রি হচ্ছে ৯০-১২০ টাকা কেজি, এলাচ মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪০০ থেকে ৫৮০০ টাকা পর্যন্ত।
এছাড়াও বাজারে প্রতি কেজি চিনা বাদাম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, ধনে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, জয়ত্রি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায় ও জায়ফল ১৬০০ টাকায়।
এসময় বাজারে মসলা কিনতে আসা ক্রেতা সিহাব বলেন, মসলার দাম এখন কিছুটা কম, ঈদের আগে বাড়তে পারে তাই অল্প করে হলেও কিনে রাখছি। এলাচ গতবছরের তুলোনায় দাম বেড়েছে তাই একেবাড়েই কেনা ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু জিরা আর দারুচিনি কিনছি, কারণ এটার দাম বাড়েনি। এরকম সবকিছুর দাম কম থাকলে আমাদের শ্রেনীর মানুষরা খেয়ে পড়ে বাচঁতে পারবে।
আরেক ক্রেতা নাহিদা বেগম বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম তো আগে কত্ই দেখেছি বাড়ছে। এবার দেখছি কমবেশি অনেক জিনিসের দাম কিছুটা কমতির দিকে। এরকম ভাবে থাকলে ভালো লাগবে কিন্তু বাংলাদেশের কথা তো বলা যায় না। বাহিরের দেশে সারা বছর ব্যবসা করে, এদেশের মানুষ ঈদে ব্যবসা করে। ঈদের আগে আবার বাড়লে তো আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের কষ্ট হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহাদ বলেন, আমাদের মসলা তো মূলত ভারত ভিয়েতনাম থেকেই বেশি আসে। এবার মনে করেছিলাম ভারত মসলা দেওয়া বন্ধ করলে দাম অনেক বাড়বে, কিন্ত এখনো তেমন কোন মসলার সংকট দেখিনি। বরং গতবছরের তুলোনায় এবার দাম কিছুটা কমই পরেছে। অন্যান্য সময়ের তুলোনায় এই কোরবানি ঈদেই মসলার চাহিদা বেশি থাকে। ঈদের প্রায় ৩-৪ দিনে আগে থেকে মসলার চাহিদা আসে এপর ঈদের আগে দুদিন সব থেকে বেশি থাকে।
আরেক বিক্রেতা ওমর ফারুক জানায়, গত দশদিনের হিসেবে কিছু কিছু মসলার দাম বেড়েছে। ফেব্রুয়ারী মাস পাইকারিতে যে জিরা কিনেছি সেই জিরা এখন তুলোনামূলক বেশি টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। আমাদের কাছে মসলা আসে মৌলভী বাজার ও নিতাইগঞ্জে পাইকারদের থেকে। তাদের থেকেই গত মাসের তুলনায় মসলায় বেশি দামে কিনতে হয়েছে। তাই কিছু কিছু মসলার দাম বেশি। প্রতি ঈদে জিরা, এলাচ, গোলমরিচের চাহিদা বেশি থাকে। এবছরও এলাচ আর গোল মরিচের দাম বেড়েছে। অনেকে হয়তো মনে করে, জিনিস পত্রের দাম বাড়লে আমাদের দোকানদারদের লাভ হচ্ছে কিন্তু আসলে এটা বিষয় না। আমাদেরও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয় তারপর সেটা বিক্রি করতে হয়। আগে এই দোকানে ৫ লাখ টাকার মাল উঠালে সারা দোকান ভরে যেতো। কিন্তু এখন সেই টাকায় অর্ধেক মাল ও পাওয়া যায় না। ডাবল টাকা দিয়ে মাল উঠাতে হয়। ব্যবসা চালাতে আমাদের চালান ও বেশি দিতে হচ্ছে।