শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
জেলাজুড়েসদর

ওসমান পরিবারের পর বিএনপি দখল করা শুরু করেছে: রফিউর রাব্বি

লাইভ নারায়ণগঞ্জ:সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেন, যেগুলো এতদিন ওসমান পরিবার ও সরকার দখল করেছিল, সেগুলো এখন বিএনপি দখল করা শুরু করেছে। আমি বিএনপি নেত্রবিন্দুকে বলতে চাই শেখ হাসিনার পরিণতি দেখেন এবং আপনাদের নেতাকর্মীদেরকে সামাল দেন। বাংলাদেশকে সেই পরিস্থিতিতে আবারো নিযে যেতে বাধ্য করবেন না। যারা হামলা, ভাঙচুর করছেন, বিগত সরকারের ওপর রাগ আর ক্ষোভ আপনারা বহিঃপ্রকাশ করছেন তবে এটা দীর্ঘায়িত হতে পারে না। অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনার পতনের সাথে এই দেশটি পাকিস্তানি বার আফগানিস্তানের ধারা আরেকটি শিয়া মুসলিম দেশ হয়ে যাবে। যারা এটা মনে করছেন তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে চাষাড়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় তিনি আরও বলেন, তিন দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন প্রায় তিন দিন সরকারবিহীন হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় অরাজকতা আমরা লক্ষ্য করছি। বিভিন্ন দেশে স্বাধীনতার পর একটি অরাজকতা সৃষ্টি হয়, তবে সেই পরিস্থিতি কিছুদিনের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। আমরা বিষয়টাকে এভাবেই দেখতে চাই। এই নারায়ণগঞ্জের ঘরে ওসমান পরিবার চেপে বসেছিল। তাদের বিভিন্ন নৃশংস কর্মকাণ্ড করতে সাহায্য করেছে প্রশাসন ও সরকার। এই ওসমান পরিবার পরিবহন ঘাট বালু বহর সহ বিভিন্ন জিনিস দখল করেছে। এছাড়াও বিকেএমইএ,নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, ইয়ার্ন মার্চেন্ট, রাইফেল ক্লাব সহ তার অনেক কিছুই তাদের দখলে। এছাড়াও তারা মাদকের একচেটিয়া ব্যবসা দখল নিয়েছেন যার অংশীদার হয়েছে পুলিশ প্রশাসন । যা করেছে তা জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে করেছে। যে আজমেরি ওসমান ত্বাকিসহ নিরীহ অনেককেই হত্যা করেছে। তাকে প্রশাসন গ্রেপ্তার তো দূরে থাক বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছে। পুলিশ প্রশাসনের লক্ষ্য ছিল ওসমান পরিবারের সাথে থেকে টাকা কামানোর। আমি বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকার ও সেনাপ্রধান কে বলতে চায় যেটাই ওসমান পরিবার দেশের বাইরে গিয়ে না থাকে তাহলে যাতে তারা আর যেতে না পারে সে ব্যবস্থা আপনি করবেন। পরবর্তীতে যদি কোন কিছু বের হয় তাহলে আমরা অবশ্যই খবর পাবার এবং এই বিষয়ে সব কিছু দায়ের দায়িত্ব আপনার নিতে হবে। কারণ যে হাসিনা অগণিত হত্যার জন্য চিহ্নিত আসামি, সেই হাসিনাকে দেশ থেকে পালানোর জন্য সুযোগ করে দিয়ে আপনি জঘন্য এবং ঘৃণিত একটি অপরাধ করেছেন। তাকে শাস্তির আওতায় আনা থাকে বিরত রেখেছেন। আমি আপনাদের হুশিয়ারি করে নিতে চাই, আগামীতে আপনারা যা করবেন সেটা চিন্তা ভাবনা করে তারপর করবেন। কোনভাবে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান করবেন না।

রফিউর রাব্বি বলেন, মুক্তিযোদ্ধার চেতনার কথা বলে এতদিন আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলকে ঘায়েল করার নীতি চালিয়েছে। এই দেশটি সকলের নিরাপত্তার এবং আপামর জনতার বাংলাদেশ হবে। আমাদের প্রত্যয় থাকবে, এখানে মসজিদ মন্দিরে গির্জা প্যাগোডা মাজার সবকিছু নিরাপদে থাকবে। আমি জেলা প্রশাসককে বলতে চাই, বিগত কিছুদিন ধরে শামীম ওসমান, তার পুত্র, নিজাম এবং তথাকথিত কিছু সাংবাদিক যারা অস্ত্র বের করে সমাজের ত্রাস সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন মামলাদার করুন এবং অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করুন। এই বন্ধন পরিবহন থেকে চাঁদা নেওয়ার বিষয়ও এর আগে র‍্যাবে কাছে চিঠি গিয়েছিল। আমরা দাবি করেছিলাম ওসমান পরিবারের কাছে চাঁদা বন্ধ করুন এবং ভাড়া কমিয়ে আনুন। নারায়ণগঞ্জের চাঁদা এখন বন্ধ হয়েছে প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে ভাড়া দ্রুত কমিয়ে আনার ব্যবস্থা করুন। মিঠুকে যখন জামতলা আজমির ওসমান উপস্থিত থেকে হত্যা করা হয়েছিল তখন ফতুল্লা থানা মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নেয়নি। ওকে বলেছেন আহমেদ ওসমানের নাম বাদ দিলে তারপর মামলা নেওয়া হবে। পরবর্তীতে আজমির ওসমানের নাম বাদ দিয়ে মামলা নেয়া হয়েছে। আলুর মুখ দেখেনি যে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে সেখানে অপরাদিকে আড়াল করে দেওয়া হয়েছে। তকি হত্যার অভিযোগে আজমির ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জনের নাম এসেছিল। আমরা বলেছিলাম এই হত্যাকাণ্ডে আজমির ওসমান অয়ন ওসমান আছেন। কিন্তু তখন র‍্যাবের প্রধান ছিলেন কর্নেল মুজিব। এই কর্নেল মুজিব শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। র্যাব বলেছিল শামীম ওসমান ও তার সহযোগীদের নাম এখন দিতে পারছি না কারণ তারা সরকারি ক্ষমতায় অতিষ্ঠ। এবং আমাদের মুজিব স্যারের কারণেই তাদের নাম যুক্ত করা যাচ্ছে না। এরপর শেখ হাসিনা বলেছে আমি ওসমান পরিবারের পক্ষে আছি পরবর্তীতে এই সকল মামলা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমান সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে, এই তকি হত্যা, সাগর রুনি হত্যাসহ সকল হত্যার বিচার করুন।

হুশিয়ারি উচ্চারন করে তিনি বলেন, আমরা শুনেছি, মুসল্লিরা নামাজের পর একটি মিছিল বের করে চারুকলায় যাবে। আপনারা বিভিন্ন মন্দিরে মসজিদে পাহারা দিচ্ছেন আমরা সেটাকে সাধুবাদ জানাই কিন্তু আমাদের সংস্কৃতির ওপর আঘাত আনবেন না। আগুন নিয়ে খেলবেন না। হাতির পাচঁপা দেখবেন না।

এসময় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা খেলাঘর আসরের উপদেষ্টা রথীন চক্রবর্তী, জেলা গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি জাহিদুল হক দীপু ও ভবানী শংকর রায় প্রমুখ।
/////////////////////////////////////

RSS
Follow by Email